সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ বিয়ানীবাজার উপজেলার সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে অনুপ্রবেশকারী পাজারো জিপ দুইটি অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারনে সুতারকান্দি স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা এ এস আই সালাউদ্দিনকে অপসারন করা হয়েছে। এছাড়া সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি ও বিয়ানীবাজার থানায় ২ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জানান, বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারনে সুতারকান্দি স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা এ এস আই সালাউদ্দিনকে অপসারন করা হয়। এ ঘটনায় বিয়ানিবাজার থানায় ২ টি ও সিলেট কোতোয়ালী থানায় ১ টি মামলা দায়ের করা হয়। বিয়ানিবাজার থানায় ২ টি মামলার মধ্যে একটি শুল্ক ফাঁকি দেওয়া ও অপরটি ইমিগ্রেশন আইন অমান্য করা। সিলেট কোতোয়ালী থানায় নাশকতার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পরিত্যক্ত অস্থায় সিলেট নগরী থেকে অনুপ্রবেশকারী জিপ দুইটি উদ্ধার করে পুলিশ। উপশহর ও কুমারপাড়া থেকে জিপ দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত পৌণে ১টার দিকে শাহজালাল উপশহরের ই ব্লকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি জিপ ও কুমারপাড়ার জালালাবাদ অটো কেয়ার নামক একটি গ্যারেজ থেকে আরেকটি জিপ উদ্ধার করা হয়। জিপ দুইটি বর্তমানে মহানগর পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গাড়িতে করে ভারত হয়ে আসা বাংলাদেশী বংশদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক কাবলু মিয়া, আসকর আলী ও আমতর আলীকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. আইয়ূব জানান, জিপ দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন গাড়িতে করে আসা ব্রিটিশ নাগরিকদের সন্ধানে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে জীপ দুটির ৩ আরোহী যে তথ্য দিয়ে এসেছিল, তা সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশী কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে গতকালই সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে এ তথ্যগুলোর সূত্র ধরে বৃটিশ হাই কমিশনের সহায়তায় ঐ ৩ আরোহীর পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু বৃটিশ হাই কমিশন ঐ ৩ আরোহীর সিলেটের কোন ঠিকানা দিতে পারেনি। এরপর আজ দুপুরে পুলিশ নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে আরোহী ৩ জনের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু, তদন্তের স্বার্থে তা এখনই প্রকাশ করতে রাজি হয়নি পুলিশের কোন সূত্র।
তবে, মামলা তদন্তে সম্পৃক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা সেই রহস্যময় আগন্তুকদের গ্রেফতারে ইতোমধ্যে শাহজালাল উপশহরের একটি ফ্লাট বাড়ি, শাহী ঈদগার একটি বাসা ও মেজর টিলার একটি ফ্লাটে তলৱাশী চালানো হয়েছে। এই ৩টি বাসাতেই ঐ ৩ আরোহীর কয়েকটি আত্মীয় পরিবার বসবাস করেন। কিন্তু তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও আগন্তুকদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, আরোহী ৩ জনের সিলেটের ঠিকানাও পুলিশ সংগ্রহ করেছে। তবে, তারা কেউ নিজেদের বাড়িতে যায়নি। এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ঐ ৩ আরোহী শুধু তাদের নাম, পিতার নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে আসে। এবং ভারতীয় কাস্টমস তাদের গাড়ীগুলোর চেসিস নাম্বার লিখে রেখেছিল। সেখান থেকে প্রায় তথ্য মতে, আরোহী ৩ জন হলেন- মো. কাবুল মিয়া, পিতা হাজী আবদুল বারিক। বৃটিশ পাসপোর্ট নং- ৪৫৪৭৯৩৩৫৬। ২. আজকর উদ্দিন, পিতা মৃত মো. হাবিবুর রহমান। পাসপোর্ট নং-৫০৮৮৯৮৫৫৮। ৩. আমতর আলী, পিতা মৃত মজম্মিল আলী। পাসপোর্ট নং- ৬৫২৪৯১৪৮৭।
উলেৱখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকালে বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি স্থল বন্দর দিয়ে দুটি জীপ নিয়ে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ৩ বৃটিশ নাগরিক ঢুকে পড়েন। এরপর তার কর্তৃপৰকে কোন তথ্য না দিয়েই জীপ দুটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সিলেট জোড়ে এখনো তোলপাড় চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ভারত থেকে সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে দুইটি জিপে করে বাংলাদেশী বংশদ্ভূত তিন ব্রিটিশ নাগরিক ইমিগ্রেশন আইন লঙ্ঘন করে ঢুকে। তারা সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকেই দ্রুত গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর তাদেরকে ধরতে সিলেট জেলাজুড়ে চৌকি বসিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালায়। সীমান্ত এলাকায়ও বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাড়ি দুইটি উদ্ধার হলেও এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ নাগরিকদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
দুই জিপের ৩ মামলা: ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা অপসারণ
Friday, November 1, 2013
Labels:
# সুরমা টাইমস
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment