সাবাস সিলেটি : হুয়াট এ হারমনি!

Sunday, October 27, 2013

Arif Malহাবিবুর রহমান তাফাদারঃ

সারা দেশে হানাহানি, রক্তক্ষয়। রাজপথে ভাইয়ের লাশ, স্বজনের রক্ত। পরিনামে দুই নেত্রীর একজন ক্ষমতার মসনদে আর অন্যজন বিরোধীদলীয় নেতা থাকলেও সর্বক্ষন ভিভিআইপি। রাজপথে লুটায় অবলা মায়ের সন্তান, বাতাসে ভাসে মজলুমের হাহাকার। ফায়দা লুটে কিছু চাটুকার। ক্ষমতাসীনরা লুটে পুটে নেয় দেশ জনতার সম্পদ, নির্যাতন চালায় বিরোধী জোটের নেতা কর্মীর উপর। এটাই সারা বাংলার চিরাচরিত নিয়ম। তবে সিলেটের রাজনৈতিক পরিস্তিতি সারা দেশের চাইতে একটু ভিন্ন। ছোট্ট এই বিভাগীয় শহরে চিরকালই সামাজিক ,ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মূল্যবোধ সারা দেশের চাইতে একটু বেশীই। এবারও বিভিন্ন সময় আমরা রাজনৈতিক মাঠে এর প্রতিফলন দেখতে পাই। অতিথে শোনা গেছে সিলেটে সিলেটে হেফাজতের সমাবেশে খাবার পাঠিয়েছিলেন সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা বদরুদ্দিন আহম্মেদ কামরান। যদিও কামরান বলেছেন এটি নিছক গুজব। সিটি নির্বাচনে জয়লাভ করে বর্তমান মেয়র পরাজিত মেয়র কামরানের বাসায় দেখা করতে যান। দেখা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সাথে। মুহিতও প্রসংসা করেন বিরোধীদলীয় নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী’র। আন্দোলনের সময়ও আমরা দেখতে পাই সিলেটে দুই জোটের সমঝোতার রাজনীতি। এক পক্ষ যখন মাঠে নামছে, অন্যপক্ষ তাদের ছাড় দিয়ে ছাড়ছেন রাজপথ।

গতকালও দেখেছি ১৮ দলের ডাকা হরতালের প্রথম দিনে সিলেটে দুই জোটের মধ্যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। হরতারের প্রথম দিনে সকালে রাজপথে নিয়ন্ত্রণে ছিল হরতাল সমর্থনকারীরা। অন্যদিকে, দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে মহাজোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতকর্মীরা মাঠে নামলে রাজপথ ছেড়ে যান ১৮ দলের কর্মীরা। সিলেটে সকালটা ছিল ১৮ দলের, আর দুপুরটা নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। Arif+Abul Malআর তাই এক্ষেত্রে বলা যায়- সকালটা যে আমার, দুপুরটা যে তোমার।

সচেতন মহল মনে করছেন, ক্ষমতাসীন মহাজোট ও বিরোধী শিবিরের ১৮ দলীয় জোট একে অন্যকে রাজপথের আন্দোলনে সুযোগ করে দিতে নেপথ্যে সমঝোতার মাধ্যমেই চালাচ্ছে নিজেদের কর্মসূচি। ৬০ ঘন্টার হরতালের প্রথাম দিনে সকালে নগরীতে মিছিল সমাবেশ করে হরতাল আহবানকারী ১৮ দলের নেতাকর্মীরা। তারা নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় মিছিল করে কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান নিতে চাইলে পুলিশী বাধার মুখে পড়েন। পরে মিছিলটি শহীদ মিনার পর্যন্ত যায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে ১৮ দলের কর্মীরা পুণরায় মিছিল করে Kamran Arifবন্দরবাজার এলাকায় এসে হকার্স পয়েন্ট সংলগ্ন করিম উল্লাহ মার্কেটের বারান্দায় আশ্রয় নেন। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত অবস্থান করে ১৮ দলের কর্মীরা। এর পরপরই মাঠ ছাড়তে শুরু করেন ১৮ দলের কর্মীরা। জোহরের আজান হলে হকার্স পয়েন্ট ত্যাগ করে নামাজে চলে যান ১৮ দলের সিনিয়র নেতারাও।

অন্যদিকে, দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বিরোধী দলের সাথে সমঝোতার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে সুরমা টাইমসকে বলেন, সংঘাত এড়াতেই আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট কৌশলে রাজপথ নিজেদের দখলে রেখেছেন।

অন্যদিকে, বিএনপির মহানগর শাখার এক যুগ্ম সম্পাদক বলেন, সারা দেশে আওয়ামী লীগ হরতাল আহবানকারীদের সাথে সংঘাতে জড়ালেও সিলেটে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন উস্কানী দেয়া হচ্ছেনা। এটি সুস্থ রাজনীতির লক্ষণ। তাই আমরাও আমাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। ভাংচুর-পিকেটিংয়ের মত ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে তাদের বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছি। তবে, আওয়ামী লীগের সাথে কোনরূপ সমঝোতা করে রাজপথে অবস্থানের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন ঐ নেতা।

সে যাই হোক, যে যাই বলুক, এটি স্পস্টতই দেখা যায় সিলেটে চলছে রাজনৈতিক সমজতা। এটাই চায় দেশবাসী। এরখম হওয়াটাই সিলেটবাসীর সার্বক্ষনিক প্রত্যাশা।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License