মৌলভীবাজার থেকে আব্দুল হাকিম রাজঃ মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল (বামাকা) এর আবেদনের ৭ মাস পর অবশেষে ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে নুসরাতের লাশ উত্তোলন করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বামাকা মৌলভীবাজার জেলা শাখার সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মশাহিদ আহমদের অনুসন্ধানী তথ্যের ভিত্তিতে সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শ, ই, সরকার জবলু গত ১০/০৩/২০১৩ইং তারিখে বামাকা/মৌজেশা/আঃসঃ/০০২/২০১৩(১)/০৭ নং স্মারকে জেলা প্রশাসক বরাবর “নুসরাত বেগমের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলনপূর্বক ময়না তদন্ত প্রসঙ্গে” শীর্ষক আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে ইসরাত ও নিহতের পরিবার এবং এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। বামাকা’র আবেদনে জানানো হয়- বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের চান্দগ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার বুরহান উদ্দিন আখই এর যুবতী কন্যা নুসরাত বেগম (১৮) গত ১লা মার্চ বিষপানে আত্মহত্যা করে। কিন্তু, রহস্যজনকভাবে ময়না তদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে তার লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রত্যক্ষভাবে সার্বিক সহযোগীতা করেন মিছবাহ উদ্দিন মেম্বার, আব্দুল হক মেম্বার ও মাহফুজ মেম্বার। আখই মেম্বার প্রভাবশালী এবং তার পুত্র জুনেদ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হওয়ায়, এ ব্যাপারে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা বলে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় লোকজনসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আরও জানা গেছে- একই বাড়ীতে বসবাস করলেও আখই মেম্বার ও তার স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। পিতামাতার মধ্যকার এ বিরোধে সন্ত্রাসী পুত্র জুনেদের অবস্থান মায়ের পক্ষে এবং মেয়ে নুসরাতের অবস্থান পিতার পক্ষে। এ কারণে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মা ও সন্ত্রাসী পুত্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায়, গত ২৬ ফেব্র“য়ারী ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনের সামনেই সন্ত্রাসী জুনেদ তার পিতা আখইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে উদ্ধত হয়। খবর পেয়ে এস.আই. দিলীপ ঘটনাস্থল থেকে জুনেদকে আটক করেন। এরপর গত ১লা মার্চ সে বাড়িতে ফিরে আসে এবং ঐ দিনই নুসরাত আত্মহত্যা করে। পিতা-পুত্রের মধ্যকার এ ঘটনা এবং এস.আই. দিলীপ কর্তৃক জুনেদকে আটক করার বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন নিশ্চিত করেন। অপরদিকে, ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের খবর পেয়ে গত ২ মার্চ এস.আই. রজব ঘটনা তদন্তে গেলে নুসরাতের মা ও উলি¬¬খিত মেম্বারগণ ঘটনাটিকে অসুস্থতা জনিত স্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানান। এসব ঘটনাবলীর আলোকে নুসরাতের আতœহত্যার ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে বামাকা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করলে বড়লেখা থানার ওসি জানান “পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না করলে তার কিছুই করার নেই”।- বাধ্য হয়ে বামাকা গত ৪ মার্চ বামাকা/মৌজেশা/আঃসঃ/০০১/২০১৩(১)/০৭ নং স্মারকে পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করলে, গত ৯ মার্চ তিনিও “এ ব্যাপারে তার কিছুই করার নেই” জানিয়ে, জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে বলেন। এরপর বামাকা গত ১০ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে। নুসরাতকে হত্যা করা হয়েছে অথবা নির্যাতন বা অন্য যেকোনভাবে সৃষ্ঠ পরিস্থিতির কারণেই নুসরাত আতœহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে জানিয়ে বামাকা নুসরাতের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলনপূর্বক ময়না তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয় ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করে। বড়লেখা থানার ওসি হাসানুজ্জামান লাশ উত্তোলনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- ফরেনসিক টেস্টের রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment