নগরীতে আইনজীবী মোদাব্বির খুনের ঘটনা ॥ ঘাতক কবিরকে পুনরায় অভিযুক্ত করে সিআইডির সম্পূরক চার্জশিট দাখিল

Wednesday, November 6, 2013

স্টাফ রিপোর্টার :

নগরীর শাহজালাল উপশহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল প্রফেশনাল এন্ড ভকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের (ইউপিভিটিআই) স্বত্ত্বাধিকারী আইনজীবী মোদাব্বির হোসেন (৪২) খুনের ঘটনায় আদালতে সম্পূরক চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়েছে।


গত ৫ নভেম্বর সিলেট জোনের সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক জিএম হামিদুর রহমান এগনাইট রেষ্টুরেন্টের মালিক মোঃ কবির ওরফে এমএ কবির (৩৬)কে অভিযুক্ত করে ৮ পৃষ্ঠার এ চার্জশিট (অভিযোগপত্র/১৬৭) আদালতে দাখিল করেন। পুলিশ ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ঘাতক কবিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। বর্তমানে সে জেল হাজতে রয়েছে। অভিযুক্ত কবির হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সুনাইত্তা মাধবপুর গ্রামের বর্তমানে নগরীর আম্বরখানা এলাকার বড়বাজারের সোবহান ভিলার মৃত হাজী আব্দুস সোবহানের পুত্র।

মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক জিএম হামিদুর রহমান এজাহারনামীয় অপর আসামী কবিরের বড় ভাই মোঃ মালিক (৬৫) ও বিঃবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার খাড়াসার গ্রামের সাহিদ আহম্মদের পুত্র বর্তমানে ঢাকা ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার তালতলা পশ্চিম কাফরুল ৬৭/২ নম্বর বাসার (৪র্থতলার) বাসিন্দা সোহেল আহমদ (৩০)কে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চার্জশিটে ৫০ জন সাক্ষী রাখা হয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন একই আসামী কবিরকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। পরে মামলার বাদি নিহত আইনজীবী মোদাব্বির হোসেনের স্ত্রী মোচ্ছাঃ আয়েশা আখঞ্জি লিমা ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর সিলেটের অতিরিক্ত চীফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিটের (অভিযোগপত্র) উপর নারাজির আবেদন করেন। পরে আদালত ঐ বছরের ১৭ ডিসেম্বর মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য সিআইডিতে প্রেরণ করেন। কিন্তু সিআইডি পূর্ণরায় তদন্ত করে পুর্বের দাখিলকৃত চার্জশিটের অভিযুক্ত কবিরকেই আসামী করে গত ৫ নভেম্বর আদালতে এ মামলার সম্পূরক চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।

উল্লেখ্য আইনজীবী মোদাব্বির হোসেন সোনারপাড়ায় যে বিল্ডিংয়ে এগনাইট রেষ্টুরেন্ট খোলেন এর মালিক কবির আহমদ। কবিরের সাথে আর্থিক লেনদেন নিয়ে মোদাব্বিরের ঘটনার বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলে আসছিল। এ নিয়ে রেষ্টুরেন্টে ঘটনার ১০/১২ দিন পূর্বে একটি বৈঠক হয়। এতে কয়েকজন মুরব্বীও ছিলেন। ঘটনার কয়েক দিন পূর্বেও বিষয়টির সমাধান করার কথা ছিল। এর জের ধরে ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কবির অন্তত ৪/৫ বার তার ওই প্রতিষ্ঠানে যান। সেখানে মোদাবিরকে রাত ৭ টার দিকে তার নিজ ঐ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের চেয়ারে হাত-পা মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে তাকে নির্মমভাবে শ্বাসরুদ্ধে হত্যা করা হয়। পরে কবির ঐ রুম থেকে কৌশলে পালিয়ে যান। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের আলামত দেখে বুঝা গেছে তখন ঘাতক কবির একা কাজটি করেননি। এ হত্যাকান্ডে মনে হয়েছে আরো কিছু লোক জড়িত ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ও সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল গেলে রাতে আইনজীবী মোদাব্বিরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন তারা। নিহত মোদাব্বির হোসেনের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর লামাবাজার বিলপারের ১০/বি নং বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। নিহত মোদাব্বিরের ২ কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। পরে পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নিহত মোদাব্বির হোসেনের ইউপিভিটিআই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক, এক পিয়ন ও নাইট গার্ডকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আবার ছেড়ে দেয় পুলিশ। ঘটনার ৩ দিন পর নিহত মোদাব্বির হোসেনের স্ত্রী মোচ্ছাঃ আয়েশা আখঞ্জি লিমা বাদি হয়ে কবির, আঃ মালিক ও সোহেলকে ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে শাহপরান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নং-৩ (০৮-০৪-১২)।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License