আমাদের সিলেট ডটকম : বেকারত্ব সব জায়গায় রয়েছে। কিন্তু এই বিশ্বে একজন মানুষও বেকার থাকবে না। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করছে সোশ্যাল বিজনেস। শনিবার সোশ্যাল বিজনেস ডে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে একথা বলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইউনূস বলেন, অর্থনীতি আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছে তাতে আমরা হতাশ। তরুণরা আরো বেশি হতাশ। এই হতাশা থেকেই আমরা সোশ্যাল বিজনেসের উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, পুরো শিক্ষাব্যবস’াই ভুল। আমরা চাকরিপ্রার্থী হিসেবে শিক্ষার্থীদের তৈরি করছি। মানবিক গুণাবলীর অধিকারি হিসেবে এটি লজ্জার। ড. ইউনূস জানান, ফ্যামিলি রি-ইউনিয়ন হিসেবে এটি শুরু করেছিলাম। এই ফ্যামিলি দিনে দিনে বড় হচ্ছে। আগামী বছর এটি আরো বড় আকারে হচ্ছে। বর্তমানে ২২৮টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাজ করছে ২১০টি। রেজিস্ট্রেশন এক মাস আগে শেষ করতে হয়েছে। সাধারণত একদিন আগে পর্যন- এ সুযোগটি দেওয়া হয়। কিন’ এত চাহিদার কারণে আমরা রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করতে বাধ্য হই। দিবসটি পঞ্চমবারের মতো পালিত হওয়া সোশ্যাল বিজনেস ডে’র অনুষ্ঠানটি ৮৯টি দেশ সরাসরি দেখছে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইউনূস সেন্টার। ‘আমরা চাকরিপ্রার্থী নই, চাকরি দাতা’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে পালিত যাচ্ছে। সোশ্যাল বিজনেস ডেতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি। এবারের বিজনেস ডেতে মূল প্রবন্ধকার তিনি। কেরি কেনেডি ছাড়াও গ্রামীণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ও সিইও এন্ড্রিয়া জাং, যুক্তরাষ্ট্রের স্টোনিফিল্ড ফার্মসের সিইও গ্যারি হার্শবার্গ, চীন থেকে ৪৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, ফ্রান্স থেকে ৩২ সদস্য, জাপানের ২৬ সদস্য, ভারতের ২৩ সদস্য, তাইওয়ান থেকে ৩৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭ জন, হংকং থেকে ১৩ সদস্য, কম্বোডিয়া ১০, কাজাকাস-ানের ৯, মেক্সিকো থেকে ৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ৯ জন, সুইডেন থেকে ৯ জন, ইতালি, বাহরাইন, সেনেগাল, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম এবং গ্রামীণ ক্রেডিট এগ্রিকোল সংস’া থেকে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজনেস ডে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন ৩১টি দেশের ২৭৫ জন অংশগ্রহণকারী। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে অংশগ্রহন নিয়েছেন এক হাজারের ওপরে। বেকারত্বকে উদ্যোক্তা হিসেবে রূপান-র করাই হবে এবারের বিজনেস ডে’র লক্ষ্য। এতে ছয়টি প্যানেল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বেকারত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ: গ্রামীণ কোম্পানিসমূহের নবীন উদ্যোক্তা উদ্যোগ, ক্রাউড ফান্ডিং, সোশ্যাল বিজনেস ইন মার্কেটিং, এরপরে কি আসছে বিষয়ক প্যানেল সেশনও রয়েছে। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং সোশ্যাল বিজনেস ইয়োথ সামিটের উদ্যোগে তিনটি অতিরিক্ত সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তা হিসেবে উপসি’ত থাকবেন। সারাবিশ্বে সোশ্যাল বিজনেস ডে সমপ্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকান ডেললপমেন্ট ব্যাংক তিউনিসিয়া, উগান্ডাতে সোশ্যাল বিজনেস মুভমেন্ট নামে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এ প্রকল্প সোশ্যাল বিজনেস ডে সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করছে। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হচ্ছে ঢাকায়। সোশ্যাল বিজনেস হচ্ছে এমন এক ধরনের ব্যবসা যা সমাজের সামাজিক সমস্যা সমাধানের একটি পদ্ধতি। এটি চিরায়ত লাভজনক ব্যবসা থেকে ভিন্নতর। বিশ্ব বাণিজ্যের এ যুগে শিক্ষার্থীরা ক্রমবর্ধমান হারে বাণিজ্য শিক্ষার দিকে ঝুঁকছে। বাণিজ্য শিক্ষা ব্যবস’ার অপূর্ণাঙ্গতার কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় উদ্যোক্তা না হয়ে চাকরির পেছনে ছুটছে। বাণিজ্য শিক্ষাকে এভাবে সংষ্কার করতে হবে যেন চাকরির পাশাপাশি এ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিক্ষার্থী একজন উদ্যোক্তায় পরিণত হতে পারে। একজন উদ্যোক্তা তার নিজের কর্মসংস’ানের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কর্মসংস’ানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment