মৌলভীবাজারে বৃটিশ তরুণী ইউনা হত্যাকাণ্ড-- আদালতে ঘাতক সোহেলের স্বীকারোক্তি

Wednesday, October 9, 2013

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

ব্রিটিশ নাগরিক সেহলিনা ইলাত ইউনা হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত সোহেল। সোহেল শুক্রবার দুপুরে ইউনা হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার মাধ্যমে আলোচিত এ হত্যাকান্ডের কারণ উদঘাটিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে মডেল থানা পুলিশ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে সোহেলকে গ্রেফতার করে।




জানা যায়, গত ২৯ জুন রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুমড়া এলাকায় নিজ প্রাইভেট কার থেকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভোত ব্রিটিশ নাগরিক সেহলিনা ইলাত ইউনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে এ ঘটনা বেশ আলোচিত হয়ে উঠে। নিহতের ভাই বাদী হয়ে মডেল থানায় দায়ের করেন একটি হত্যা মামলা। এরপর পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতাকে গ্রেফতারের জন্য দীর্ঘদিন থেকে অনুসন্ধান করে আসছিল।

পুলিশ বিভিন্ন কৌশলে ২৯ জুন সন্ধ্যায় দুই বার একটি ফোনে কথা বলে ইউনা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আমুরোডবাজার থেকে লুৎফুর রহমানের ছেলে সোহেল আহমদকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত সোহেল মৌলভীবাজারের বড়কাপন এলাকায় বসবাস করলেও তার দাদার বাড়ি চুনারুঘাটের ডোরারোক গ্রামে। সে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) আলমগীর হোসেনের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। এরপর সে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দি দেওয়ার পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উত্তর মোলাইম গ্রামের জয়নূর রহমানের মেয়ে ইউনা। ২০১০ সালে প্রায় ৪ বছর পূর্বে সিলেটের গোলাপগঞ্জের নগর গ্রামের জামিলুর রশীদের সাথে বিয়ে হয়। গত ২৭ মে যুক্তরাজ্যে স্বামীকে রেখে বাবার বাড়ি মৌলভীবাজারে আসেন ইউনা। সে দেশে আসার পর মৌলভীবাজার শহরের টিবি হাসপাতাল সড়কের নানীর বাসায় প্রায়ই অবস্থান করতো এবং ছেলে বন্ধুদের নিয়ে প্রায় নিজের প্রাইভেট কার নিয়ে রাত বিরাতে ঘুরে বেড়াতো। এই সুবাদে সোহেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সোহেলের সাথে যোগাযোগ করে ইউনা প্রাইভেট কার নিয়ে শ্রীমঙ্গল রোডের নিতেশ্বর এলাকার নীল আকাশ বার্গার হাউজে গিয়ে কিছু সময় কাটায়। তখন বারবার সোহেলের ফোনে কল আসায় ইউনা বিরক্ত হয়। রাগ করে বার্গার হাউজের বিল পরিশোধ করে শহরের দিকে রওয়ানা দেয়। তখন আবার ফোনে কল আসলে ইউনা ও সোহেলের মধ্যে তীব্র বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সোহেল গাড়ি থামিয়ে গুমড়া নামক স্থানে নেমে যায়। তখন ড্রাইভিংয়ে থাকা ইউনাকে ইটের টুকরো দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করলে সে মারা যায়। এরপর সে পালিয়ে যায়। ২৯ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘ তিন মাস অনুসন্ধান শেষে পুলিশ সোহেলকে গ্রেফতার করায় ব্রিটিশ নাগরিক হত্যাকান্ডের রহস্যে উন্মোচিত হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন ইউনার হত্যাকারীকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে জানান গ্রেফতারকৃত সোহেল হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License