আমাদের সিলেট ডটকম:
বালাগঞ্জে এক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার নামে স্থানীয় সড়কের নামকরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সংবাদ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষকালে ‘গোলাগুলির’ মত বিকট শব্দে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী ও বালাগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের বাসিন্দা যুবলীগ নেতা খন্দকার আব্দুর রকিব গং ও একই গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা খন্দকার সালেহ আহমদ গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত রাস্তা সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। স¤প্রতি বিরোধপূর্ণ এ সড়কে সরকারী উদ্যোগে ইটসলিং কাজ শেষে একটি ফলক স্থাপন নিয়ে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ২০১৩ – ২০১৪ সালের বিশেষ অর্থায়নে সম্পন্ন হওয়া এ কাজের শেষে সড়কটিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফখর উদ্দিনের বাড়ির রাস্তায় ইটসলিং’ লিখা ফলক স্থাপন করা হয়।
স্থানীয় তালতলা, আজিজপুর, নলজুড়সহ কয়েকটি গ্রামের লোকজনের চলাচলের এ রাস্তায় ফখর উদ্দিনের বাড়ির রাস্তা নাম দিয়ে ফলক স্থাপনের পর এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে আপত্তি জানান যুবলীগ নেতা খন্দকার আব্দুর রকিবসহ অন্যান্যরা। অবশ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফখরউদ্দিনের নামে সড়কের নাম করণ বিষয়ে এলাকাবাসীর একটি অলিখিত সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানা গেছে এবং ইতোমধ্যে ‘মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফখর উদ্দিন তালতলা গ্রামীণ রাস্তা’ নামকরণের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।
গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত খন্দকার ফখরউদ্দিনের নামে সড়কের নামকরণের বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী কারো আপত্তি নেই বলে জানান খন্দকার আব্দুর রকিব। তবে রাস্তাটি খন্দকার ফখরউদ্দিনের বাড়ির রাস্তা উল্লেখ করে অবৈধভাবে ফলক স্থাপনের মাধ্যমে সর্ব সাধারণের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে তিনি অভিয়োগ করেন।
খন্দকার আব্দুর রকিব বলেন, ফলক স্থাপনের পর থেকে আমাদের পরিবারসহ এলাকাবাসীকে প্রয়োজনীয় চলাচলের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। এ নিয়ে নিয়মিত গালাগাল এবং মারধরের ঘটনা ঘটছে।
এলাকাবাসী জানান, সরকারী উদ্যোগে ইটসলিয়ের পর ফলক স্থাপনের জের ধরে গত ১৩ আগস্ট রাতে স্থানীয় তালতলা বাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে আকর্ষিক সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ‘গোলাগুলির মত বিকট শব্দে’ আশপাশ এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন বাজারে ভিড় জমান। সংঘর্ষকালে বাজারের ব্যবসায়ী খন্দকার রিপন মিয়া ও খন্দকার আব্দুর রকিব প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রিপন মিয়াকে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। সংঘর্ষের পর রাতেই সংবাদ পেয়ে বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ অকিল উদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে সংঘর্ষ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষ বালাগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তালতলা বাজারের ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য এলাকাবাসী আরও সংঘর্ষের আশংকা করছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন জানান, এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। যত তাড়াতাড়ি বিষয়টি সমাধান হবে ততই মঙ্গল।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা খন্দকার সালেহ আহমদ সংঘর্ষের ব্যাপারে নিজেদের নির্দোষ দাবী করে জানান, বিরোধপূর্ণ এ রাস্তাটি মুলত তাদের নিজস্বই, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের লোকজন চলাচল করে থাকেন। এতে তাদের বাধা-আপত্তি নেই। তালতলা বাজারের সংঘষের্র ঘটনায় প্রতিপক্ষরা জড়িত তিনি অভিযোগ করেন।
সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ অকিল উদ্দিন আহমদ জানান, থানায় উভয় পক্ষ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গোলাগুলির মত বিকট শব্দের ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। তবে এর জন্য উভয় পক্ষ একে-অপরকে দায়ী করছে। পুলিশ সকল অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছে। একই সাথে সামাজিক উদ্যোগে মিমাংসার চেষ্টা চলছে বলে জানা যাচ্ছে।
বালাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ নিয়ে জটিলতা : সংঘর্ষে আহত ২ জন
Monday, August 18, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment