বিশ্বনাথে উদ্ধার ভারতীয় নাগরীকের লাশ হস্তান্তর

Saturday, October 4, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখ ১৭:৩০ ঘটিকায় থানার কালিগঞ্জ বাজারের পাশে বাসিয়া নদীতে অজ্ঞাতনামা অর্ধগলিত পুরুষ (৪৫) ভাসমান লাশের সংবাদ পেয়ে থানার অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা নং-১৬, তারিখ-৩০/০৯/২০১৪খ্রি: লিপিবদ্ধ করে এসআই/ আবু সাইদকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।

এসআই/ আবু সাইদ উক্ত অজ্ঞাতনামা লাশের ছবি উত্তোলন করে তার সুরতহাল রিপোর্ট প্রস’ত করত: পুলিশ স্কটের মাধ্যমে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করেন ও লাশের পরনে কালো ফুলপ্যান্ট, সাদা সেন্ডো গেঞ্জি ও চেক হাফশার্ট জব্দ করেন। লাশের ময়না তদন্তের সময় তার পরনের প্যান্টের নিচে আন্ডার গার্মেন্ট্‌স এর ভিতর ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ১টি পরিচয় পত্র ও ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার পেপার মিলের শ্রমিক আইডিকার্ড পাওয়া যায়। যাতে (১) নাম অভিজিৎ দাস, পদবী-এ-টেকনিশিয়ান-২(ফিট) মেকানিকেল ওয়ার্কসপ বিভাগ, কোড নং-১৭৪৩, (২) ১টি মোটর সাইকেলের রেজিষ্টেশন সার্টিফিকেট যাতে নাম-অভিজিৎ দাস, পিতা-মৃত লোহিত কুমার দাস, গ্রাম ও পোষ্ট অফিস-শ্রী কোনা সিলচর, জেলা-কাছার, আসাম, আসিফ-৯২১৯, চেসিস নং-এমডিএলজেএ৫ইকেসি৯এফ২২২৫০, ইঞ্জিন নং-জেএ০৫ইসিসি৯এফ২২২৩০, মডেল সুপার স্প্লেল্ডার হিরো হোন্ডা, (৩) ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স যাতে নাম-অভিজিৎ দাস, পিতা-মৃত লোহিত কুমার দাস, এইচপিসি টাউনসিপ কোয়ার্টার নং-১৭৮, পোষ্ট অফিস-পঞ্চগ্রাম, জেলা-হাইলাকান, আসাম লেখা আছে।

লাশটি পরিচয় বিহীন হওয়ায় ময়না তদন্ত শেষে সৎকারের জন্য মানিকপুর টিলাস’ সরকারী কবরস’ানে নেয়া হয়। এসময় লাশের সাথে প্রাপ্ত পরিচয়পত্রে সে ভারতীয় নাগরিক মনে করে অফিসার ইনচার্জ বিশ্বনাথ থানা টেলিফোনে ও বেতার বার্তার মাধ্যমে জনাব নুরেআলম মিনা পিপিএম, পুলিশ সুপার, সিলেটকে অবহিত করেন। তখন পুলিশ সুপার, সিলেট বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে লাশের প্রকৃত পরিচয় ও রহস্য উদঘাটনের লক্ষে লাশটি কবরস’ না করে এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের হিমাগারে রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। তৎপ্রেক্ষিতে লাশটি প্রতিদিন ভাড়া প্রদান করে হিমাগারে রাখা হয়। আইডিকার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও চাকুরীর আইডিকার্ডসমূহের প্রাপ্ত ঠিকানা সঠিক কিনা যাচাই করে জানানোর জন্য পুলিশ সুপার নিজ উদ্যোগে সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার চট্রগ্রাম অফিসের ফার্স্ট সেক্রেটারী জনাব রাকেশ, ৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়ান কমান্ডিং অফিসার লে: কর্ণেল শাহ আলম চৌধুরী ও ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব দিলীপ কুমার দে মহোদয়ের সাথে টেলিফোনে ও পত্রযোগে পত্রালাপ করেন। বিজিবি ৪১ ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার, বিএসএফ ১৩৩ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে উক্ত লাশটি ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার নাগরিক বলে নিশ্চিত হন এবং গত ২৫/০৯/২০১৪খ্রি: হতে সে নিখোঁজ হয়েছে বলে জানতে পেরে পুলিশ সুপারকে জানালে করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও বিজিবি ৪১ ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসারের সাথে আলোচনা করে কোর্টের অনুমতি নিয়ে ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে অদ্য ০৪/১০/২০১৪খ্রি: ১২:০০ ঘটিকায় লাশটি ও লাশের সাথে প্রাপ্ত কার্ড ও পরনের কাপড়সমূহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিজিবি ও বিএসএফ এর মাধ্যমে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের সামনে পুলিশ সুপার, সিলেট জনাব নুরেআলম মিনা পিপিএম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জকিগঞ্জ, উপজেলা চেয়্যারম্যান জকিগঞ্জ, সিনিয়র এএসপি জনাব ফারুক আহমেদ, ১৩৩ বিএসএফ এর সহকারী কমান্ড্যান্ট জনাব পিএন গণেশ, ৪১ বিজিবি’র বি কোম্পানীর ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার নায়েব সুবেদার জনাব আজিজুর রহমান, জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব জামশেদ আলম’দের উপসি’তিতে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব রফিকুল হোসেন, আসামের করিমগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব ননী ভূষণ নাথ ও হাইলাকান্দি জেলার পাচগ্রাম থানার অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নম্বর-০৮, তারিখ-০৩/১০/২০১৪ এর তদন্তকারী অফিসার এসআই গিতেশ ভট্ট্রাচার্য এর নিকট লাশ ও আনুসঙ্গিক কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।

পুলিশ অফিসের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান যে, পুলিশ সুপার জনাব নুরেআলম মিনা পিপিএম এর অনুরূপ উদ্যোগে একটি পরিচয় বিহীন লাশের পরিচয় উদঘাটনসহ আত্মীয়-স্বজনের নিকট হস্তান্তর করায় ভারতীয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের ভূয়শী প্রশংসা করেন। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে লাশের পরিচয় উদঘাটনের জন্য পুলিশ সুপার কর্তৃক অনুরূপ ব্যবস’া গ্রহণ না করলে বর্ণিত মৃত ব্যক্তির পরিচয় উদঘাটন করা সম্ভাবনা ছিল না। উপরন্ত মৃতের আত্মীয়-স্বজন কখনো জানতে পারতেন না তাদের খুব কাছের ব্যক্তিটি কোথায় আছে। পুলিশ সুপারের উদ্যোগে মৃতের আত্মীয়-স্বজন আজ নিশ্চিত হলো। পুলিশ সুপার জনাব নুরেআলম মিনা পিপিএম জানান যে, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার সাথে সাথে তা মৃতের ঠিকানায় প্রেরণের ব্যবস’া নিবেন যাতে করে মৃতের আত্মীয়-স্বজন মৃতের চাকুরী ক্ষেত্র হতে সব ধরণের আর্থিক সুযোগ সুবিধা পান। একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশের পরিচয় উদঘাটনসহ তাকে হিমাগারে রাখা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বুঝিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ সুপার জনাব নুরেআলম মিনা পিপিএম এর অনুরূপ উদ্যোগ বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যা পুলিশ বিভাগের সকল সদস্যের জন্য অনুকরণীয়।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License