মিজানুরকে এক হাত নিলেন দুই মন্ত্রী

Friday, March 21, 2014

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানকে এক হাত নিয়েছেন সরকারের দুই মন্ত্রী। মন্ত্রীদের একজন তার মতাদর্শ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এক অনুষ্ঠানে ড. মিজানুরকে ইঙ্গিত করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও স্বাস’্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ওনাদের মতো বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি-জামায়াতের পক্ষেই কাজ করছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের ওই অনুষ্ঠানে শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে ড. মিজানুর দুই মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সংখ্যালঘু হামলার বিচার না হওয়ার জন্য সরকার ও রাষ্ট্রের ব্যর্থতার বিষয় উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার বিরোধী একটি গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছে। ৫ জানুয়ারির পূর্বে অক্টোবর ও নভেম্বরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন সংঘটিত হয়েছে, যে তাণ্ডব ও ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে, মানুষের নিরাপত্তা যেভাবে বিঘ্‌িনত হয়েছে, তার নিরাপত্তা বিধান করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

একটি ছবির দিকে ইঙ্গিত করে ড. মিজান বলেন, এই ছোট্ট শিশুর চোখের জলের কী জবাব দেব আমরা।

তিনি আরও বলেন, সরকার ও প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর কাছে বলতে চাই, আমরা মানবাধিকার কমিশন থেকে যখন ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি তখন দেখেছি সংখ্যালঘু বাড়িতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হাতে গোনা কয়েকজনকে এজাহারভূক্ত আসামি করা হলেও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে কয়েকশ’ বা কয়েক হাজার। এটা দোষীদের খুঁজে বের করার জন্য নয়, করা হয়েছে ব্যবসা করার জন্য। মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে এ ধরনের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

রাষ্ট্রদূতরা বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য তেমন ভূমিকা রাখতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান।

এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, হামলার সঙ্গে কারা জড়িত এটা সবার কাছে স্পষ্ট। এখানে একজন বক্তব্য দিয়ে চলে গেলেন, কিন’ যারা সামপ্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বললেন না। কেন বললেন না? কারণ এরা হলো সেই শক্তির বংশদলীয় ও তাদের ধারক। এরা তাদের খরচ যোগায়।

মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে শুধু মাঠ গরম করা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এখানে একজন মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়ে গেছেন। কিন’ সামপ্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের নামটি পর্যন্ত উল্লেখ করলেন না। এখানে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের বুদ্ধিজীবীদের পার্থক্য রয়েছে। তারা স্পষ্ট করে কথা বলেন না, কিন’ প্রকারান্তরে সেটা বিএনপি-জামায়াতের পক্ষেই যায়। সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

এর আগে বেলুন উড়িয়ে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যমত সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত বীরউত্তম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গিয়ে শেষ হয়। বিকেলে সেখানে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কানুতোষ মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার প্রমূখ।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License