আমাদের সিলেট ডটকম:
দক্ষিণ সুরমায় প্রচন্ড তোপের মুখে আছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী। সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে ঘিরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে ‘দা কুমড়ো’ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে শফি চৌধুরীর। নিজ দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশও প্রচন্ড খেপেছে তার উপর। এ অবস্থায় অদূর ভবিষ্যতে স্থানীয় ১৯ দলীয় জোটে ব্যাপক টানাপোড়েন ও অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন শফি চৌধুরী- এমন আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।
সদ্য সমাপ্ত দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হওয়া জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছিলেন এই আসনের সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। তার আশীর্বাদ নিয়েই এই উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ। আলীর পক্ষে নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে নামেন শফি চৌধুরী ও তার কিছু অনুগামী। বিএনপি নেতাদের একাংশও তার পেছনে অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় ভাগ্য খুলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক প্রার্থী আবু জাহিদের। গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রায় সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ। মাওলানা লোকমান প্রায় ২৭ হাজার ভোট পেলেও শফি আহমদ চৌধুরীর প্রার্থী বিএনপি নেতা আলী আহমদ প্রায় ২২ হাজার ভোট নিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করেন। এ অবস্থায় স্থানীয় জামায়াত কর্মীদের মাঝে তীব্র প্রভাব ফেলে দক্ষিণ সুরমার এই পরাজয়।
ভোটের আগে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা না গেলেও ভোটের পর পরই শফি চৌধুরীর ভূমিকায় দানা বাঁধা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। গত বুধবার দক্ষিণ সুরমায় শফি আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমার সচেতন উপজেলাবাসীর ব্যানারে ঝাড়ু মিছিল করা হয় ও তার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
এদিকে নির্বাচনের পর পরই শফি চৌধুরীর দেয়া এক বিবৃতিতে জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমানের বিরুদ্ধে প্রচন্ড বিষোদগার করা হয়। ফলে, ক্ষোভ প্রকাশ্য রূপ নেয় জামায়াত কর্মীদের।
এ অবস্থায় জেলা জামায়াত নেতারা স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও অদূর ভবিষ্যতে এর সুফল শফি চৌধুরীর জন্য সুখকর হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে শফি চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে স্থানীয় জামায়াত শিবির নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
দক্ষিন সুরমার সাবেক এক ছাত্রনেতা মনসুর হোসেন খান আমাদের সিলেট ডটকম-কে বলেন, শফি চৌধুরী স্থানীয় ১৯ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এককভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন, যার প্রভাব দেখা যাবে আগামী দিনগুলোতে। এছাড়া, এই আসনে শফি চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে তাকে প্রত্যাখ্যান করবে দক্ষিণ সুরমাবাসী। এমনিতেই তার বিরুদ্ধে ত্রাণের ঢেউটিন ও রিলিফের বিস্কুট চুরির অভিযোগ আছে। মাজারে গিয়ে মদ্যপ অবস্থায় গান বাজনা করার কারণে এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে বহু আগে থেকেই বিতর্কিত শফি চৌধুরী। তিনি সম্প্রতি মাওলানা লোকমানের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে গিয়ে দক্ষিণ সুরমাবাসী সম্পর্কেও আপত্তিকর কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, গোটা দক্ষিণ সুরমাবাসী তার এ সব অপকর্মের সমুচিত জবাব দেবেন।
দক্ষিণ সুরমায় তোপের মুখে শফি চৌধুরী
Friday, March 21, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment