আমাদের সিলেট ডটকম:
সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজারে দুইদিনব্যপী ৬৯৫ তম বার্ষিক ওরস মোবারক সোমবার শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওরসে অংশ নিতে হাজার হাজার ভক্ত ও আশেকানের ঢল নেমেছে মাজার প্রাঙ্গণে। এই ওরস মোবারক শেষ হবে মঙ্গলবার ভোরে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। সোমবার সকালে গিলাফ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বার্ষিক এ ওরসের কার্যক্রম শুরু হয়। রাতে ওরসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জিগির-আসকার, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও শিরণী বিতরণ।
দু’দিনব্যাপী ওরস উপলক্ষে দরগা শরিফ সেজেছে উৎসবের সাঁজে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার ভক্ত-আশেকানরা ভিড় করছেন মাজারে। সব বয়সের মানুষের পদভারে মুখরিত মাজার এলাকা ছাড়াও পুরো সিলেট নগরী। ওরস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স’ান থেকে আসা ভক্তরা কয়েকদিন থেকেই ভিড় করছেন মাজার এলাকায়।
ভক্ত-আশেকানদের কাছে দরগাহ শরীফকে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রাঙ্গন ও আশপাশ এলাকা সাঁজিয়ে তোলা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে দরগাহ এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাজার কমিটি ও মহানগর পুলিশ যৌথভাবে মাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
মাজার কমিটির পক্ষ থেকে ১৬টি সিসি ক্যামেরাসহ মোট ২০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো মাজার এলাকা পর্যবেক্ষণ করছে মহানগর পুলিশ। দরগাহর প্রধান ফটকের দোতলায় স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
দরগা এলাকার বিভিন্ন ফটকে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকের পুলিশও মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া মাজার কর্তৃপক্ষ থেকে প্রায় দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবককে নিরাপত্তা ও ভক্ত আশেকানদের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে।
তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবার জন্য থাকবে একটি মেডিকেল টিম। পাশাপাশি দমকল বাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি টিম সার্বক্ষণিক উপসি’ত থাকবে। মাজারের ওরস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সবকিছু পরিচালিত হবে। দরগাহ বাজার কমিটির পক্ষ থেকেও বসানো হয়েছে অভিযোগ কেন্দ্র।
হযরত শাহজালাল (র.) মাজার অফিস সূত্র জানায়, মাজারের ভক্তদের থাকার জন্য বেশ কিছু প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। তাদের খাওয়ার জন্য মাজার থেকে শিরণী বিতরণ করা হবে।
মাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এখন ভক্ত-আশেকানরা এসে ভিড় করছেন। কিন’ মাজার আশপাশ হোটেলে এখন কোনো সিট খালি নেই। মাজার সংলগ্ন প্রায় অর্ধ-শতাধিক হোটেল সিট বুকিং শেষ। এছাড়াও নগরীর আশপাশ হোটেলগুলোতে বুকিং শেষ হয়ে গেছে। পাশ্ববর্তী আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে প্যন্ডেল টানিয়ে অস’ায়ী আবাসন করা হয়েছে।
সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত জিকির ও এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে ভক্তরা সময় অতিবাহিত করবেন। মঙ্গলবার দিনগত রাত ৩ টায় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে দু’দিনব্যাপী ওরস শেষ হবে। মোনাজাতের পরপরই সকালে ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে শিরণী।
ওরসকে ঘিরে মাজার প্রাঙ্গণে বসেছে বাউলদের আসর। ভক্তিমূলক ও শাহজালালের শানে বাউল সাধকরা হৃদয় উজার করে নিবেদন করবেন তাদের গান।
উলেৱখ্য, প্রতি বছর আরবী মাসের ১৯ ও ২০ জিলক্বদ হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে দু’দিনব্যাপী এ ওরস অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৭ শ বছর ধরে এ ওরস চলে আসছে।
No comments:
Post a Comment