শীর্ষ নিউজ, ঢাকা : আপিল বিভাগ থেকে দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তিনি বলেন, নিকৃষ্ট মিথ্যাচারে ভরা এ রকম একটি মামলায় আমাকে এক মিনিটের সাজা দেওয়াও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তরায় বলে আমি মনে করি। বিশ্ববাসী জানে এই মামলাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল মিথ্যা অভিযোগ একদিন দিবালোকের মতো জাতির সামনে স্পষ্ট হবে।
শনিবার মাওলানা সাঈদীর পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। মাওলানা সাঈদীর ছেলে ও জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী শীর্ষ নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ সময় সেখানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর স্ত্রী বেগম সালেহা সাঈদী, ছেলে শামীম সাঈদী ও নাসিম সাঈদীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মাওলানা সাঈদী তার পরিবারের সদস্যদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলতে রাজি করাতে না পেরে তাকে অপহরণ করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।
সেইফ হাউজ কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এ মামলায় সরকারি সাক্ষীদেরকে ঢাকায় এনে তথাকথিত সেইফ হাউজে রেখে দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। সরকারের এই ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে আমার এই মামলায় এক বিচারপতি এ কে এম জহির আহমেদ সত্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সরকার তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
মাওলানা সাঈদী আরো অভিযোগ করেন, আমার এই মামলার সাক্ষীদেরকে কোর্টে হাজির না করেই তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া তাদের জবানবন্দিকে সাক্ষীর জবানবন্দি হিসেবে গ্রহণ করার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করার পর পরবর্তী ট্রাইব্যুনালের তিনজন বিচারপতির একজনও পরিপূর্ণভাবে আমার মামলাটি শোনেন নি। এমনকি আত্মপক্ষ সমর্থন করে আমাকে বক্তব্য দিতে না দিয়ে সাংবিধানিক অধিকার থেকেও আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
মাওলানা সাঈদী বলেন, সরকার পক্ষ ট্রেনিং দিয়ে ইচ্ছে মাফিক সাক্ষী হাজির করেছে। কিন্তু আমার পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা লিমিট করে দেয়া হয়েছিল। সরকার পক্ষ দেড় বছর ধরে তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনকে মামলাটি পরিচালনার সময় দিলেও আমাকে মাত্র তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছিল।
তিনি বলেন, সর্বোপরি যে চার্জের ভিত্তিতে ইতিহাসের জঘন্যতম এ মামলা পরিচালিত হয়েছিল সেই চার্জ গঠনের অর্ডারটি বেলজিয়াম থেকে জনৈক জিয়াউদ্দিন লিখে পাঠিয়েছিল। আর বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম আদালতে শুধু তা পাঠ করে শুনিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ যেন আমাকে ঈমানের এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তৌফিক দান করেন। আমি যেন ধৈর্য্যরে সঙ্গে এই জুলুম মোকাবেলা করতে পারি, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
No comments:
Post a Comment