নিউইয়র্ক থেকে এনা : সুরমার জলপুত্র সিলেটের সন্তান, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি দিলওয়ারের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘তিনি শুধু সিলেটের জন্যেই গৌরবের ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা বাংলার সহজ-সরল মানুষের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি। তাকে গরিবের কবি কিংবা দরিদ্রের কবি বললে খুশী হতেন না, গণমানুষের কবি বললে তিনি স্বস্তিবোধ করতেন।’ মুহিত তার স্মৃতিচারণকালে আরো বলেন, ‘গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। সে সময় অবচেতন ছিলেন এই কবি। সর্বশেষ তিনি আমাকে টেক্সট মেসেজে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ (স:) এর একটি উক্তি পাঠিয়েছিলেন’ ।- বক্তব্যের এক পর্যায়ে ৮০ বছর বয়েসী অর্থমন্ত্রী মুহিত উল্লেখ করেন, ‘কবি দিলওয়ারের বড়ভাই আজমত আমার সহপাঠি ছিলেন। সে সুবাদে তিনি ছিলেন আমার অনুজ। অথচ তিনি আমার আগেই চলে গেলেন।’ ‘হৃদয়স্পর্শী গান, কবিতায় তিনি বেঁচে থাকবেন অনাদিকাল’-বলেন মুহিত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রয়াত এই গণমানুষের কবির স্মৃতিচারণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত কবি দিলওয়ারকে বাঙালিরা সারাজীবন স্মৃতিতে লালন করবেন।’ এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যের সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী এম এ সালাম সিলেটের কীন ব্রীজের নাম ‘কবি দিলওয়ার কীন ব্রীজ’ রাখার প্রস্তাব করেন। মুক্তিযোদ্ধা যুবকমান্ড এবং ইউএস কমিটি ফর সেক্যুলার ডেমক্র্যাটিক বাংলাদেশ’র সেক্রেটারী জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ভৌগলিক সীমারেখায় বিশ্বাসী ছিলেন না এই কবি। তার কাব্য এবং সঙ্গীতে গণমানুষ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হয়েছে সর্বক্ষণ।’
‘হযরত শাহজালাল(র:) স্মৃতি পরিষদ’ ও ‘সিলেট মহানগর উন্নয়ন পরিষদ’র যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ স্মরণ সভা গত ১৬ অক্টোবর বুধবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল) জ্যামাইকায় তাজমহল রেষ্টেুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংগঠনের প্রধান ফখরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরনবী কমান্ডার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা ডা: মাসুদুল হাসান, সাইফুল ইসলাম রহিম, কামরুদ্দীন আহমদ, রিফাত আক্তার মিশু, শিবলী সাদেক শিবলু প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কবি দিলওয়ারের প্রবাসী পুত্র ও যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা যুবকমান্ডের সেক্রেটারী শাহীন ইবনে দিলওয়ার।
সভায় বক্তারা বলেন, কবি দেলোয়ার ছিলেন গণ মানুষের কবি। তার কবিতায় মানুষের জীবন-সংগ্রামের কথা ফুটে উঠতো সব সময়। তার লেখা ‘তুমি রহমতের নদিয়া, তুমি দীনের নদিয়া, দোয়া করো মোরে হযরত শাহজালাল আউলিয়া’ গানটি এখন সারা দুনিয়ায় ধর্মপ্রাণ বাঙালির প্রিয় গানে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের সৃষ্টি কবি দিলওয়ারকে বাঙালি হৃদয়ে জাগ্রত রাখবে অনন্তকাল।
এ অনুষ্ঠানে সদ্যপ্রয়াত সিলেটের আরেক কৃতি সন্তান প্রফেসর আবুল বাশারেরও স্মৃতিচারণ করা হয়। বলা হয়, জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি মানুষের মাঝে শিক্ষা বিস্তার করে গেছেন।
‘তিনি ছিলেন বাংলার সহজ-সরল মানুষের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি’
Friday, October 18, 2013
Labels:
# সুরমা টাইমস
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment