আমাদের সিলেট ডটকম:
সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নব-ঘোষিত কমিটি নিয়ে যখন দ্বন্দ্ব তুমুল আকার ধারণ করলো তখন বিদ্রোহী একাংশ ৭২ আল্টিমেটাম দিয়ে গণ-পদত্যাগের হুমকি প্রদান করে। শুধু হুমকি দিয়েই বিদ্রোহীরা বসে থাকেন নি, আনুষ্ঠানিকভাবে গণ-পদত্যাগ করতে তারা নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে মঙ্গলবার এক কর্মীসভার আয়োজন করে। চোখ সেখানে নয়, এ কর্মীসভার ব্যানারে সিলেটবাসীর নজর আটকে যায় এবং আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলে।
দেয়াল-জুড়ে টানানো সেদিনের ব্যানারে পদত্যাগেচ্ছুক ছাত্রদল নেতাকর্মীদের স্লোগান ছিলো- ‘শিবির হঠাও- ছাত্রদল বাঁচাও’। ছাত্রদলের এ বিদ্রোহী অংশের হাজারও নেতাকর্মীকে গণ-পদত্যাগ থেকে ফেরাতে সভাস্থলে সেদিন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, যুগ্ম সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম,জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এড. নুর্বল হক, যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাহের শামিম, দিলদার হোসেন সেলিম প্রমুখ।
ছাত্রদলের ‘শিবির হঠাও- ছাত্রদল বাঁচাও’ এ স্লোগান সম্বলিত ব্যানারটি জামায়াত-শিবিরের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ওই ব্যানারের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান- বিগত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিজেদের সবটুকু নিংড়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী করতে শ্রম দিয়েছে সিলেট জামায়াত-শিবির। কিন্তু সেদিন মেয়র ওই ব্যানারের স্লোগানের কোনো প্রতিবাদ না করে প্রমাণ করেছেন যে- তিনি ওই স্লোগানের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছেন।
শুধু তাই নয়, সিটি মেয়রের এ ভূমিকায় সামাজিক যোগাযোগের বর্তমান জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠে। বেশ কয়েকজন এডমিন সিটি মেয়রের উদ্দেশে খোলা চিঠি প্রেরণ করেন।
যা হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো- ‘‘সিটি মেয়র আরিফ সাহেব- সিলেট থেকে শিবির হঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন (!)। কিন্তু ভুলে কি গেছেন কাদের অবদানের জন্য আপনি সিলেটের মেয়র হয়েছেন!! নির্বাচনে ছাত্রদল তাদের কোন্দলের কারণে আপনার পক্ষে কেমন কাজ করেছে তা ভাল করেই জানেন। এমনকি কোথাও কোথাও কামরানের পক্ষে কাজ করেছিল আপনার সেই সন্তানেরা! আর যারা আপনার পক্ষে কাজ করেছে তারাও ব্যস্ত ছিল শুধু মাত্র ফটো সেশন নিয়ে ।
আর শিবিরের ভাইয়েরা রাত-দিন ময়দানে পরিশ্রম করেছে শুধু মাত্র আমাদের সংগঠনের দায়িত্বশীলের একটি মাত্র মুখের কথায়, চষে বেড়িয়েছে গোটা সিলেট মহানগরী নিজের বাপের হোটেলে খেয়ে, তাদের টিফিনের টাকা খরচ করে। দিতে চাইলেও তারা একটি টাকাও নেয়নি আপনার কাছ হতে, আপনার বিজয় নিশ্চিত করেই আমাদের ভাইয়েরা ঘরে ফিরেছে। আর আজ আপনিই “শিবির হঠাও” দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন? আপনি কাদের নিয়ে শিবির হঠাতে চাচ্ছেন, যারা পুলিশের বাঁশি শুনলেই হাত জোড় করে জীবন ভিক্ষা চায় ? নিজেই তোপ দেখেছেন ২০ দলের কোন প্রোগ্রামে আপনার সন্তানদের কেমন সরব (!) উপস্থিতি? ভুলে কি গেছেন ১৮ দলের মহা সমাবেশে সিলেট আলিয়ার মাঠে শিবিরের ধমক খেয়েই কিভাবে পালিয়ে গিয়েছিল আপনার সেই সাহসী ছেলেরা? আজ এদের নিয়ে শিবির হঠানোর হুমকি দিচ্ছেন ? যারা শিবির হটানোর চিন্তা করছেন, জেনে রাখা উচিত একবিন্দু পরিমাণ ও শিবিরকে তার অবস্থান থেকে হঠাতে পারবেননা। উল্টো আপনারাই নিঃশেষ হয়ে যাবেন। শিবির এগিয়ে যাবে তার লক্ষ্য পানে দুরন্ত গতিতে। কোন হুমকি ধুমকি,মামলা, নির্যাতন করে কোন আদর্শবাদী সংগঠনকে ঠেকানো যায়না, যাবেও না… ইনশাআল্লাহ।’’
আরেকটি পোস্টে এক প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারী লিখেছেন- ‘‘কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয়না। ২০১৩ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি হতে চারজন, জামায়াতে ইসলামী হতে এড. যোবায়ের ভাই, ও আওয়ামীলীগ হতে কামরান নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিল করেন। আমাদের প্রাণের দাবি ছিল যে যাহা্ই করুক আমদের প্রাণপ্রিয় দায়িত্বশীল এড. যোবায়ের ভাই নির্বাচন করতেই হবে। সারা সিলেট ঝড় উঠে ৩বারের নির্বাচিত মেয়র কামরানের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হবার সম্ভাবনা ক্লিন ইমেজদারী, কারাবন্ধি এড.যোবায়ের, সব ঠিকঠাক আমরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হটাৎ খবর আসে জোটের সিদ্ধান্ত জোট প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, নির্বাচন করছেন না যোবায়ের ভাই।অন্তরে রক্ত ক্ষরণ আর ভেতরে ভেতরে ফোসে উটলেও সংগঠনের সিদ্ধান্তকে মেনেই আমরা। আমাদের সদস্য-সাথী সমাবেশে আসেন আরিফুল হক চৌধুরী, তিনি ঐদিন ঘোষনা করেছিলেন যদি তিনি নির্বাচিত হন শিবির এবং ছাত্রদলকে এক চোখে দেখবেন, শিবির ও ছাত্রদলকে সমান সুযোগ সুবিধা দিবেন। নির্বাচনে ছাত্রদল তাদের কোন্দলের কারণে আরিফ সাহেবের পক্ষে কোন কাজ করেনি এমনকি কোথাও কোথাও কামরানের পক্ষে কাজ করেছে, যারাও আরিফ সাহেবের পক্ষে কাজ করেছে তারাও শুধু মাত্র ফটো সেশন করেছে। আমরা রাত-দিন মাটে পরিশ্রম করেছি শুধু মাত্র আমাদের সংগঠনের দায়িত্বশীলের একটি মাত্র মুখের কথায়, চষে বেড়িয়েছি গোটা সিলেট মহানগরী নিজের বাপের হোটেলে খেয়ে, আমাদের টিফিনের টাকা খরছ করে। দিতে চাইলেও আমরা একটি টাকাও নেই নি আরিফ সাহেবের কাছ হতে, আরিফ সাহেবের বিজয় নিশ্চিত করেই আমরা ঘরে ফিরেছি। আজ তিনিই “শিবির হঠাও” দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তাইতো বলি কুকুরের লেজ কোনদিন ও সোজা হবেনা।’’
‘শিবির হঠাও’ স্লোগানে মেয়র আরিফের একাত্মতা! ফেইসবুকে প্রতিবাদের ঝাঁক ঝাঁক তীর
Thursday, September 25, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment