ভোট গ্রহণ শেষ : চলছে গণনা; বিভাগের বিভিন্ন স্থানে সরকারী দলের ব্যাপক তান্ডব জাল ভোট : আচরণবিধি লঙ্ঘন : গাড়ী ভাংচুর : সংঘর্ষ: টেবিল কাস্ট

Sunday, March 23, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

সিলেট বিভাগের ১১ উপজেলায় সরকারী দলের ক্যাডারদের ব্যাপক তান্ডবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। বিকেল ৪ টায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনার কাজ।

সিলেট সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়নের মীরাপাড়ায় কেন্দ্রে দুপুরে কেন্দ্র দখল করে টেবিল কাস্ট করেছে সরকারী দলের সমর্থকরা। এই উপজেলায় আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে গাড়ী যোগে ভোটারদের কেন্দ্রে এনেছেন সরকারী দলের প্রার্থী আশফাক আহমদ।

কানাইঘাটে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা রায়গড় কেন্দ্রে সরকারী দলের সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছেন ১৯ দলের প্রার্থীর বেশ কয়েক জন সমর্থক।

মৌলভীবাজার সদরে ১৯ দলের প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজানের গাড়ী ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষ।

হবিগঞ্জ সদরে জাল ভোট দেয়ার কারণে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

আজমিরীগঞ্জে সরকারী দলের ক্যাডারদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন এক বিএনপি কর্মী।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ৩টি কেন্দ্র দখল করে ব্যাপক জাল ভোট দিয়েছে সরকারী দলের সমর্থকরা।


সিলেট সদর : সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার মিরাপাড়া আবদুল লতিফ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১৫/২০ জন নেতাকর্মী ঢুকে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। পরে তারা ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে সীল মেরে বাক্সে ঢোকায় বলে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী শাহজামাল নূরুল হুদার এজেন্টরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার পর প্রায় একঘণ্টা ভোট-গ্রহণ বন্ধ ছিল।

গণনার সময় প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর ছাড়া ব্যালট পাওয়া গেলে তা বাতিল করা হবে প্রশাসনের এমন আশ্বাসের পর পুনরায় ভোট-গ্রহণ শুরু হয়।

এদিকে, সরকারী দলের প্রার্থী আশফাক আহমদের পোস্টার সম্বলিত একাধিক জীপ সকাল থেকে দলদলি চা বাগান এলাকার ভোটারদের কেন্দ্রে আনার কাজে নিয়োজিত ছিল বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অন্য প্রার্থীদের পৰ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।


কানাইঘাট : কানাইঘাটে দিনের শেষে এসে বিভিন্ন কেন্দ্রে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজানের সমর্থকরা উপজেলার রায়গড় কেন্দ্রে গিয়ে জোর করে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করলে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী বিএনপি নেতা আশীক চৌধুরীর সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় মোহনা টিভির ক্যামেরাম্যান ফেরদৌস আহমদ আহত হন। তার ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের পর প্রায় আধ ঘন্টা ভোট বন্ধ ছিল রায়গড় কেন্দ্রে। পরে পুনরায় ভোট-গ্রহণ শুরু হয়।

কানাইঘাট উপজেলার মনসুরিয়া মাদরাসা ও মালিগ্রাম স্কুল কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ ও ১৬ দলীয় জোটের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।


মৌলভীবাজার সদর : মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমানের গাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।

রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে ভোট চলাকালীন টাউন কামিল মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান (ঢাকা মেট্রো চ ০২-১৭৪৯) নাম্বারের একটি গাড়ি রাস্তায় রেখে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যান। এ সময় কে বা কারা তার গাড়িটি ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।


হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জে জাল ভোট দেয়ায় এক ব্যক্তির ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম তাজুল ইসলাম (৩৫)। রোববার বেলা ১১টার দিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) রশীদ আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে হবিগঞ্জ আইনজীবী সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ওই কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে যান। বিষয়টি ওই বুথের এক পোলিং এজেন্টের দৃষ্টিগোচর হলে পুলিশ তাজুলকে আটক করে।

পরে খবর পেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) রশীদ আহমেদ মিলন ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযুক্ত তাজুলকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন।


আজমিরীগঞ্জ : আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর পুরান ভবন কেন্দ্রের বাইরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়ার সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এতে হাবিবুর রহমানের সমর্থক শফিক মিয়া (৪৮) আহত হন। তাকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ভোট-গ্রহণ স্থগিত ছিল।

কামালপুর পুরাতন ভবন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইসমাইল তালুকদার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


ধর্মপাশা : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ৩টি ভোট কেন্দ্রে সংঘষের্র ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরে উপজেলার শেলবরষ ইউনিয়নের মাইজবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিজুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে, বাদশাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আ’লীগ-বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। এসব কেন্দ্রে সংঘষের্র ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০জন আহত হয়। মাইজবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ঘন্টা খানেক ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বেলা ১২টায় উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাইজবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ভোটারদের মধ্যে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। এসময় সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীরা এতে বাধা দেয়। এনিয়ে প্রথমে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলী আমজাদ আহত হন। প্রায় একই সময়ে বালিজুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে, বাদশাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আ’লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় দুটি কেন্দ্রেই ভোটারদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ, বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতালেব খান জানান, আ’লীগ নেতাকর্মীরা জোর করে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করেছে। ভোটারদের তারা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

ধর্মপাশা থানার ওসি বায়েস আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License