আমাদের সিলেট ডটকম :
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার গহিন অরণ্যে প্রতিনিয়ত শিকার করা হচ্ছে অন্যতম সম্পদ মায়া হরিণ। সৌখিন শিকারিসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মায়াবী এই বন্যপ্রাণি হত্যার কাজে লিপ্ত। তবে সংশিৱষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে পালন করে যাচ্ছে রহস্যজনক ভূমিকা। এ পর্যন্ত আটক করা হয়নি কাউকেই। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে স্থানীয় শিকারিরা হরিণ শিকারে দ্বিগুণ উৎসাহিত হয়ে উঠছেন। অভিযোগ রয়েছে, শিকারিরা সংশিৱষ্ট কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে এ হরিণগুলো শিকার করে থাকেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম (এফইজেবি) মৌলভীবাজার কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১ জুন থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সংরক্ষিত বন থেকে প্রায় ২৩টি হরিণ শিকার করা হয়েছে। সমপ্রতি বড় আকারের একটি মায়া হরিণ শিকার করে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, পার্শ্ববর্তী ভারতের সঙ্গে সীমানা থাকায় মায়া হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণির নিরাপদ অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে রাজকান্দি। রাজকান্দি বন রেঞ্জের আদমপুর ও কামারছড়া বনবিট মায়া হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণির অন্যতম বিরচণক্ষেত্র। মায়া হরিণের নিরাপদ অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত এ বনে নজর পড়ে হরিণ শিকারি চক্রের। হরিণ শিকারের পেছনে রয়েছেন প্রভাবশালী একটি মহল। শিকারি চক্র থাকেন রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে। শিকারের পর একেকটি মায়া হরিণ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
রাজকান্দি বনের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, হরিণ শিকার বন্ধ করতে বিভিন্ন বিটে আমাদের টহল আরো বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাতে আদমপুর বনবিটে একদল শিকারি ঢুকে এ সংবাদ পেয়ে বনকর্মীরা তাদের ধাওয়া করলে শিকারিচক্র বাগানের লম্বাটিলা নামক স্থানে একনলা বন্দুক ফেলে পালিয়ে যায়। বন্দুকটি থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, আমি যখন কমলগঞ্জে নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে ছিলাম তখন মায়া হরিণ শিকারের কথা জানতে পারি। জেলা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির সভায় একাধিকবার এ বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।স্থানীয় বন বিভাগকে এ ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে।
উলেৱখ্য, মায়া হরিণের ইংরেজি নাম Indian Muntjac/Barking Deer। এদের উচ্চতা ২২ ইঞ্চি এবং ওজন ১৭ কেজি। এরা লালচে বাদামি রঙের ছোট আকারের লাজুক প্রাণী। মূলত একা চলাফেরা করে বলে প্রায়শই শত্রুর মুখোমুখি হয়। পুর্বষ হরিণটির এক জোড়া শিং থাকে। ঘাস, লতাপাতা এদের প্রধান খাদ্য। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এদের বিচরণ। আইইউসিএন এর তথ্য মতে, এরা অত্যন্ত নিরীহ প্রাণী।
কমলগঞ্জে ১ বছরে ২৩ টি দুর্লভ মায়া হরিণ শিকার ॥ কর্তৃপৰের রহস্যজনক নিরবতা
Saturday, July 19, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment