আমাদের সিলেট ডটকম: জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার নাভি পিল্লাই বলেছেন, “ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। এটা যুদ্ধাপরাধ।” জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের জরুরি বিতর্ক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। নাভি পিল্লাই বলেন, “গাজায় হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসরাইল। হত্যা করছে শিশুদের। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।” হামাসের রকেট ও মর্টার হামলারও নিন্দা করেন নাভি পিল্লাই। ইসরাইলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এদিকে হামাসের রকেট হামলার কারণে তেল আভিভ থেকে বিমান চলাচল বন্ধের পথে। যুদ্ধ বন্ধের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, বুধবারের হামলায় অন্তত ৩০ জন হামাস সদস্য নিহত হয়েছে। ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া হামলায় এ পর্যন্ত ২১০ জন হামাস সদস্য নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে। হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করার লক্ষ্যের কথা বলে শুরু করা হামলায় কমপক্ষে ২৯ জন সেনাসদস্যকে চিরতরে হারিয়েছে দেশটি। এক ফিলিস্তিনি স্নাইপারের গুলিতে বুধবারও প্রাণ হারায় ইসরাইলি এক ট্যাংক অফিসার। এদিকে গাজা থেকে ছোড়া রকেট তেল আভিভ বিমানবন্দরের কাছের একটি বাড়িতে আঘাত হেনেছে। আরো হামলার আশঙ্কায় আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ ইসরাইল থেকে এবং ইসরাইলের দিকে তাদের সব ফ্লাইট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরাইল সরকারও তেল আভিভের বেন গুরিয়ন বিমান বন্দরের ৮০টি ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। তবে তেল আভিভের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ রাখতে ইচ্ছুক দেশগুলোর প্রতি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধও জানিয়েছে ইসরাইল। মূলত আর্থিক ক্ষতি এড়াতেই এ অনুরোধ। চলমান পরিস্থিতিতে তেল আভিভে স্বাভাবিক বিমান চলাচল দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের বাইরে নানা স্থানে আটকে পড়া ইসরাইলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও বেনইয়ামিন নেতানিয়ানহু সরকার উদ্বিগ্ন। তাই তেল আভিভ থেকে অন্যান্য বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করার সময়েও ইসরাইলি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ। ইসরাইলের এল আল এয়ারলাইন্স ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোয় সহায়তা করবে বলে সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কোনো পক্ষই সাড়া দিচ্ছে না। মিশর সরকারের দেয়া এ প্রস্তাব মেনে নিয়ে শুরুতে ইসরাইল সাময়িকভাবে যুদ্ধ বন্ধ রাখলেও হামাস তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। তারপরও শান্তিপুনস্থাপন প্রচেষ্টা অব্যাহত। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর করার উপায় খুঁজতে মিশর সফর করছেন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। একই লক্ষ্য নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন গিয়েছেন ইসরাইলে। কিন্তু অবস্থা এখনো তথৈবচ। ইসরাইলি হামলার তীব্রতা বেড়েই চলেছে। গাজায় মৃত্যের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিদিন মিছিলে যোগ হচ্ছে নারী আর শিশুদের কচি, নিষ্পাপ মুখ। বুধবারও ইসরায়েলের গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছে গাজার দক্ষিণে আট বছর বয়সি এক শিশু।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment