আমাদের সিলেট ডটকম:
সাধারণত: পাখীই আকাশে উড়ে। কেউ যদি বলে, হাতি আকাশে উড়ছে তবে সে যেমন অবিশ্বাস্য মনে হবে তেমনি হাস্যকর বলে বিবেচিত হবে মানুষের কাছে। একইভাবে উড়োজাহাজ আকাশে উড়ে।কিন্তু কেউ যদি বলে যে ওই দেখো ট্রেন আকাশে উড়ছে, তা তেমনি অবিশ্বাস্য বলে মনে হবে। এই অবিশ্বাস্যকে বিশ্বাস্য ও বাস্তবে পরিণত করতে চলেছেন সিলেটের বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিজ্ঞানী ড. আতাউল করিম। তিনি আবিষ্কার করেছেন ফ্লাইং ট্রেন বা উড়োট্রেন। তিনি বর্তমানে বিশ্বের ১০০ জন সেরা বিজ্ঞানীর অন্যতম। বহু বিস্ময়কর প্রযুক্তির আবিষ্কার আতাউল করিম যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের নরফোকস’ ওল্ড ড্যামিয়েন ইউনিভার্সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অর্থাৎ ভাইস চ্যান্সেলর। লক্ষণীয় যে, বর্তমানে জার্মানী, চীন ও জাপান সুপার হাইস্পীড বা অতি দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্রেন আবিষ্কার করেছে। এসব ট্রেন ঘণ্টায় দেড়শ মাইল বেগে চলতে পারে। কিন্তু অনেক চেষ্টা সত্বেও যুক্তরাষ্ট্র কিংবা এসব দেশের বিজ্ঞানীরা উড়ন্ত ট্রেন আবিষ্কারে সক্ষম হয়নি। ইতোপূর্বে অনেক মার্কিন গবেষক ফ্লাইং ট্রেন বা উড়ন্ত ট্রেন আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। এ কাজে ব্যয় হয় বিপুল অর্থ। কিন্তু তারা এতে সফল হননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডঃ আতাউল করিম সফল হয়েছেন স্বপ্নের উড়ন্ত ট্রেন আবিষ্কারে। তিনি ইতোমধ্যে একটি উড়ন্ত ট্রেনের ‘কনটেকচুয়েল ফ্রেমওয়ার্ক’ অর্থাৎ উদ্ভাবনী কাঠামো প্রদর্শন করেছেন। খ্যাতনামা বিজ্ঞানীরা তার প্রস্তাবিত ট্রেনের মডেল বার বার পরীক্ষা করে দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা বাণিজ্যিকভাবে উড়ন্ত ট্রেনটি চালু করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন।
জানা গেছে, তাকে ট্রেনটি তৈরীর দায়িত্ব দেয়া হলে দেড় বছরের মধ্যে সেটা নির্মাণ করা সম্ভব হবে। ১৫০ মাইল গতিসম্পন্ন একটি ট্রেন তৈরীতে সাড়ে ৮শ কোটি টাকারও বেশী ব্যয় হলেও ডঃ করিমের উড়ন্ত ট্রেন তৈরীতে ব্যয় হবে সর্বোচ্চ ২৪ কোটি টাকা। ড. আতাউল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিদ্যায় মাস্টার্স ডিগ্রী লাভের পর ৩০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। সেখানে আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে পদার্থ বিদ্যায় এমএস, ১৯৭৯ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমএস এবং পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। একই সাথে তিনি পেশাগত কাজও চালিয়ে যান। বর্তমানে স্বীয় দক্ষতার বলে তিনি কমপক্ষে ৬শ ফ্যাকাল্টির প্রায় ৫ হাজার গবেষক ও শিক্ষার্থীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নেতৃত্বে ৬টি কলেজ, ২০টি গবেষণা কেন্দ্র এবং ৬শ শিক্ষকও কাজ করছেন।
সিলেট তথা বাংলাদেশের গর্ব খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ড. আতাউল করিমের জন্ম সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলাধীন বড়লেখা উপজেলায়। পিতা ডাঃ আব্দুস শাকুর এলাকায় দরদী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি দরিদ্র লোকজনকে ফ্রি চিকিৎসাসেবা প্রদান করতেন। তাদের বাড়ি ছিলো বড়লেখা রেলস্টেশনের ঠিক পশ্চিমে। বাড়ির নাম ‘মিশন হাউস’। তিনি পিতামাতার ২ সন্তানের মধ্যে একমাত্র পুত্র সন্তান। তার ছোট বোনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ডিগ্রীধারী। ভগ্নিপতি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল অনুষদের ডীন। আতাউল করিম গ্রামের একটি স্কুলে পড়াশোনা শেষে সিলেট এমসি কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ১ম স্থান অধিকার করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে সেদেশে গমন করেন। ড. আতাউল করিম সহজ সরল জীবন যাপনে বিশ্বাসী। তিনি বছরে একবার বাংলাদেশে অর্থাৎ সিলেটে আসেন। সিলেট নগরীতে এলে খালাতো বোন ব্লু বার্ড মিসেস রেহার সুবিদবাজারস্থ বাসায় অবস্থান করেন। তবে গত দু’বছর যাবৎ তিনি বাংলাদেশে আসেননি বলে জানান মিসেস রেহা।
‘উড়ন্ত ট্রেন’ আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিলেটের কৃতী সন্তান বিজ্ঞানী ডঃ আতাউল করিম
Sunday, May 18, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment