আওয়ামী লীগ আরেকটু পচলে আন্দোলনের কর্মসূচি : খালেদা

Saturday, May 24, 2014

আমাদের সিলেট ডেস্ক : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগকে এখন সময় দেওয়া হচ্ছে। তারা ‘আরেকটু পচলে’ বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে এ সমাবেশ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে সমাবেশ করতে না দেওয়ার সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকার এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত। মানুষ যেমন র‌্যাবের নাম শুনলে ভয় পায়, তেমনি বিএনপির সমাবেশের নাম শুনলে সরকার ভয় পায়।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘অনেকেই বলছেন বিএনপি কেন কর্মসূচি দেয় না। আমরা সময়মতো কর্মসূচি দেব। কারণ, এরা (সরকার) জনগণের কাছে পচে গেছে। এদের দুই পয়সার দাম নেই। এরা আরেকটু পচুক, আরেকটু গলুক। তারপর আমরা কর্মসূচি দেব। আমরা তাদের সুযোগ দিচ্ছি। এদের আরেকটু পচতে দিতে হবে।’

নিজের বিরুদ্ধে চলমান মামলা প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি বলেছি, আমি জনগণের সঙ্গে আছি। এ জন্য তারা আমার পিছে লেগেছে। আমি এসব পরোয়া করি না। আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র করছে, যাতে কোনোভাবে আমাকে আটকানো যায়।’ তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে সময়ে চারটি মামলা করা হয়েছিল, ঠিক একই সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ১৫টি মামলা করা হয়েছিল। ওই মামলাগুলো চালু করার দাবি জানান তিনি।

নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। গণতন্ত্রের বিজয় হবেই।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন টাকার ভাগাভাগির জন্য নিজেরা মারামারি করছেন। এ অবস্থা আরও বাড়তে থাকবে। কারণ, আল্লাহর একটা বিচার আছে। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এমনভাবে পড়বেন, আর উঠে দাঁড়ানোর শক্তিও থাকবে না।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘অতি বড় বাড়া ভালো নয়। কথায় আছে, অতি বড় হয়ো না, ঝড়ে পড়ে যাবে। অতি ছোট হয়ো না, ছাগলে মুড়ে খাবে। বাঘ-ভাল্লুক লাগবে না, ছাগলই আপনাদের খাবে।’

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় এখনো প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হয়নি দাবি করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, খুনিদের বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয়েছে।

আর যাদের ধরা হয়েছে তাদের রিমান্ডের নামে জামাই আদর করা হচ্ছে। কারণ, তাদের ওপর সত্যিকার চাপ দিলে সত্য বলে দেবে। এতে আওয়ামী লীগের জারিজুরি ফাঁস হয়ে যাবে।

খালেদা জিয়া বলেন, গোটা দেশের মানুষ আজ আতঙ্কিত। ঘরে ঘরে আতঙ্ক, কান্নার রোল। একদিন না-একদিন এসব মায়ের চোখের পানির জন্য আপনাদের ভুগতে হবে।

আবারও র‌্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, র‌্যাবকে অবশ্যই বাতিল করতে হবে। তারা মুক্তিপণ নেয়। টাকা নিয়ে মানুষ হত্যা করে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের সমাবেশ করতে না দেওয়ার সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার এতই ভীতু, দুর্বল যে সমাবেশ দেখে ভয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে তালা লাগিয়ে, পুলিশ দিয়ে আটকে রেখেছে। এর আগে ২২ তারিখের সমাবেশও করতে দেয়নি।

খালেদা জিয়া দাবি করেন, এ ‘অবৈধ’ সরকারের বাজেট ঘোষণার কোনো অধিকার নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়।

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান হত্যার ঘটনায় জয়নাল হাজারী ও নিজাম হাজারীকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়ার দাবি জানান বিএনপির চেয়ারপারসন।

প্রেসক্লাবের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন, আইনজীবী ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মিয়া, বিএনপির স’ায়ী কমিটির সদস্য আইনজীবী মওদুদ আহমদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ আইনজীবী নেতারা।

সমাবেশে বাধা

নারায়ণগঞ্জে নিহত আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাত খুনের ঘটনা ও সারা দেশে গুম-খুন-অপহরণের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গতকাল সমাবেশ ডাকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

আইনজীবী ফোরামের গতকালের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের সব প্রবেশপথে অবস’ান নেয় পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে ও বাইরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রবেশপথগুলো কাঁটাতারের প্রতিবন্ধক দিয়ে আটকে রাখা হয়। ওই এলাকায় যাওয়ার সব সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

সমাবেশে অংশ নিতে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন আইনজীবীকে আটক করে পুলিশ। আইনজীবীদের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।

এ পরিসি’তিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের একটি দল হাইকোর্ট মাজারের দিকের ফটকের সামনে অবস্থান নেয়।

এরমধ্যে সকাল ১০টার দিকে ৩০-৪০ জন আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সমাবেশ শুরু করেন। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকনও ছিলেন। সমাবেশস্থলে কোনো মঞ্চ ছিল না। ছিল না মাইকও। হাত-মাইক ব্যবহার করে আইনজীবী ফোরামের নেতারা বক্তব্য দেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই সমাবেশ শেষ হয়। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ও সদস্যরা।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License