ইলিয়াস পত্নী লুনার মতবিনিময়: ‘ম্যাডামের নির্দেশে রাজনীতিতে আসা’

Friday, June 27, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

বাংলাদেশের রাজনীতির আলোচিত চরিত্র, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্ট্রার ও সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য তাহসিনা রুশদী লুনা এই প্রথম আমন্ত্রণ জানিয়ে বিশ্বনাথের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথের রামধানায় ইলিয়াস আলীর বাড়িতে এই মতবিনিময়কালে ইলিয়াস পত্নী লুনা বলেন, তার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর ফিরে পাওয়ার আন্দোলনকে মিডিয়ার মাধ্যমে জাতির সামনে তুলে ধরেছেন সাংবাদিকরা। এজন্য তিনি ইলিয়াস পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভবিষ্যতেও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন লুনা।

রাজনীতিতে আসার কারণ সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তাহসিনা রুশদী লুনা বলেন, দলের নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে ও ইলিয়াস আলীর রাজনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখতে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) নির্দেশে আমার রাজনীতিতে আসা।

তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমাকে সিলেট জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তবে আমি নিজ থেকে কখনো রাজনীতি করার চিন্তা করিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি সে প্রতিষ্ঠানটি একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে থেকেও আইন অনুযায়ী রাজনীতি করতে কোন বাঁধা নেই। তবে আইনে রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে নমিনেশন দাখিলের পূর্বে চাকুরী থেকে ইস-ফা দিতে হবে।

সাংবাদিকরা লুনার কাছে জানতে চান ‘আপনি প্রায়ই মিডিয়ার সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, যে কোন কিছুর বিনিময়ে আপনি আপনার স্বামীকে ফিরে পেতে চান।’

তিনি এ বিষয়ে বলেন, কোন পক্ষের সাথে দেন-দরবারের কথা না বলে লুনা তার আত্ম-বিশ্বাস ও অগনিত মানুষের আশির্বাদের কারণে ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন বলে তার ধারনা।

ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকে সরকার ও প্রশাসনের কি ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিখোঁজের পর থানায় দায়েরকৃত জিডি’র প্রেক্ষিতে প্রশাসন তার সাথে মাত্র ৩ বার যোগাযোগ করেছে। বাসায় লাগানো সিসি ক্যামেরাও তুলে নেয়া হয়েছে।

লুনা বলেন, চাইলে এর তথ্য সরকার বের করতে পারতো। স্বাধীন দেশের একজন মানুষ নিখোঁজ হল কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান বের করতে পারেনি সরকার। এমনকি সন্দেহজনক ভাবেও কাউকেই আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এতে কি বুঝায়? সরকার আন্তরিক হলে এতদিনে আমার স্বামীকে ফিরে পাওয়া সম্ভব হত।

স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল বিশ্বনাথে সহিংসতার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লুনা অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।

দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে লুনা বলেন, ৫ জানুয়ারীর পাতানো ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হয়েছে। এই সরকার নিজেদের তৈরী সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়।

তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের শানি-পূর্ণ কর্মসূচীতে প্রশাসনকে ব্যবহার করে হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানী করা হচ্ছে। আজ দেশে গণতন্ত্র বলে কিছুই নেই। যে টুকু আছে তা সাংবাদিকরাই সংবাদপত্রের মাধ্যমে টিকিয়ে রেখেছেন। ফলে দেশের সংবাদ কর্মীরাও আজ নিরাপদে নন।

লুনা প্রবল আত্ম-বিশ্বাসের সাথে বলেন, সিলেটের রাজনীতির সিংহ পুরুষ ইলিয়াস আলী বীরের বেশে আবারো জনগণের মাঝে ফিরে আসবেন। লক্ষ লক্ষ মানুষের আশির্বাদ ও ভালোবাসা বিফলে যেতে পারে না।

মতবিনিময় কালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য লিলু মিয়া চেয়ারম্যান, আবুল কালাম কছির, আব্দুল হাই, বশির আহমদ, সাবেক প্রচার সম্পাদক কলমদর আলী, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি তজম্মুল আলী রাজু, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী শিপন, কোষাধ্যক্ষ অসিত রঞ্জন দেব, কার্যনির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম জুবায়ের, এমদাদুর রহমান মিলাদ, সদস্য নূর উদ্দিন, জামাল মিয়া, আবুল কাশেম, সাংবাদিক আশিক আলী, মামুনুর রশীদ মামুন, সাইফুল ইসলাম বেগ, লোকমান আহমদ, ফটো সাংবাদিক আখতার হুসেন প্রমুখ।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License