আমাদের সিলেট ডটকম :
ছোট-বড় গর্তের ভিড়ে বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কটি আর সড়ক নেই। যথা সময়ে সংস্কার কাজ না করায় এ সড়কের বেহাল দশা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সড়কের অধিকাংশ স’ানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ফলে জনদুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে। এদিকে, নামমাত্র সংস্কার কাজ করার মাধ্যমে পুকুর চুরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
প্রায় দু’বছর চরম ভোগান্তির পর পূর্বে বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কের কেনবাড়ী পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার ও বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের ৩ কিলোমিটার সংস্কার কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ৫ কোটি ১২ লাখ টাকা বরাদ্ধ হয়। প্রায় ৪মাস পূর্বে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি দেওয়া হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তৈয়বুর রহমান এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং জেবি কে। টেন্ডারের পাওয়ার প্রায় ২ মাস পর শুর্ব হয় সংস্কার কাজ। কিন’ যথা সময়ে কাজটি শুর্ব না করায় ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস’ার কারণে বৃষ্টির পানি সরাতে না পারায় সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির কারণে কার্পেটিং করতে পারছেনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সংস্কার কাজে এলাকাবাসীর রয়েছে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ।
জানা গেছে, বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক থেকে বিশ্বনাথ চানসির কাপন পর্যন- নির্মাণ করা হয় বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়ক। এরপর মহাজোট সরকারের গত আমলে ১ বার সংস্কার কাজ করা হয়। কিন’ দীর্ঘ দিন থেকে এই সড়কে সংস্কার কাজ না হওয়ায় এখন সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এই সড়ক দিয়ে কেবল সিলেট শহরে যাথায়াত করতে হয় জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী ও দক্ষিণ বিশ্বনাথের জনসাধারণকে। প্রতিদিন চলাচল করছে শত শত যানবাহন। সড়কটি এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সড়কে প্রায়ই ঘটছে ছোট-খাটো দূর্ঘটনা। সড়কটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী। এত খারাপ রাস্তা হওয়ার পরও থেমে নেই এখানকার বাস, এ্যাম্বুলেন্স, অটোরিক্সা, টেম্পু, লাইটেস, কার, জীপসহ সকল গাড়ীর চালকদের জীবনের চাকা। চালকরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবিকার তাগিতে বের হচ্ছেন গাড়ী নিয়ে। রাস-ার অবস’া খারাপ হওয়ার কারনে গাড়ী রাস্তা দিয়ে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে গাড়ী গুলোর যন্ত্রপাতি। বাইপাস সড়কে প্রায় চারশত গজ রাস্তায় বড় বড় গতের্র ফলে অনেক যানবাহন বাইপাস সড়কের বদলে বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ রাস-ায় দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। এতে কলেজ ছুটির সময় শিক্ষার্থীদেরও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। এছাড়া বিশ্বনাথ বাজার থেকে জগন্নাথপুর সড়কটিও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সংস্কার কাজ হওয়ার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সড়কের ঐ কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয় গর্ত। কিন- দীর্ঘ দিন থেকে এই সড়কে সংস্কার কাজ না হওয়ায় এখন সড়কের বিভিন্ন স’ানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আর রাস্তা ভাঙা থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। সন্ধ্যা থেকে গাড়ী চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
যাত্রী আব্দুর রহীম, শিপন মিয়াসহ অনেকেই বলেন, রমজান মাসে প্রতিদিন যাতায়াতের পথে আমাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কালিগঞ্জ বাজার এলাকায় অপরিকল্পিত সংস্কার চলায় প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর যখন যানজট সৃষ্টি হয় তখন ঘন্টা খানেক আটকে থাকতে হয়। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে সংঘষের্র ঘটনাও ঘটছে বলে অনেকেই জানান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তৈয়বুর রহমান এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং জিবি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে সংস্কার কাজটি দ্র্বত সম্পন্ন হচ্ছেনা। যেটুকু হচ্ছে তাও নিম্ন মানের। বালুর পরিবর্তে খুবই নিম্ন মানের মাটি দিয়ে করা হচ্ছে কাজ। সংস্কার কাজের নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় গত শনিবার কালিগঞ্জ বাজারে সংস্কারে কাজে বাঁধা দেন স’ানীয় বাসিন্দারা।
কালিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী এম.এ রব বলেন, সড়ক সংস্কারে নামে পুকুরচুরি চলছে। বালুর বদলে মাঠি ও নিম্নমানের ইটের সুড়কি দিয়ে গর্ত ভরাট করে দায়সারা ভাবে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তৈয়বুর রহমান এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং জেবি’র সত্ত্বাধিকারী তৈয়বুর রহমান বলেন, আমাদের বির্বদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে বর্তমানে কার্পেটিংয়ের কাজ করা যাচ্ছেনা। বিষয়টি খতিয়ে না দেখে কতিপয় লোক আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, টেন্ডারের পর থেকে কাজ শুর্ব হওয়ায় ধারাবাহিক কাজ করা যাচ্ছে না। আমরা কাজের তদারকি করছি। কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।
এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া বলেন, সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কটি আর সড়ক নেই ছোট-বড় গর্তের স্বর্গরাজ্য ॥ ভোগান্তি
Monday, July 7, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment