আমাদের সিলেট ডটকম :
কানাইঘাট পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক লুৎফুর রহমানের চাচাতো ভাই ও ভাতিজার মধ্যে অটোরিকশা ব্যবসা নিয়ে দন্দ্বের জের ধরে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে। দ্বন্দের জের ধরে ইতিমধ্যে মেয়র লুৎফুর রহমানের নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, নাম্বার প্লেট বিহীন অটো রিক্সা (সিএনজি) গাড়ির ব্যবসা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দের সূত্রপাত ঘটে। মেয়রের চাচাতো ভাই কানাইঘাট বাজারের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী দলই মাটি গ্রামের বিলাল আহমদের সাথে নিকটাত্মীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা মাসুম আহমদের সিএনজি গাড়ীর ব্যবসা ছিল। সমপ্রতি ব্যবসার টাকা পয়সা লেনদেন নিয়ে বিলাল আহমদ ও মাসুম আহমদের মধ্যে বির্বধের সূত্রপাত হয়। বিলাল আহমদ কানাইঘাট থানায় কয়েকদিন পূর্বে মাসুম আহমদের বির্বদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন। এরই জের ধরে মেয়রের পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের মধ্যে দ্বন্দ শুর্ব হয়। মেয়রের ভাতিজা বঙ্গবন্ধু সোনারবাংলা আদর্শ বাস্তবায়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাসুম আহমদের পক্ষে অবস’ান নিলে বিলাল আহমদের পরিবারের নিজ মালিকানাধীন কানাইঘাট উত্তর বাজারস’ একটি ভবনে অবসি’ত বঙ্গবন্ধু সোনারবাংলা আদর্শ বাস্তবায়ন পরিষদের ভাড়া নেওয়া অফিস ছেড়ে দিতে মাহবুবকে চাচা বিলাল ও তার সহযোগিরা বললে বিরোধ প্রকাশ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তির জন্য গত রোববার রাত অনুমান ৯টায় মেয়র লুৎফুর রহমান তার দলই মাটিস’ বাস ভবনে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। একপর্যায়ে কথাকাটাকাটি নিয়ে দু পৰের হাতাহাতি হলে দু’জন আহত হন। ওই সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষের প্রস’তি নিলে খবর পেয়ে কানাইঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস’লে গিয়ে পরিসি’তি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর জের ধরে পরদিন সোমবার ভোরে দু’পক্ষ ব্যাপক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুণরায় সংঘর্ষের প্রস’তি নিলে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস’লে উপসি’ত হয়ে তা নিবৃত্ত করেন। তারপরও উভয় পক্ষ একে অপরের বির্বদ্ধে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ও সশস্ত্র অবস্থান নেয়।
সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেল অনুমান ২টার সময় বিলাল গংরা মাসুম আহমদের অধীনে থাকা একটি অটোরিক্সা (সিএনজি) গাড়ী পুলিশে দিয়ে আটক করায়। সিএনজিটি থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে মাছুম আহমদের পক্ষের লোকজন থানায় যান। খবর পেয়ে বিলাল আহমদের ভাই হেলাল আহমদ একটি সিএনজি গাড়ী নিয়ে কানাইঘাট বাজারে আসার সময় সিএনজি গাড়ীতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র আছে এমন অভিযোগে ট্রাফিক পুলিশ তাদের থানার সামনে থেকে গাড়ী সহ আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শী র্বহেল আহমদসহ কয়েকজন জানিয়েছেন গাড়ীতে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্র ছিল। পরে আটককৃত দু’জনকে থানায় নিয়ে ছেড়ে দেয়া হলেও ভাই ভাই পরিবহন-২ নামে একটি নাম্বার পেৱটবিহীন সিএনজি গাড়ী পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। ঘটনার সময় থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী ও ওসি তদস্ত শফিকুর রহমান অফিসিয়াল কাজে সিলেট ছিলেন। ধারালো অস্ত্র আটকের ঘটনাটি অনেকে প্রত্যক্ষ করলেও থানায় দায়িত্বরত এস.আই কামাল অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান। এক পর্যায়ে বিকেল ৫টার সময় পুলিশ কানাইঘাট বাজার থেকে হেলাল আহমদকে আবারো আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাতে পৌর মেয়র লুৎফুর রহমানের জিম্মায় থানার পুলিশ তাঁকে মুছলেকা রেখে ছেড়ে দেয়।
এদিকে হেলাল আহমদ ও বিলাল আহমদ গংদের বির্বদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মেয়রের ভাতিজা মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে কানাইঘাট বাজারে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর রাত ১০টায় হেলালকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বাজারে মাহবুবুর রহমান ও মাছুম গংদের পক্ষের লোকজন পুণরায় একটি মিছিল বের করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ধারালো অস্ত্রের বিষয়টি লোকজন বলাবলি করায় হেলাল আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে মেয়র লুৎফুর রহমানের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপরদিকে মেয়র লুৎফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।
প্লেটবিহীন অটোরিকশা ব্যবসা কানাইঘাট পৌর মেয়রের পারিবারিক বিরোধ তুঙ্গে
Wednesday, July 9, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment