আমাদের সিলেট ডটকম : একেবারেই অনুজ্জ্বল ছিলেন রোনালদো। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ছিল না তার বিপজ্জনক উপসি’তি। ফ্রি-কিকেও ভীতি ছড়াতে পারেননি ফুটবলের এই মহাতারকা।
ফলে তার দল পর্তুগালের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নিলেন জার্মান ফরোয়ার্ড টমাস মুলার। আর ৪-০ গোলের জয় দিয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপ শুরু করলো তিনবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি।
জোয়াকিম লোর দলের সামনে রীতিমত অসহায় ছিল পর্তুগাল। ৩৭তম মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হওয়া প্রতিপক্ষের প্রতি নির্মম ছিলেন মুলার, মেসুত ওজিল, মারিও গোটজেরা।
ম্যাচের ১২, ৪৫ ও ৭৮তম মিনিটে গোল তিনটি করেন মুলার। বিজয়ী দলের পক্ষে অপর গোলটি করেন মাটস হুমেলস। বিশ্বকাপে নিজেদের শততম ম্যাচে তাই দারুণ এক জয় পেল সাতবার ফাইনালে খেলা জার্মানি।
সোমবার সালভাদরের আরেনা ফনে- নোভায় ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পেয়েছিল জার্মানি। পর্তুগালের গোলরক্ষক রুই পাত্রিসিওর মারাত্মক ভুলে বল পেয়েছেলিন সামি খেদিরা। তবে ফাঁকা জালে বল পাঠাতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার।
দশম মিনিটে ডি বক্সে মারিও গোটজেকে পর্তুগালের ডিফেন্ডার জোয়াও পেরেইরা ফেলে দিলে পেনাল্টি দেন রেফারি, সঙ্গে তাকে হলুদ কার্ড। ২০১০ সালের গোল্ডেন বুট জয়ী মুলারের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় জার্মানি।
২৫তম মিনিটে ম্যাচে নিজেদের প্রথম সত্যিকারের সুযোগটি পেয়েছিল পর্তুগাল। তবে নানির দুরপাল্লার শটটি অল্পের জন্য লক্ষভ্রষ্ট হয়।
৩১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার ভালো একটি সুযোগটি হাতছাড়া করে জার্মানি। মেসুত ওজিলের চমৎকার পাস থেকে বল পেয়ে গোটজেকে দিতে একটু দেরি করেছিলেন খেদিরা। ততক্ষণে জায়গা মতো পৌঁছে যান ব্রুনো আলভেস। গোটসের জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন এই ডিফেন্ডার।
তবে খুব একটা লাভ হয়নি তাতে। সেই কর্নার থেকেই গোল করে ব্যবধান বাড়ান হুমেলস। টনি ক্রুসের কর্নার থেকে এই ডিফেন্ডারের হেডে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
পাঁচ মিনিট পর পাওলো বেন-ার দলের জন্য আরো বড় আঘাত। পেপে মেজাজ হারানোয় দশ জনের দলে পরিণত হয় পর্তুগাল।
বাধা দিতে গিয়ে মুলারের মুখে হাত লেগেছিল পেপের। তাতে চোখমুখ ঢেকে বসে পড়েন জার্মান ফরোয়ার্ড। রেগেমেগে পেপে নীচু হয়ে হালকা গুতো দেন মুলারের মাথায়। মুলারও উঠে গিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। শেষে রিয়াল মাদ্রিদের মেজাজী এই ডিফেন্ডারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়।
দশ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর রক্ষণেই বেশি মনোযোগ দিতে হয় পর্তুগালকে। কিন’ তারপরও তৃতীয় গোলটি আদায় করে নেয় জার্মানি। গোলটিতে আলভেসের দায় কম নয়।
৪৫তম মিনিটে ক্রুসের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সঙ্গে লেগে থাকা মুলারের পায়ে তুলে দেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার ব্রুনো আলভেস। সুবর্ণ সুযোগটি হাতছাড়া করেননি বায়ার্ন মিউনিখ তারকা মুলার। নিখুঁত লক্ষ্যভেদে ব্যবধান আরো বাড়ান তিনি।
৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে গোল শোধ করতে নয়, নিজেদের রক্ষণ সামলাতেই তৎপর থাকতে হয় পর্তুগালের। চূড়ান- পর্বে ওঠার জন্য প্লে-অফ পেরিয়ে আসা দলটি তাকিয়ে ছিল দলের সবচেয়ে বড় তারকা রোনালদোর দিকে। কিন’ দ্বিতীয়ার্ধেও নিষ্প্রভই ছিলেন এই তারকা।
দশ জনের দলের বিপক্ষে নির্মম ছিল জার্মনরারা। একের পর এক আক্রমণ করে তারা ব্যতিব্যস- রাখে পর্তুগালের রক্ষণভাগকে।
দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানির প্রথম সুযোগটি আসে ৫১তম মিনিটে। একা পেয়েও গোলরক্ষককে পরাস- করতে পারেননি আর্সেনাল তারকা ওজিল। ফিরতি বল থেকে পেয়েছিলেন মুলার। কিন’ তার হেড বার উচিয়ে চলে গেলে হ্যাটট্রিকের সুযোগটি নষ্ট হয়ে যায়।
৬৯ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন গোটজে। শুরলের পাস বিপজ্জনক জায়গায় খুঁজে পেয়েছিল তাকে। বল নিয়ন্ত্রণে নিতে একটু দেরি করেছিলেন গোটজে। ততক্ষণে দুইজন ডিফেন্ডার চলে আসেন আর তার শটটিও চলে যায় বাইরে।
তবে ৭৮তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয়ে যায় মুলারের। আন্দ্রে শুরলের ক্রস ঠিকভাবে ফেরাতে পারেননি পাত্রিসিও। পায়ের কাছে গোলটি যেন সাজিয়ে দিয়েছিলেন পর্তুগালের গোলরক্ষক। সুযোগটি কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি মুলার। এই আক্রমণের শুরুটাও হয়েছিল পাত্রিসিওর ভুল কিক থেকে।
দেশের হয়ে ৫০ ম্যাচে এ নিয়ে ২০ গোল করলেন মুলার। গতবারের গোল্ডেন বুট জয়ীর বিশ্বকাপে রেকর্ড আরো দারুণ, ৭ ম্যাচে ৮ গোল।
মুলারের হ্যাট্রিকে বিধ্বস্ত পর্তুগাল
Tuesday, June 17, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment