কানাইঘাটে জমির দখল নিয়ে সংঘর্ষে ১১জন আহত

আমাদের সিলেট ডটকম:

বুধবার ভোররাতে কানাইঘাট পৌর এলাকার ডালাইচর মৌজায় জমির দখল পাল্টা দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মহিলা ও শিশুসহ ১১জন আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে টিন শেডের বসত ঘর ও আসবাবপত্র। আহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৭জনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

অবস্থিত বিরোধপূর্ণ বিটবাড়ী রকম প্রায় ৪০লক্ষ টাকা মূল্য এক খন্ড ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় সিলেট উত্তর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মহি উদ্দিন, শিক্ষানবিশ এ.এস.পি নাসরিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার মহি উদ্দিন কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরীকে বিরোধপূর্ণ এ ভূমি খন্ডটির চলমান মামলা আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন পক্ষই যাতে দখল করতে না পারে শান্তিশৃঙ্খলার লক্ষ্যে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়Ñডালাইচর মৌজায় প্রায় ১৭শতক জমির মালিকানা নিয়ে কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের চটিগ্রামের বাসিন্দা সিলেট এম.সি কলেজের প্রফেসর শাহজাহান কবির এবং বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র আলিম উদ্দিন বীন আলি রাজা গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। বিরোধপূর্ণ এ জমিসহ মোট ৩৬শতক জমি ডালাইচর গ্রামের নাছির উদ্দিনের গংদের কাছ থেকে দলিল মূলে খরিদ করেন চটিগ্রামের বাসিন্দা সিলেট জেলার সাবেক শিক্ষা অফিসার মৃত আব্দুর রহমান। উক্ত জমি খন্ডটি খরিদদারের পরিবারের দখলে ছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু উক্ত ভ‚মির ১৭ শতক জমি উত্তরাধিকার সূত্রে আলিম উদ্দিন বীন আলী রাজা তার দাদীর পৈতৃক সম্পত্তি দাবী করে জমির একাংশে টিনশেডের ঘর তৈরী করে কয়েক মাস ধরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দখল করে বসবাস করে আসছিলেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বার বার উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কানাইঘাট থানায় এবং সামাজিকভাবে বেশ কয়েকদফা বৈঠক হয়। কিন্তু কোন নিষ্পত্তি হয়নি। গতকাল বুধবার ভোররাত অনুমানিক ৫টার দিকে শাহজাহান কবিরের পক্ষের লোকজন আলিম উদ্দিন বীন আলীরাজার পরিবারের লোকজনকে তাড়িয়ে দিয়ে ভূমি খন্ডটি দখলমুক্ত করতে চাইলে দুপক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আলিম উদ্দিন বীন আলীরাজার পরিবারের সদস্য ফাতিমা বেগম (২৪), আমিনা বেগম (৩৫), আনিসুল হক (৬০), মাওলানা নিজাম উদ্দিন (৩০), মাওলানা শরিফ উদ্দিন (২৩), ১২ বছরের শিশু নাইমা বেগম, ৮ বছরের শিশু আশরাফুলসহ ১১জন আহত হন। আহত এ ৭জনকে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে একই পরিবারের ফরিদা বেগম (৩০), অপর পক্ষের আহত বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের বুরহান উদ্দিন (২৫) কে ওমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত একই পক্ষের নজরুল ইসলাম (২৮), শাহেদ আহমদ (৪০)কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দখল পাল্টা দখলের সময় টিন শেডের বসতঘর ও আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে কানাইঘাট থানা পুলিশ সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।