আমাদের সিলেট ডটকম:
গোয়াইনঘাটে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টি ও শনিবার বিকেলে আকস্মিকভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত,তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, অধিকাংশ এলাকার ফসলি জমি ও বীজ তলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারনে উপজেলা সদরের সাথে বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারীর সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গেল সপ্তাহে বন্যার কারনে তাদের রোপায়িত আমন ও বীজতলা তলিয়ে গেলেও গত বুধ বার থেকে এই এলাকার বন্যা পরিসি’তি কিছুটা উন্নতির দিকে ছিল। পাশাপাশি পানির নিচ থেকে জাগতে শুরু করে তাদের ফসলি জমি। হতাশা থেকে কিছুটা স্বসি- খুঁজে পেয়েছিলেন এসব এলাকার কৃষকেরা। কিন্তু শনিবার বিকেল থেকে আকস্মিকভাবে পিয়াইন ও সারী নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারনে উপজেলার নিম্নাঞ্চল গুলোতে পুনরায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও গতকাল সোমবার সকাল থেকে বন্যা পরিসি’তির আবারো অবনতি দেখা দিয়েছে। কৃষক শহিদুল্লা জানান, আমি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছথেকে ধার দেনা করে জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করে ছিলাম। কিন’ বন্যার কারণে রোপন করার কয়েকদিন পরেই তা তলিয়ে যায়। গত সপ্তাহে পানি কিছুটা কমতে থাকলেও (আজ) সোমবার থেকে পুনরায় পানি আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে দীর্ঘদিন পানির নিচে থেকে রোপায়িত সব ধানের চারা পচে যাবে। এখন নতুন করে বীজ বপন করে পুনরায় ধানের চারা রোপন করার সময়ও নেই। ফলে চরম দুশ্চিন-ায় রয়েছি। ঘরে ফসল তুলতে না পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে চলা কষ্ট স্বাদ্ধ হয়ে যাবে। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আনিছুজ্জামান বলেন, এই উপজেলায় রুপা আমন আবাদ করা হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর। আউস ধানের বীজ রোপন করা হয়েছে ৪ হাজার ২’শ হেক্টর এবং আমন বীজ করা হয়েছে প্রায় ১২’শ হেক্টর যার মধ্যে আজকের বন্যায় প্রায় ৭০% ভাগই রয়েছে পানির নিচে। তিনি বলেন বন্যা পরিসি’তির কিছুটা উন্নতি হলে উপজেলার সকল কৃষকদের বন্যা পরবর্তী করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হবে। এলক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সকল প্রকার ব্যবস’া গ্রহন করা হয়েছে। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টানা দু’সপ্তাহ যাবত উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারীর সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম জানান, পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং সরকারের বরাদ্ধকৃত ত্রান বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পৌছে দিয়েছি। পাশাপাশি উপজেলার প্রত্যকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে বন্যা পরিসি’তি প্রাথমিক ভাবে মোকাবেলা করে দ্রুত রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের রিপোর্টে অনুযায়ী ত্রাণ সহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহায়তা প্রধানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস’া নেওয়া হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখার সময় সোমবার বিকাল পর্যন্ত পিয়াইন ও সারী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ছবি ক্যাপশনঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এভাবেই প্লাবিত পিয়াইন নদী।
No comments:
Post a Comment