প্রোবনিউজ: জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক সহসাই দেশে ফিরছেন না। বর্তমানে তিনি ওমরাহ হজের জন্য সৌদি আরবে রয়েছেন। গত ১৭ই ডিসেম্বর তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। পরদিন রাজধানীর কলাবাগান থানায় করা ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়। আর তার অনুপস্থিতে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে (আইসিটি) জামায়াত নেতাদের মামলা পরিচালনায় বিপাকে আছেন জুনিয়র আইনজীবীরা। আবদুর রাজ্জাকের ঢাকা ত্যাগের পরদিন ১৮ই ডিসেম্বর রাজধানীর কলাবাগান থানায় করা ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় স্থানীয় জামায়াত কর্মীদের সঙ্গে তাকেও আসামি করা হয়। মামলার বাদী পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। কলাবাগান থানার ওই মামলা নম্বর: ৭/১৮ই ডিসেম্বর ২০১৩।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মোর্শেদ আলী জানান, গ্রিন রোডের জিনজিরা হোটেলের সামনে বোমাবাজি ও ভাঙচুর ঘটনায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৫০-৬০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের নামও রয়েছে। তদন্তে জানতে পেরেছি, ব্যারিস্টার রাজ্জাক সেদিন দেশে ছিলেন না। ভুলবশত তার নামটি আসামির তালিকায় দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী এ পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে টাঙ্গাইলে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। টেলিফোনে তিনি জানান, এ মামলায় কলাবাগান থানা জামায়াতের সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের নামটি বাদ দেয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে, রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারাধীন জামায়াত নেতাদের মামলা নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন জুনিয়র আইনজীবীরা। বিশেষ করে উচ্চ আদালতে আপিল বিভাগের মামলা পরিচালনায় দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে তাদের। এ প্রসঙ্গে কারাবন্দি জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ব্যারিস্টার রাজ্জাক অভিজ্ঞ আইনজীবী। আপিল বিভাগের মামলায় দক্ষতার সঙ্গে তার মত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। তাজুল ইসলাম দাবি করেন, ব্যারিস্টার রাজ্জাক যাতে মামলা পরিচালনা করতে না পারেন সে জন্যই পরিকল্পিতভাবে তাকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, দেশে এলে বিমানবন্দরেই তাকে আটক করা হতে পারে। আবদুর রাজ্জাক ঢাকা থেকে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখান থেকে যান লন্ডনে এবং সেখানেই অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ওমরাহ হজ করতে তিনি সৌদি আরব যান।। দলীয় সূত্রের দাবি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশ, মুসলিম দেশ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনে আইসিটি’র মামলা বিষয়ে তদবির চালাচ্ছেন।
এদিকে, আড়াই মাসেও দেশে না ফেরায় আবদুর রাজ্জাকের বিদেশ অবস্থান নিয়ে জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা থেকে কারাবন্দি নেতাদের বাঁচাতে আবদুর রাজ্জাক আন্তর্জাতিক মহলে লবিংয়ের জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, দেশে ফিরলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে। সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করার মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রও তৈরি করেছে। এ জন্য গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি শিগগির দেশে ফিরছেন না। এ প্রসঙ্গে আবদুর রাজ্জাকের জুনিয়র ব্যারিস্টার মোমেন জানান, ‘তিনি (আবদুর রজ্জাক) ব্যক্তিগত কাজে বিদেশে অবস্থান করছেন।’
রাজ্জাকের পুত্র ব্যারিস্টার ইমরান পিতার নামে করা মামলা প্রসঙ্গে বলেন, এটি যে মিথ্যা ও হাস্যকর মামলা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, আমার আব্বা ১৭ই ডিসেম্বর বিদেশে গেছেন। আর মামলা হয়েছে ১৮ই ডিসেম্বর। আমরা সত্যিই বিস্মিত। রাজ্জাক কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তার পুত্র।
সহসাই দেশে ফিরছেন না ব্যারিস্টার রাজ্জাক
Saturday, March 8, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment