মানবজমিন: প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বিতর্কিত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। পদত্যাগপত্র নিজ হাতে লিখে টাইপও করে রেখেছিলেন। কিন্তু বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীরা তাকে আরেকটু ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেন। তারা যুক্তি দেখান, পদত্যাগ করলে বিপদ হতে পারে। পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে এমন নিশ্চয়তাও নেই। যেমনটা হয়েছিল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বেলায়। এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে গিয়েও রেহাই পাননি। তার দলের অনেকেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন। কিন্তু তার নিজেরটা প্রত্যাহার হয়নি। এক পর্যায়ে তাকে হাসপাতালে বন্দি করে রাখা হয় অনেকদিন। নির্বাচনের পর শপথ নেবেন না এমন সিদ্ধান্তেও স্থির থাকতে পারেননি সাবেক এই স্বৈরশাসক। তাকে তখন বলা হয়েছিল মঞ্জুর হত্যা মামলা রায়ের জন্য প্রস্তুত। তাছাড়া তার ছেলে সাদের বিরুদ্ধে যে হত্যা প্রচেষ্টা মামলা রয়েছে তা আবার সচল হবে। উপায়ান্তর না দেখে এরশাদ এক সকালে সংসদ ভবনে গিয়ে শপথ নেন। মাঝখানে রওশন এরশাদ দলের নেতৃত্বে ভাগ বসান শক্তিশালী মহলের ইশারায়। যা কিনা এরশাদের ভাবনার মধ্যেও ছিল না। তার ধারণা ছিল, তিনি নির্বাচন থেকে সরে গেলে জাতীয় পার্টির কেউ সাহস করে ভিন্ন অবস্থান নেবে না। কিন্তু এরশাদের হিসাবে গোলমাল হয়ে যায়। নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা ব্যাহত হয়। এই অবস্থা পর্যালোচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলা হয়, পদত্যাগ করতে পারেন। তবে শেষ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে তার সঙ্গে তিনি মোটেই একমত নন। উপজেলা নির্বাচন যেভাবে শুরু হয়েছিল তাতে তার ধারণা ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হবে। সরকারি হস্তক্ষেপ তেমন হবে না। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে তিনি ঠিক করেন বাইরে থাকার। ওয়াকিবহাল নানা সূত্রের ধারণা, এ কারণেই তিনি নির্বাচন চলাকালে নজিরবিহীনভাবে দেড় মাসের ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে গেছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment