সিলেট সুনামগঞ্জ রোডে তিন যুগের পুরোনো গাড়ি,যাত্রীদের চরম ভোগান্তি;নীরব বিআরটিএ

Monday, June 9, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম: সিলেট নগরী থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুমারগাঁও বাস-স্ট্যান্ড। এই অঞ্চলের পুরনো বাস-স্ট্যান্ড এটি। সিলেট সুনামগঞ্জের লাখো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাস-স্ট্যান্ড হলেও সীমাহীন দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। তিন যুগের ফিটনেসবিহীন পুরনো বাস দিয়েই চলছে যাত্রী পরিবহন। যাত্রীবাহী অধিকাংশ বাস জরাজীর্ণ হলেও নিরব বিআরটিএ। বাস মালিক সমিতির নেতাদের অভিযোগ বড় অংকের টাকা নিয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তারা এসব জীর্ণ বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। প্রাচীন এই বাস-স্ট্যান্ডে নেই কোন যাত্রী ছাউনি, শৌচাগার। নেই যাত্রী উঠানামার পর্যাপ্ত জায়গা। দুজনের আসনে তিনজন যাত্রী, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রী উঠানামা করা, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগসহ অন্ত-হীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লাখো যাত্রী।

সোমবার সরেজমিন ওই বাস টার্মিনাল ঘুরে যাত্রী, ড্রাইভার ও বাস মালিক সমিতির নেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। যাত্রী সেবার মান, ফিটনেসবিহীন বাস আর দুর্ভোগ নিয়ে মালিক, ড্রাইভার ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া যায়। বাস মালিক সমিতির নেতারা সরাসরি দোষলেন বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসনকে। বিআরটিএ অবৈধ গাড়ীগুলোকে বৈধতা দিচ্ছে। আর পুলিশ প্রশাসন সিলেট সুনামগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রাইভারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাত্রী উঠানামার সুযোগ দিচ্ছেন। তাদের আরো অভিযোগ সিএনজি লেগুনা চলাচলের সীমা ১৫ কিলোমিটার এর মধ্যে বা নিজ জেলায় সীমাবদ্ধ থাকলেও পুলিশ চাঁদা নিয়ে তাদের যে কোন স্থানে যাতায়াতের সুযোগ দিচ্ছে। ফলে বাসের যাত্রী দিন দিন কমে যাচ্ছে। আর তাই বাস ড্রাইভাররা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রী উঠানামা করেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে বিরতিহীন বাসগুলোতে মাঝ পথে যাত্রী উঠানামার কোন নিয়ম না থাকলেও কেন এমন করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে বাস মালিক সিলেট বাস মিনিবাস সমিতির সেক্রেটারী রফিজ আলী বলেন, যাত্রীদের সেবা করার চিন্তা করে যাত্রী নামানোর নিয়ম আছে তবে উঠানোর কোন নিয়ম নেই। যদি কেউ উঠায় আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় থাকলে ড্রাইভাররা অনৈতিক কিছু করার সাহস পেতো না। প্রশাসনের সাথে ড্রাইভারদের অর্থ লেনদেনের কারণে ড্রাইভাররা ইচ্ছামতো কাজ করে থাকেন।

জানা গেছে, বাস মালিকরা প্রতি বছর সরকারকে ট্যাক্স, ফিটনেস, পারমিটসহ আনুষঙ্গিক প্রায় সাড়ে ১২ হাজার টাকা দিয়ে থাকেন। কিন্তু বিআরটিএ কর্তৃপক্ষসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যাত্রী সেবার মান নিয়ে উদাসীন। কথা হয় আব্দুল মালেক এর সাথে। তিনি সিলেট থেকে দিরাই যাবেন বলে বাসে উঠবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বাস স্ট্যান্ডের যে অবস্থা মনে হয় এসব দেখার কোন মানুষ নেই। তিনি বলেন, এক সময় অনেক যাত্রী বাসে যাতায়াত করলেও সেবার নিম্নমানের কারণে অনেকেই সিএনজি দিয়েই যাতায়াত করছেন। জুলেখা বেগম নামে অপর মহিলা যাত্রী জানান, লক্করঝক্কর বাস, বার বার বাস থামিয়ে যে দুর্ভোগ হয় মনে হয় হেঁটেই চলে যাই। তিনি বলেন, আমাদের জিম্মি করেই যা ইচ্ছা তাই করা হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন বাস কেন চালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে ড্রাইভার সমিতির কোষাধ্যক্ষ ফজর আলী বলেন, এটি বিআরটিএ ও মালিকদের দেখার বিষয়। আমরা বারবার বলেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। ফিটনেসবিহীন বাস কিভাবে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে এমন প্রশ্নে বিআরটিএ সিলেট এর এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর শহিদুল্লাহ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা গত সপ্তাহে মোবাইল কোটের্র মাধ্যমে অভিযান চালিয়েছি। মামলা দেয়া হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে ফিটনেস দেয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন টাকা নেয়ার প্রশ্নই উঠে না।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License