আমাদের সিলেট ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে সাত খুনসহ অসংখ্য গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত র্যাব সদর দপ্তরের দ্বিতীয় কর্মকর্তা কর্নেল জিয়াউল হাসানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সোমবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। রিজভী আহমেদ বলেন, বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মহানায়ক কর্নেল জিয়াউল হাসান। তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? আর কত মায়ের কোল খালি হবে? আর কত মানুষ নিঃশব্দ বেদনায় গুম খুনের ভয়ে দিনরাত্রি যাপন করবে?” বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইতিহাসের বর্বরোচিত নিষ্ঠুর ও পাশবিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে নারায়ণগঞ্জে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষ এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছে। তিনি বলেন, পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ‘জড়িতদের সম্পর্কে সব জেনেও চুপ ছিল র্যাব দেশবাসীর প্রশ্ন সব জেনেও র্যাব কেনো চুপ ছিল। তার কারণ হচ্ছে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে র্যাব সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্নেল জিয়াউল হাসান জড়িত, সাক্ষ্য প্রমাণে যা বেরিয়ে এসেছে। এছাড়াও জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতা ও নারায়ণগঞ্জের কথিত একজন গডফাদার। রিজভী বলেন, “ইতিমধ্যে সাত খুনের ঘটনায় জড়িত দুইজন ব্যক্তি মেজর আরিফ ও নৌবাহিনী সাবেক কর্মকর্তা এম এম রানা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে হুকুমদাতাদের নাম প্রকাশ করেছেন। যাদের নাম করেছেন তারা হলেন র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্নেল জিয়াউল হাসান এবং নারায়ণগঞ্জের কথিত এক গডফাদার। এ সংক্রান- সংবাদ অত্যন- ফলাও করে সব গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হয়েছে। এখন এ কথা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, অভিযুক্ত তিন জন র্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে হাইকোটের্র নির্দেশে। হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেই দেশবাসী খুনের পরিকল্পনাকারীদের নাম ও পরিচয় জানতে পেরেছে। তারা গ্রেফতার না হলে এই হত্যা রহস্য হয়তো বা রহস্য হয়েই থেকে যেতো। আসামিদের স্বীকারোক্তিতে কর্নেল জিয়াউল হাসানসহ যেসব নাম এসেছে সেসব ব্যক্তি এখন পর্যন- কোনো গ্রেফতার করা হচ্ছে না তার জন্য গোটা জাতি স-ম্ভিত।” রিজভী বলেন, “আমরা মনে করি, নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেফতার না করা ন্যায় বিচারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন ও রাষ্ট্রকে ব্যর্থ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয় । ন্যায় বিচারের স্বার্থে কর্নেল জিয়াসহ সব অপরাধীদের গ্রেফতার করার জোর দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপসি’ত ছিলেন-বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিনসহ অন্যান্য নেতাকর্মী। প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এরপর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়। মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর নূর হোসেন এখনও পলাতক রয়েছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment