বহিষ্কার ও গ্রেফতারে সন্তুষ্ট বিএনপি: ছাত্রদল ক্ষুদ্ধ;আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

Sunday, June 8, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে সিলেট মহানগর বিএনপি ঘোষিত রোববারের হরতাল কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে হরতাল স্থগিতের ঘোষণা দেন মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শহীদ তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডে আমাদের দাবী অনুসারে দোষী সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতাদের এজাহারভুক্ত আসামী করে মামলা রেকর্ডভুক্ত এবং অদ্য কলেজ কর্তৃক দোষীদের বহিস্কার করা হয়েছে। সর্বোপরি তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দোষিদের আবিলম্বে গ্রেফতারের ব্যাপারে প্রশসান আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ও কলেজ সভাপতি সৌমেনদেকে গ্রেফতার করায় রোববারের অর্ধদিবস হরতাল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হল।

ছাত্রদল নেতা হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মহানগর বিএনপি হঠাৎ হরতাল আহবান করা এবং হরতালের আগের দিন তা স্থগিত করার ঘোষণা নিয়ে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গণে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

অভিভাবক সংগঠন বিএনপি নেতাদের এহেন কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন এই ইস্যুতে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, অতীতেও ছাত্রদল নেতা খুন হওয়ার পর রক্তের ওপর বসে গুটিকয়েক নেতা আপোষরফা করেছেন প্রতিপক্ষের সঙ্গে। এবারও হয়তো সেই ধারাবাহিকতায় এগুচ্ছেন তারা। তবে, এবার খুনীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কারও কথা বা আশ্বাসে দমবে না।

সিলেট মহানগর বিএনপি হরতাল আহবান করার পর তা কি কারণে স্থগিত করা হলো-সে বিষয়টি বুঝতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির জেলা ও মহানগর কমিটির কয়েকজন নেতা।

তাদের মতে, সিলেট মহানগর বিএনপির গুটি কয়েক নেতা আলোচিত হতেই এই হরতাল আহবান করেন। কিন্তু হরতাল আহবানের পর তা বাস্তবায়ন বা পালনের ক্ষমতা না থাকায় সরকার দলীয় নেতাদের সঙ্গে আপোষরফা করে তা স্থগিত করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট মহানগর বিএনপির পদবিধারী এক নেতা বলেন, যারা ২০ সদস্যের কমিটির সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে বসতে পারে না তারা আবার কিভাবে হরতাল পালন করবে এটা বুঝতে পেরেই হয়তো কর্মসূচি থেকে সরে এসেছে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আসলামুল ইসলাম রুদ্র জানিয়েছেন, বিএনপির কর্মসূচির দিকে তাদের তাকানোর সময় নেই। তৌহিদ হত্যাকারীদের সবাই গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলবে।

তিনি বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রধর্মঘট পালিত হবে। ওইদিনই খুনি আসামীদের গ্রেফতারে নতুন ও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল নেতাকর্মীদের আমি বলে রেখেছি- এ আন্দোলন করতে গিয়ে যদি আমার মৃত্যুও হয়; তারপরও যেন আন্দোলন থেমে না যায়। সবাই কথা দিয়েছে- খুনীদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবে না।’

তিনি বলেন, ছাত্রদলের আন্দোলন ও আল্টিমেটামের কারণেই ওসমানী কলেজ কর্তৃপক্ষ শনিবার হত্যা মামলার ১০ আসামিসহ ১১জনকে কলেজ থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও তার পূর্বনির্ধারিত সিলেট সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনও হত্যা মামলার প্রধান আসামি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি সৌমেন দেকে গ্রেফতার করেছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪৯তম ব্যাচের ৪র্থ বষের্র ছাত্র তৌহিদুল ইসলামকে নগরীর পুরাতন মেডিকেল কলেজ কলোনি সংলগ্ন আবু সিনা ছাত্রবাসে ডেকে নিয়ে ১০০৩ নম্বর কক্ষে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তৌহিদুল ইসলামকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে ছাত্রদল। এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার নিহতের চাচা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা (মামলা নং-৪) দায়ের করেন। মামলায় মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি সৌমেন দেকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে দিনে ওসমানী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ সৌমেনসহ মামলায় এজাহারভূক্ত ১০ আসামিকে কলেজ থেকে বহিস্কার করে।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License