রিমান্ডে নিলে নিতে হবে খালেদা ও তারেককে : প্রধানমন্ত্রী

Saturday, June 14, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান হত্যার ঘটনায় কাউকে রিমান্ডে নিতে হলে তাঁর স্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ছেলে তারেক রহমানকে নিতে হবে।

সমপ্রতি চীন সফরের বিষয়বস-ু তুলে ধরতে গণভবনে গতকাল শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে সংলাপের কথা বলেছেন, আবার তাঁর ছেলে মালয়েশিয়ায় জিয়া হত্যার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীকে রিমান্ডে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এ মন-ব্য করেন। তিনি বলেন, ‘মা বলে সংলাপ চাই, বেটা বলে আমাকে রিমান্ডে নিতে।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মুশতাকের হাতে সেনাপ্রধান হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী খুনিদের তিনি দেশের বাইরে দায়িত্ব দিয়েছেন, দূতাবাসে চাকরি দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী উল্টো খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি প্রশ্ন করেন, ‘স্বামীর লাশ কেন দেখতে চাননি? ছেলে আজ বড় কথা বলছে, বাপের মুখ দেখতে চেয়েছে? রহস্য কী? জিয়া হত্যার মামলা চট্টগ্রাম কোর্টে, বিএনপির কেউ মামলা চালাচ্ছে? এই বিচার কেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় করল না? খুনের মামলা এখনো আছে। খুনের মামলা তামাদি হয় না।’

শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘খালেদা জিয়া তিন তিনবার ক্ষমতায় থাকলেন, তারেক ব্যবসা করল, বাপ হত্যার বিচার করল না। আজ বলে রিমান্ডের কথা।’ তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া এরশাদকে তাঁর স্বামীর হত্যাকারী বলেন। তাহলে কেন তাঁর কাছ থেকে দুটি বাড়ি, গাড়ি, নগদ টাকা নিলেন? রহস্য কী?’

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮১ সালে তিনি যখন দেশে ফেরেন, জিয়াউর রহমান ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে তাঁকে ঢুকতে দেয়নি। তিনি জিয়াকে ‘খুনি’ উল্লেখ করে বলেন, ‘বাবার খুনির কাছ থেকে আমি কেন বাড়ি নিতে যাব?…তাঁরা তো নিয়েছেন। তাঁদের তো লজ্জা হয়নি, রিমান্ডে নিলে নিতে হবে মা-ছেলেকে।’

সংলাপের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ করব? তারা শত শত মানুষ হত্যা করেছে। সেই প্রাণ ফেরত দিতে পারবে? বহু সম্পদ ধ্বংস করেছে।’ তিনি বিএনপিকেই বরং কী করতে চায় তা ঠিক করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আগে তারা ঠিক করুক, কী করবে?’

চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চীন সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক দিয়ে সার্বিকভাবে এই সফর সফল হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, চীন ও বাংলাদেশ মধ্যে ২০ দফা ইসে-হার ও ৬টি দলিল সই হয়।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এই লক্ষ্য অর্জনে চীনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে আমার সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতি হল-সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। জনগণের কল্যাণে যা প্রয়োজন তাই করবে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী চীন সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে ঘোষণা দিয়ে তিনি এ ব্যাপারে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন। সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। চীন বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চান। এ ক্ষেত্রে যার যার অবস’ান থেকে অবদান রাখতে সবার সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা না- এই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। সে হিসেবে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অগ্রগতিতে যারা এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে, বাংলাদেশ তাদের সহযোগিতাই নেবে।

জাপান না চীন- কাকে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করার সুযোগ দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে দ্রুত গভীর সমুদ্রবন্দর করে দেবে, তাদের সহযোগিতা নেব।’

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই নির্মাণ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে লক্ষ্য করে এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো টার্গেড হয়ে আছি। তদন্তে কিছু পায়নি বলে এখন কথা বলতে পারছে না। ব্যক্তিগত লাভের জন্য আমরা কাজ করি না।’





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License