সিলেটে সংবাদ সম্মেলন: ছাতকে একটি পরিবারের প্রতারণার ইতিবৃত্ত

Thursday, September 11, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছৈলা গ্রামে মাদরাসা ও এতিমখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচানার নাম করে একটি পরিবার দেশে-বিদেশে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। একই সাথে গ্রামবাসীর বির্বদ্ধেও ওই পরিবারের সদস্যরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছাইম উলৱাহ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- ঐতিহ্যবাহী ছৈলা গ্রামের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুফতি আব্দুল অদুদ লতিফি ওরফে আইম উলৱাহ ও তার বড় ভাই বারিক উলৱাহ মাদরাসা ও এতিমখানাসহ বিভিন্ন শিৰাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং গ্রামের গরিব লোকদের সাহায্যের কথা বলে দেশ-বিদেশে চাঁদাবাজি করছেন। এ লৰ্যে তারা গ্রামে ২০০৯ সালে ৮ শতক জায়গা ক্রয় করে সেখানে বসতঘর নির্মাণ করেন। কিছুদিন পর ঘরটির সামনে সেঁটে দেন ‘ছৈলা হাফিজিয়া এবতেদায়ী এতিমখানা ও দাখিল মাদরাসা’ নামফলক। গ্রামের কারো সাথে কোনো পরামর্শ না করে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী তারা নামফলকে ছৈলা গ্রামের নামও ব্যবহার করেন। এরপর থেকেই শুর্ব হয় লতিফি পরিবারের চাঁদাবাজি। একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের নাম করে তারা দেশ-বিদেশে তুলতে থাকেন লৰ লৰ টাকা। আর এ টাকা দিয়ে একে একে তারা চারটি বাড়ি ও গাড়িসহ গড়ে তুলেন সম্পদের পাহাড়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- মাওলানা লতিফি ও তার ভাই বারিক উলৱাহ’র চতুরতার কারণে বিষয়টি প্রথমদিকে গ্রামবাসীর নজর এড়ালেও এক পর্যায়ে তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন স’ানে আলোচনা-সমালোচনা শুর্ব হয়। গত রমজান মাসে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস’ানরত আব্দুল অদুদ লতিফি সেখানে বসবাসরত সিলেট অঞ্চলের লোকজনসহ দেশের বিভিন্ন স’ানের প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে থাকেন। বিষয়টি ছৈলা গ্রামের অন্যান্য প্রবাসীদের নজরে এলে তারা গ্রামের নাম ব্যবহার করে টাকা না তুলতে লতিফিকে অনুরোধ করেন। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটি যথাযথভাবে চালানোর ইচ্ছা থাকলে গ্রামের সব প্রবাসীর সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন। কিন’ তাদের পরামর্শকে পাত্তা না দিয়ে এরপরও মাওলানা লতিফি তার কর্মকা- অব্যাহত রাখেন। এদিকে গ্রামবাসীর এ পরামর্শের বিষয়টি সর্বমহলে জানাজানি হলে লতিফি বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে থাকেন। এক পর্যায়ে ভাটা পড়ে তার চাঁদাবাজিতে। আর এ বিষয়টি তিনি গ্রামের বাড়িতে থাকা বড় ভাই বারিক উলৱাহকে অবগত করেন এবং কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে গত ১৫ জুলাই মাদরাসা ও এতিমখানায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তখন রমজান মাস থাকায় গ্রামের সহজ-সরল কিছু মানুষকে ইফতারের কথা বলে সেখানে দাওয়াত করা হয়। কিন’ এক পর্যায়ে বিষয়টি আগত ব্যক্তিদের কাছে রহস্যজনক বলে ধরা পড়লে অনেকেই এর প্রতিবাদ করেন এবং ইফতার না করেই সেখান থেকে চলে যান।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রাম ও গ্রামবাসীর বির্বদ্ধে কটুক্তিমুলক বক্তব্য দেওয়া হলে পরদিন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়। এতে বিব্রতকর অবস’ায় পড়েন গ্রামের লোকজন। ফলে পরবর্তী শুক্রবার জুমআর নামাজ শেষে গ্রামবাসীর পৰ থেকে আব্দুল বারিকের কাছে ওই সংবাদ সম্মেলন ও কটুক্তির কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি প্রেসের ভুল বলে দায়সারা জবাব দেন। এসময় গ্রামের মুরব্বিরা এ ধরণের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি মাদরাসার নামে চাঁদাবাজি না করার আহবান জানান। কিন’ এতে কর্ণপাত না করে বারিক উলৱাহ মসজিদ ত্যাগ করেন। গ্রামবাসীর কোনো কথা না মানায় মুফতি লতিফি ও বারিক উলৱাহ কর্তৃক গ্রামের সুনাম নষ্ট করা ও তাদের অবৈধ কার্যক্রমের প্রতিবাদে গত ১১ আগস্ট গ্রামবাসীর উদ্যোগে স’ানীয় শাহী ঈদগাহ মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। ওই সমাবেশের সচিত্র সংবাদ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে সর্বমহলে তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়। তাদের এসব অপকর্মের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় খেপে ওঠেন লতিফি ও বারিক উলৱাহ। তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তাদের মাদরাসা ও এতিমখানা বিষয়ে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য পরিবেশনের পাশাপাশি গ্রামবাসীর বির্বদ্ধেও মিথ্যাচার করতে থাকেন। এ ব্যাপারে বারিক উলৱাহকে আবারও পঞ্চায়েতের পৰ থেকে ডাকা হলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে চলে যান। ফলে অবশেষে বাধ্য হয়ে পঞ্চায়েতের পৰ থেকে বারিক উলৱাহ’র পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করার সিদ্ধন্ত হয়। কিন’ দুঃখের বিষয়- বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ক’দিন ধরে এ বিষয়টি নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিমুলক তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব সংবাদের কোনো কোনোটিতে বলা হয়- ‘ছৈলা গ্রামে ২ মাসে পঞ্চায়েতের বাদ ৩৮ পরিবার’, ‘১৫ দিন ধরে ১০ পরিবার একঘরে’। আর বারিক উলৱাহই নিজ স্বার্থ হাসিলের লৰ্যে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপসি’ত ছিলেন- মাস্টর গোলাম রব্বানী, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালিক, আবুল হোসেন, মো. ছাইফ উদ্দিন, মো. ইমরান আহমদ চৌধুরী মোহন, কাজী রফিকুল ইসলাম চৌধুরী তছিল, আফলু মিয়া, আব্দুস শহীদ, রজিবুর রহমান প্রমুখ।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License