মানবজমিন:গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের পদ থেকে ডা. ইমরান এইচ সরকারকে অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছে মঞ্চের একাংশের সংগঠকরা। গতকাল শাহবাগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। তবে ডা. ইমরান পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, সরকার মঞ্চের কার্যক্রমকে স্তব্ধ করে দিতে চায় বলেই একের পর এক ঘটনা ঘটছে। এদিকে জাগরণ মঞ্চের পৃথক অংশ আলাদা কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে। গতকাল দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ৫ জন সংগঠকের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের প্রচার কমিটির সদস্য ও মঞ্চের সংগঠক কামাল চৌধুরী পাশা। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠক ও গৌরব ’৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন, হাবিবুল্লাহ মেজবাহ, আশারুল হক রুমি, আসিফ কামরুজ্জামান সাগর। লিখিত বক্তব্য পাঠকালে কামাল পাশা বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবহনকারী এ দেশের প্রতিটি মানুষের। তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের এখন পর্যন্ত কোন সাংগঠনিক রূপ নেই। তবে শিগগিরই এর সাংগঠনিক রূপ দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কামাল আরও বলেন, কয়েকজন মানুষ ঢাকায় বসে কর্মসূচি দিলে তা সবসময় সমগ্র দেশের জনমানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে সমর্থ হয় না। সেটি হয়ওনি। তিনি বলেন, ব্যক্তি বিশেষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতে গিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ আরও খানিকটা বিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়েছে। দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে নিশ্চিত করার পক্ষে যারা কাজ করেছেন ক্রমে ক্রমে তাদের দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গত ৩রা এপ্রিল মঞ্চের কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে নিজেরা নিজেদেরই হামলা করে সেই হামলার দায়ভার চাপানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে অন্য একটি সহযোগী সংগঠনকে। যা মোটেও ঠিক হয়নি। রাজনৈতিক বক্তব্য ও কর্মসূচি দেয়া গণজাগরণ মঞ্চের কাজ নয় উল্লেখ করে কামাল পাশা বলেন, এটি মঞ্চের চেতনার সঙ্গে যায় না। সংবাদ সম্মেলনে কামাল পাশা কিছু সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বিতর্কিত হয়ে যাওয়ার কারণে ডা. ইমরান এইচ সরকারকে সাময়িকভাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র থেকে অব্যহতি দেয়া হলো। এই মুহূর্ত থেকে তার কোন বক্তব্য ও কর্মসূচি গণজাগরণ মঞ্চের বক্তব্য ও কর্মসূচি বলে গৃহীত হবে না। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি মুখপাত্র প্যানেল সম্মিলিতভাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিগগিরই এ প্যানেলের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে। কামাল আরও বলেন, অন্তর্বর্তী টিম মঞ্চের খসড়া গঠনতন্ত্র তৈরি করবে- যা দেশের মঞ্চের কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। এ লক্ষ্যে শিগগিরই একটি কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। মঞ্চের সঙ্গে সংহতি প্রকাশকারী সংগঠনের নাম প্রকাশ করা হবে এবং ৬ দফার ভিত্তিতে মঞ্চ পরিচালিত। এসময় তিনি আগামী ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর দিবস পালনের কর্মসূিচ ঘোষণা করেন। ওই দিন বিকালে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বলেও তিনি জানান। কিসের ভিত্তিতে ডা. ইমরানকে মুখপাত্র থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো জানতে চাইলে কামাল পাশা বলেন, যেভাবে তিনি মুখপাত্র হয়েছেন সেভাবেই তাকে অব্যহতি দেয়া হলো। আগে আপনাদের মঞ্চে দেখা যায়নি- এমন মন্তব্যে কামাল বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আগে মিডিয়ার সামনে আসিনি। নিজেদের গণজাগরণ মঞ্চকে আসল দাবি করে তিনি বলেন, আমরা মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সব সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি। সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে ছাত্র সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে আসেননি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ১৮ই এপ্রিল এ বিষয়ে সবাই মিলে সংবাদ সম্মেলন করবো। তবে আলোচনার কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বলেন, মুখপাত্রকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আমরা এর পক্ষেও নই। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কামাল পাশার এ ব্যাপারে কোন কথা হয়নি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment