আমাদের সিলেট ডটকম:
বড়লেখায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ব্লাড গ্রুপিংয়ের নামে অবৈধ বাণিজ্য এবং হেপাটাইটিস-বি ভ্যাক্সিন প্রদানের অভিযোগে স্বনির্ভর সোনার বাংলা লিমিটেড নামক একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের ৪ ভুয়া সনদধারী টেকনোলজিস্ট ও প্রোগ্রাম অফিসারকে আটক করে পুলিশ। পরে ওপর মহলের চাপে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটককৃতরা হচ্ছে স্বনির্ভর সোনার বাংলা লিমিটেডের সমন্বয়কারী আব্দুল গফুর, কামরুজ্জমান, কথিত মেডিকেল টেকনিশিয়ান ইব্রাহীম হোসাইন ও সালমিন হোসেন।
এ চক্রটি উপজেলার তিন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছিল। এর আগে ১০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বনির্ভর সোনার বাংলা লিমিটেড নামে একটি কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আলমগীর হোসনে তৃণমুল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও রক্তের শ্রেণী নির্ণয়ের অনুমতি প্রদানে শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনে মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর নিয়ে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শরণাপন্ন হয়। ইউএনও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পরামর্শক্রমে পরবর্তী উদ্যোগ নিতে সংস্থাটির সমন্বয়কারী কামরুজ্জমানকে বলেন। কিন্তু ফিস আদায়ের বিষয়টি স্পষ্ট না করে ৮ মার্চ থেকে স্বনির্ভর সোনার বাংলা লিমিটেড নামক ওই এনজিও প্রতিষ্ঠান বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রক্তের গ্র“প নির্ণয় এবং হেপাটাইটিস-বি ভ্যাক্সিন প্রদানের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৩০ টাকা করে ফি নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো। ১০ মার্চ চান্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে রক্তের শ্রেণী নির্ণয় কার্যক্রম চলাকালে কিছু অভিভাবকের সন্দেহ হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনের তৎপরতায় তা বন্ধ হয়। গতকাল ৬ এপ্রিল দুপুরে বড়লেখার আর কে লাইসিয়াম স্কুলে ব্লাড গ্র“পিংয়ের সময় অভিভাবকরা তাদের বাধা প্রদান করে বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচওকে অবহিত করেন। টিএইচও হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ল্যাব এর কর্মকর্তা সুলতান আহমদ ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জসিম উদ্দিনকে ঘটনাস্থলে পাঠান। ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ল্যাব এর কর্মকর্তা সুলতান আহমদ তাদের কাগজ পত্র দেখে নিশ্চত হন যে, তারা ভুয়া সনদে এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে ও অবৈধভাবে অর্থ আদায় করছে।
বড়লেখা হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ল্যাব কর্মকর্তা সুলতান আহমদ জানান, রক্তের গ্র“প পরীক্ষার জন্য যারা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের দায়িত্ব পালন করে আসছেন, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস ও তার কম, এমনকি তাদের কারও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে সনদ পত্র নেই। প্রথমত তারা যে অনুমতি নিয়ে এসেছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমাদের হাসপাতাল প্রশাসন জানে না। এছাড়া যিনি টেস্ট করেন তাকে টেকনোলজিস্ট হতে হবে। তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী হতে হবে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান অনুষদ কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্ত হতে হবে। তাদের সেই রকম কোন কাগজপত্র নাই। সঠিক কাগজপত্র না থাকায় আমরা তাদেরকে আটক করি। পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। আর.কে লাইসিয়াম স্কুলের অভিভাবক সদস্য কামরান চৌধুরী জানান অযোগ্য-অদক্ষ ভুয়া সনদধারী টেকনিশিয়ান দ্বারা রক্তের গ্র“প নির্ণয়ের কাজ তাদের চোখে পড়ায় তারা চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. আজিম উদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রক্তের গ্র“প নির্ণয় এবং হেপাটাইটিস-বি ভ্যাক্সিন প্রদানের নামে অর্থ আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসেম জানান, তাদেরকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার জন্যওপর মহল থেকে ফোন আসে। তাই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউএনও সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুর রহমান জানান মন্ত্রী, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর দেখে সেবামূলক কাজ ভেবে তাদের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু ত্রিশ টাকা নেয়ার বিষয়টি জানা নেই।
বড়লেখায় ব্লাড গ্রুপিং বাণিজ্য ৪ ভুয়া টেকনোলজিস্ট আটক কিছুক্ষণের মধ্যেই মুক্তি
Sunday, April 6, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment