আমাদের সিলেট ডটকম:
নগরীর রায়নগর প্রত্যয়-৬ এর ভাড়াটে ঠেলাগাড়ি চালক দিনমজুর ইদ্রিস মিয়া ও নুরজাহান বেগমের কন্যা কাজী জালাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শারমিন আক্তার গত মঙ্গলবার এশার নামাজের সময় পাশবিক হামলার শিকার হয়ে বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)-এ চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে এশার নামাজ চলাকালীন সময়ে শারমিন আক্তার তার পিতার সাথে পার্শ্ববর্তী দোকানে যাওয়ার সময় রায়নগরস’ প্রত্যয়-৪ নিবাসী আলতাব মিয়ার বখাটে ছেলে নাঈম অন্ধকারে পেছন থেকে অতর্কিত হামলা করে মুখে কাপড় গুঁজে শারমিন আক্তারকে তুলে তার ঘরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বেশ কিছুৰণ ধ্বস্তাধ্বস্তি করে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তাকে মেরে ফেলতে উদ্যত হয় এবং বেধড়ক মারপিট করে। শারমিনের উপর এ অমানবিক নির্যাতনে নাঈমকে সহায়তা করেন তার মাতা এবং ভাই ফাহিম। পরে শারমিনের আর্তচিৎকার শুনে তার বাবা-মা প্রতিবেশীদের সহায়তায় শারমিনকে গুর্বতর অসুস’ অবস্থায় নির্যাতক নাঈমের ঘর থেকে উদ্ধার করে রাত ১১টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)-এ চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে, পাশবিক হামলা ও নির্যাতনের শিকার দরিদ্র দিনমজুর পিতা-মাতার সন্তান স্কুলছাত্রী ভিকটিম শারমিন আক্তারকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো (বিএইচআরবি) সিলেট’র নেতৃবৃন্দ। বিএইচআরবি সিলেট বিভাগীয় সভাপতি ও দৈনিক সিলেট সংলাপ সম্পাদক মুহাম্মদ ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের সিলেট জেলা সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ মো. মঈন উদ্দিন চৌধুরী, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার হক ইম্মুল হামিদ, সিলেট মহানগর কমিটির নির্বাহী সদস্য ইজাজুল হক ইজাজ এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৯, ২০ ও ২১ নং ওয়ার্ড’র সংরৰিত আসনের কাউন্সিলর শামীমা স্বাধীন ও নারী সংগঠক রেহানা আক্তার শিরীন প্রমুখ।
ভিকটিম শারমিন আক্তার ও তার মাতা নুরজাহান বেগম বিএইচআরবি নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ করেন, বখাটে নাঈম গত মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে পাশবিক হামলা ও নির্যাতনের পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে শারমিনকে উত্যক্ত করতো। মঙ্গলবার এশার নামাজের সময় অন্ধকারে রাস্তা থেকে অতর্কিত হামলা করে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। কিন’ ব্যাপক ধ্বস্তাধ্বস্তির কারণে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে নাঈম তাকে হত্যা করতে উদ্যত হয় এবং বেধড়ক মারপিট শুর্ব করে। শারমিনের উপর অমানবিক নির্যাতন ও মারপিট থেকে ছেলেকে বিরত না করে উল্টো মারপিটে শরিক হন তার মাতা ও ভাই। ভিকটিম ও তার পরিবার এহেন পাশবিক হামলা এবং নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ মানাবাধিকার ব্যুরো (বিএইচআরবি) সিলেট’র নেতৃবৃন্দ পাশবিক হামলা ও নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রী শারমিন আক্তারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং তাকে বিএইচআরবি’র পৰ থেকে আইনি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। তারা এহেন ন্যক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সংস্লিষ্ট কর্তৃপৰের দ্র্বত ও কার্যকর পদৰেপ কামনা করেন।
No comments:
Post a Comment