আমাদের সিলেট ডটকম: সিলেটে ‘বিশুদ্ধ’ খাবার পানির নামে বাজারজাত হচ্ছে ভেজাল ও ব্যাকটরিয়াযুক্ত নোংরা পানি। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভেজাল পানির ব্যবসা করে আসার পর এবার নড়েচড়ে বসেছে বিএসটিআই। দুই-দফা অভিযান চালিয়ে তারা ৫টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। তবে এরপরও থেমে নেই প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা দিয়ে আবারও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। একবছর আগে এসব প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভূক্ত করে বিএসটিআই ও আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী সংগঠন আইএসও’র নির্দেশনা অনুসরণ করে পানি বাজারজাতকরণের নির্দেশ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা তা মানছেন না। সিলেট জেলার ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ করে বিএসটিআই’র ছাড়পত্র নিয়েছে। বাকিগুলো শর্ত পূরণ না করলেও পানি বাজারজাতকরণ অব্যাহত রয়েছে।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়- সিলেট জেলায় শাফি ড্রিংকিং ওয়াটার, পিয়াস, সুরমা, রয়েল, মিলাদ, আবে হায়াত, আল জালাল, জমজম, শাহজালাল, সিলেট ড্রিংকিং, রিফ্রেশ ড্রিংকিং, হামহাম ও তৃষ্ণা নামক প্রতিষ্ঠান খাবার পানি বাজারজাত করছে। এর মধ্যে কেবলমাত্র নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে বিএসটিআই’র ছাড়পত্র নিয়েছে শাফি ড্রিংকিং ওয়াটার। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর পানির ‘জার’-এ শতভাগ বিশুদ্ধ ও ব্যাকটেরিয়া মুক্ত লিখা থাকলেও বিএসটিআই কর্মকর্তারা বলছেন এই পানি মোটেই সুপেয় ও মানসম্পন্ন নয়। সিটি কর্পোরেশনের সরবরাহকৃত ও ডিপ-টিউবওয়েল দিয়ে উত্তোলিত পানি ব্যাকটেরিয়া মুক্ত না করেই জার ভর্তি করে তা বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে এসব পানি জারের মধ্যে ৩-৪ দিন থাকার পরই দুর্গন্ধ হয়ে পড়ে।
বিএসটিআই সূত্র আরো জানায়- আইএসও গাইড-৬৫ অনুযায়ী কারখানার মান উন্নীত করতে না পারায় ২০১২ সাল থেকে বিএসটিআই পানি বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ করে দেয়। আইএসও গাইড-৬৫ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে পানি-ভর্তি ও জার পরিষ্কারের জন্য স্বয়ংক্রিয় মেশিন, সার্বক্ষণিক কেমিস্ট অথবা মাইক্রোবায়োলজিস্ট নিয়োগ, প্রতিদিন কারখানার শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা, প্রিমিসেস সনদ, বিডিএস ও মোড়কজাতকরণ বিধিমালা অনুযায়ী মূদ্রিত লেবেল জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু এসব শর্ত পূরণ করতে না পারায় সিলেটের ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টির লাইসেন্স নবায়ন করেনি বিএসটিআই।
এ ব্যাপারে সিলেট ড্রিংকিং ওয়াটার ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মিলাদ আহমদ সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার বড় বড় কোম্পানিগুলো বিএসটিআইকে ম্যানেজ করে রেখেছে। তাই তারা আমাদের লাইসেন্স নবায়ন করছে না। তবে লাইসেন্স নবায়ন না করলেও আমাদেরকে কারখানা বন্ধেরও নোটিশ দিচ্ছে না বিএসটিআই।
বিএসটিআই সিলেট অফিসের উপ পরিচালক রেজাউল হক সাংবাদিকদের জানান,যে ১২টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন হয়নি তাদেরকে পানি বাজারজাত না করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সিলেটে ‘বিশুদ্ধ পানি’র নামে চলছে ভেজাল ব্যবসা ১৩ প্রতিষ্ঠানের ১২টি লাইসেন্স বাতিল
Monday, May 26, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment