সিলেটে অটোরিক্সা চালককে পিটিয়ে হত্যাঃ সিসিক কাউন্সিলকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা

Friday, May 30, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

পেশায় অটোরিক্সা চালক সিলেট সদর উপজেলার লালবাগের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে জালাল আহমদ। দরিদ্র পরিবারে সুখ শান্তি ফিরিয়ে আনতে কিস্তিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা কিনেন তিনি। আর এ কিস্তিই কাল হলো তার। কিস্তির টাকা পরিশোধ করাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের মা ফাতেমা খাতুন বাদী হয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমসহ ৪ জনের নামোলেৱখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন ও আদালতে অবহিত করার জন্য বিমানবন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বিমানবন্দর থানার ওসি মোঃ শাহ জামান বলেন, শুক্রবার ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশক্রমে লাশ উত্তোলন করা হবে। এছাড়া, মামলা সংস্লিষ্টদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ নেওয়া চলছে। তদন্তে কাউকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা গেলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সিলেট সদর উপজেলার লালবাগের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে জালাল আহমদ ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কিস্তিতে একটি অটোরিক্সা ক্রয় করেন। সাময়িক আর্থিক অসুবিধার কারণে কয়েকটি কিস্তি আটকা পড়লে চলতি বছরের ১৩ মার্চ কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের মধ্যস’তায় এ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। এ অনুযায়ী জালাল কিস্তির টাকা পরিশোধ করে আসছেন। কিন’ কিস্তির টাকা কাউন্সিলরের অন্যতম সহযোগি আবদুল হান্নানসহ অন্যদের হাতে না দেওয়ায় গত ১৬ এপ্রিল চৌকিদেখী সুগন্ধা রেস্টুরেন্টের সম্মুখ থেকে জালালকে অপহরণ করে ৩ নম্বর গলির ভেতরে চা-বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে জালালকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুর্বতর আহত করে ফেলে যায় হান্নানসহ অন্যরা। এ সময় স’ানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই গলির সামনে অবস্থানরত হামলাকারীরা বাধা দেয়। এ সময় জালালের সহযোগি আরেক অটোরিক্সা চালক আহত অবস’ায় তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে পৌছে দেয়। পরদিন কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার সহযোগিরা জালালের বাড়িতে গিয়ে আহত জালালকে কোনো ধরণের চিকিৎসা কিংবা আইনগত ব্যবস’া নিলে জালালের পরিবারের অপর সদস্যদের অপহরণ করে লাশ গুম ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের হুমকি দেন। ফলে বিনা চিকিৎসায় ২০ এপ্রিল গভীর রাতে জালাল মৃত্যুবরণ করেন। জালালের মৃত্যুর ২দিন পর কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফরহাদ শামীম নিহত জালালের পিতা গিয়াস উদ্দিনকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে পুত্রের মৃত্যু সংক্রান্ত ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য শাসিয়ে দেন। এছাড়া মুখ বন্ধ রাখার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা দেন। পাশাপাশি হান্নানসহ অন্যদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়ার কথা বলেন কাউন্সিলর।

গত ১৫ মে নিহত জালালের পরিবার বিমানবন্দর থানায় এ ব্যাপারে মামলা করতে চাইলে থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় গত বুধবার আদালতে মামলা করা হয়।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License