আমাদের সিলেট ডেস্ক : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা অতি উঁচু গলায় বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে নির্মম আক্রমণ চালিয়ে, রক্ত ঝরিয়ে নিজেদের নেত্রীকে খুশি করছেন তাদের সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ৭২-৭৫ এ যারা শেখ মুজিবুর রহমানের গুণকীর্তন করতেন তাদের অনেকেই তাঁর লাশ ডিঙ্গিয়ে খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভাসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত থাকার শেষ দিন পর্যন্ত খন্দকার মোশতাক মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তাজউদ্দিন আহমদ সাহেবকে ৭৪ সালেই মন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। অথচ তাজউদ্দিন সাহেব নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধী ছিলেন না।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। ৯ জুন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন-জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হতো। এটাতো সবাই জানে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজেকে রাষ্ট্রের সব শক্তির উপরে ক্ষমতাশালী করে তুলেছেন। তাই উনি যখন যা মনে করেন সেটাই করতে পারেন। সেখানে আইন, বিচার, সাক্ষ্য, প্রমাণ, তদন-, জনমত কিছুই দরকার পড়ে না। তবে আমরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই-জিয়া হত্যার নেপথ্য ঘাতক ও ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় প্রকাশ পেলে আরো অভিযোগ উঠবে ভবিষ্যতে। জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে ভারতের একটি পত্রিকা ডেইলি সানডেতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। সেখানেও কিন’ জনমনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেন আপনি বাংলাদেশে ঢোকার ১৩ দিনের মাথায় জিয়াউর রহমান খুন হলেন? আর সেদিন আপনি বোরকা পরে বাংলাদেশের একটি সীমান্তে উপস্থিত হয়ে সীমান্তু পাড়ি দিতে চাচ্ছিলেন, কেনো? কোনো সত্য কখনোই ঢাকা দেয়া যায় না এবং সত্য কখনো অতীত হয় না।
আওয়ামী লীগকে অনাচারের দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রক্তারক্তি, হত্যা, গুপ্তহত্যা ও ভোট ডাকাতিতে গভীরভাবে বিশ্বাসী একটি দল। ভোটদাতারা যেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারেন সে ব্যবস্থাই করছে দলটি। এরা গণতন্ত্র বলতে বোঝে কেবল নিজেদের খেয়ালখুশি মতো স্বাধীনভাবে দাপিয়ে বেড়ানোকে।
সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের সময় দুর্নীতির বিষাক্ত জীবাণু আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় সেসব কর্মকাণ্ড শিরোনামও হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিশেষ করে র্যাব আজ শিশুদের ঘুম পাড়ানোর ভয়ঙ্কর বর্গিতে পরিণত হয়েছে।
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই নির্বাচনেও গায়ের জোরে নিজেদের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। নলডাঙ্গা বাসুদেবপুর বাজারে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়েছে। এতে বিএনপির প্রার্থীর বেশ কয়েকজন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন। সেখানে স্থানীয় প্রশাসন প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে চারদিকে মানুষের ধিক্কার উঠেছে। চাকরি বাঁচানোর জন্য দেশের শীর্ষ আমলারা যে কত নিচে নামতে পারেন, নির্বাচন কমিশন তার একটি উৎকৃষ্ট নমুনায় পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে সরকার এমন একটি চুম্বক যে, সরকার যেদিকে ঘোরে, নির্বাচন কমিশনের কাঁটাও সেদিকেই ঘোরে।
তিনি বলেন, জনগণের ওপর আক্রমণ চালিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়ে কন্ট্রাক্ট কিলিং চালিয়ে আওয়ামী ছোট-বড় ও পাতি নেতারা মনে করছে এইভাবে বিএনপিকে বিলুপ্ত করা যাবে। এরকম রক্তাক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেও তারা অতীতে চেষ্টা করে দেখেছেন, ফলে কী পরিণতি হয়েছিল তা দেশবাসী জানে।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এ নিপীড়ক ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করবোই ইনশাল্লাহ। কারণ এ সরকার অবৈধ, অন্যায়কারী, জুলুমবাজ, লুটেরা ও বিভৎস গুপ্তঘাতক। পৃথিবীতে কখনোই অনাচারকারী, অপকর্মকারী, অনির্বাচিত এবং বিরোধীদলের রক্তে রঞ্জিত দাম্ভিকরা টিকে থাকতে পারেনা।’
শেখ হাসিনার কাছে রিজভীর প্রশ্ন – আপনি বোরকা পরে বাংলাদেশের একটি সীমান্তে উপস্থিত হয়ে সীমান্তু পাড়ি দিতে চাচ্ছিলেন, কেনো?
Saturday, June 7, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment