আমাদের সিলেট ডটকম : দীর্ঘ ৭ বছর পর সিঙ্গাপুরে মায়ের সাথে সাক্ষাৎ হচ্ছে জিয়া পরিবারের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর। থাকছেন বড় ভাই তারেক রহমানও। সেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ ও নাতনীরাও থাকবেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। মা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে এরইমধ্যে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো। সূত্র জানিয়েছে, মায়ের সঙ্গে দেখা করতে রাতে মালয়েশিয়া থেকে সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন এই দুই ভাই। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন মায়ের প্রিয় কিছু উপহার সামগ্রীও। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পুরো পরিবার মিলিত হতে যাচ্ছে। শনিবার রাতে সিঙ্গাপুরে ঘটবে এই পারিবারিক পুনর্মিলনী। আগামী মঙ্গলবার (১০ জুন) তারেক কোকোর মালয়েশিয়া ফেরার কথা রয়েছে। মালয়েশিয়া বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শনিবার রাতে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে আগে থেকেই। জিয়া দম্পতির বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সোমবার মালয়েশিয়া এসে পৌঁছেছেন। আর আগে থেকেই মালয়েশিয়ায় ছিলেন ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো। দুই ভাই সাক্ষাতের আনন্দে কেঁদেছিলেন, এবার সেই দৃশ্যের অবতারণা সিঙ্গাপুরে আরও বড় পরিসরে ঘটবে বলেই অনুমান সবার। কারণ, সেখানে এতো বছর পর এক মা তার সন্তানদের একসঙ্গে দেখবেন। দুই সন্তানও একসঙ্গে তাদের মায়ের সান্নিধ্য পেতে যাচ্ছেন। অবশ্য এর আগে সবার একসঙ্গে দেখা না পেলেও আলাদা করে ছেলেদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন খালেদা। চিকিৎসার জন্য বিদেশ সফরগুলো তিনি মূলত সন্তানদের কাছে পাওয়ার তাগিদেই করেছেন বলে অনেকের অনুমান। এছাড়া বিএনপি সূত্র জানায়, গত বছরই সিঙ্গাপুরে এই পুনর্মিলনী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময়ের পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি। তখন শাশুড়ির সঙ্গে পুত্রবধূদের সাক্ষাতের খবরই প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। এবার তাই অনেক গুছিয়ে বেশ সময় নিয়ে ৩জনের এই সাক্ষাৎ সূচি তৈরি করা হয়েছে বলে মন-ব্য এক নেতার। ভিন্ন সূত্র জানায়, ভারতে নির্বাচনের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে এসেছে বলে দলটির নেতারা মনে করছেন। তাই পরিবারটিও নতুন করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করছে। সেই পরিকল্পনা সূচারু করতেই এই মিলনমেলা বলেও ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই সাক্ষাতে পরিবারের সদস্যদের মনোবল চাঙ্গা হবে ও দলীয় কিছু ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা। সূত্র জানায়, তারেক চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া এসেছেন বলে প্রচার করা হলেও মূলত এই পুনর্মিলনীর পরিবেশ তৈরিই ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেফতার হন তারেক রহমান। একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান কোকো। সেই বছরেরই ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। সেই থেকে তারেক লন্ডনে স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে বসবাস করছেন। এরপর লন্ডন থেকে তিনি বেরও হয়েছেন বিভিন্ন কারণে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে বলে দাবি করে তার দল। এছাড়া তিনি সেখানে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করছেন বলেও দাবি তাদের। অন্যদিকে, একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থাইল্যান্ড থেকে মালয়েশিয়ায় চলে আসেন কোকো। সেই থেকে এখানেই তার অবস’ান। তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, কন্যা জাফিরা রহমান ও জাহিয়া রহমানও এবারের পুনর্মিলনীতে থাকছেন বলে অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়। এই সময়ের মধ্যে কোনো প্রয়োজনে তিনি মালয়েশিয়া ছেড়েছেন কিনা নিশ্চিত খবর পাওয়া যায় না। দুই ভাই দেশের বাইরে থাকলেও দেশে রয়েছেন মা খালেদা। ওয়ান-ইলেভেনে গ্রেফতার হওয়ার পর কারাভোগ করেছেন তিনি। বের হয়ে আবারও দলের ভার পুরোপুরি নেন খালেদা। মাঝে মাঝে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যান তিনি। কখনো আবার সৌদি আরবেও যান পায়ের চিকিৎসা নিতে। এছাড়া রাজনৈতিক প্রয়োজন ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্ক উন্নয়নে বিভিন্ন দেশে যান তিনি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment