বিশ্বনাথ থানায় পুরাতন গাড়ি নিলামের জের ধরে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার বিকেলে বিশ্বনাথ থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় উত্তেজিত ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা থানায় ওসি’র রুমের জানালার গ্লাস ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, বিষয়টি নিস্পত্তি করতে থানায় গিয়ে ওসি’র সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজম্মিল আলী। এ সময় ওসি রফিকুল হোসেন সভাপতিকে ধমক দিয়ে কথা বলেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি মজম্মিল আলী ওসি’র অপসারণ দাবি করেছেন।
অন্যদিকে উশৃংঙ্খল পরিস্থিতির কারণে স্থগিত করা হয়েছে ‘গাড়ি নিলাম’ কার্যক্রম। তবে গাড়ি নিলামের জন্য স্থানীয় কিংবা জাতীয় কোন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, রোবিবার নয়টি মোটর সাইকেল, একটি লাইটেস, একটি প্রাইভেটকার, একটি অটোরিকসা ও একটি বেবিটেক্সি বিক্রি করার জন্য উন্মুক্ত ভাবে নিলাম আহবান করা হয়ে ছিল। এজন্য সিলেট থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটও (চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান চৌধুরী) আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গাড়ি নিলামে অংশগ্রহন করার জন্য সাধারণ জনতার সাথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহন করে। এ সময় দুটি গাড়ি সরিয়ে রাখার অভিযোগ এনে খোঁজ করেন নেতারা। এসব বিষয় নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় পেছন থেকে এক যুবলীগ নেতাকে থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজান ধাক্কা দেন। বিষয়টি নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় থানার উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এরপর এসময় থানার ওসি নিজ কার্যালয়ে ছিলেন। ওসি নিজ কার্যালয়ে আসলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজম্মিল আলী তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। এ সময় দু’জন বিষয়টি নিয়ে উত্তেজিত হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে যায়। এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা থানার ভিতরে বিক্ষোভ করতে থাকে ও ওসির রুমের একটি জানালার গ্লাস ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করছেন।
রোববার রাত ৯টায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সূত্রে জানা যায়।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফয়জুল ইসলাম জয় বলেন, গাড়ি নিলাম হওয়ার সংবাদ শুনে থানায় যাই। কিন্তু ভাল কয়েকটি গাড়ি থানার ওসি গোপনে অন্য জায়গায় বিক্রি করেন। এলাকাবাসী এর কারণ জানতে চাইলে পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে। আমাদের উপর আনিত অভিযোগ সঠিক নয়।
নিলাম কার্যক্রম স’গিত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) টিপু সুলতান বলেন, থানায় উপসি’ত থাকা ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের নির্দেশে থানার এএসআই মিজান থানার কমপাউন্ডে ভিতরে থাকা জনতা ও সরকারি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে হৈ চৈ না করে বাইরে যাওয়ার জন্য বলে। আর নিলাম বন্ধ করার জন্য তারা (যুবলীগ-ছাত্রলীগ) মিজানের সাথে এসময় তর্কে লিপ্ত হয়ে বিশৃংঙ্খলতার সৃষ্টি করে। এ সময় থানার একটি জানালার গ্লাস ভাংচুর করেছে তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজম্মিল আলী বলেন, পরিসি’তি নিয়ন্ত্রনে আনতে অতিথের মতো এবারও সহযোগীতা করার জন্য আমি এগিয়ে গেলে ওসি আমাকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেন। বিষয়টি শুনতে পেরে সেখানে উপসি’ত থাকা সাধারণ জনগণ উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে পুলিশ অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জনতাকে ধাওয়া করে। এতে অনেকেই আহত হয়েছে। নিজেরাই জানালার গ্লাস ভাংচুর করে এর দায় দিচ্ছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের উপর। আমরা বিশ্বনাথবাসী অবিলম্বে এই ওসির অপসারণ দাবি করছি।
বিশ্বনাথ থানার ওসি রফিকুল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
অতিরিক্ত ডিআইজি শাখাওয়াত হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গাড়ি নিলামের জন্য স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিধি আছে। তবে নোটিশের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়েও নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।
বিশ্বনাথে টেন্ডার নিয়ে পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : থানায় ভাংচুর
Sunday, January 26, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment