দিল্লির কাছে বাজার হারাচ্ছে ঢাকা, এপারে সাহসী সিদ্ধান্ত ওপারে নতুন গার্মেন্ট

Friday, February 14, 2014

মানবজমিন: গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউজ খবর ছেপেছে হতাশাজনক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের যখন গার্মেন্ট পোশাক তৈরির অর্ডার হাতছাড়া হচ্ছে, কোথাও কারখানা বন্ধ হচ্ছে, তখন ভারতে নতুন গার্মেন্ট কারখানা স্থাপনের ধুম পড়েছে। এ খবর দেখে কেউ কেউ প্রয়াত সাংবাদিক নির্মল সেনের একটি লেখা স্মরণ করতে পারেন। কারণ বিএনপি আমলে আদমজী পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে নির্মল সেন নিবন্ধ লিখেছিলেন ‘এপারে সাহসী সিদ্ধান্ত ওপারে নতুন পাটকল’। ওই সময় আদমজী বন্ধের সিদ্ধান্তকে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছিল, সাহসী সিদ্ধান্ত। অথচ নির্মল সেন তথ্য দিয়েছিলেন, ওইসময়ে পশ্চিমবঙ্গে বিপুলসংখ্যক নতুন পাটকল খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল আদমজী বন্ধের ফলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হবে তা পূরণ করবে পশ্চিমবঙ্গ।


দি নিউজে মনমসুর আহমেদের লেখা প্রতিবেদনে তথ্য আছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ এবং অন্য কারণে চীন থেকে গার্মেন্ট অর্ডার স্থানান্তর ঘটতে চলেছে। এটা যাতে পাকিস্তান বা অন্যত্র না যেতে পারে, আমদানিকারকদের কাছে ভারতই হয়ে ওঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয় সে কারণে ভারতের সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। এর আগে চীনে শ্রমের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম লাভবান হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ গার্মেন্ট নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক দেখা দেয়ায় আমদানিকারকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

পাকিস্তান হোসিয়ারি এসাসিয়েশেনের চেয়ারম্যান শাহজাদ আমজাদ খান বলেছেন, ভারত এটাকে একটি বিরাট সুযোগ হিসেবে দেখছে। সে কারণে ভারত এ মুহূর্তে ৫০টি ইন্টেগরেটেড টেক্সটাইল পার্কস (আমাদের ইপিজেডের মতো) একযোগে স্থাপন করার কাজ দ্রুত শেষ করতে চাইছে। ২০০৯-২০১০ সাল থেকে এটা তারা শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ১২ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন রুপি ব্যয় করেছে। ব্যাংক ঋণ দিতে দেরি করছিল বলে সরকার নিজেই মঞ্জুরি নিয়ে এগিয়ে এসেছে।

২৬টি পার্কে ৫৯২টি ছোট ও বড় আকারের অপারেশনাল ইউনিট বসানোর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব পার্ক নয়টি রাজ্যে বিস্তৃত রয়েছে। এবং এর সবগুলোই বিশ্বমানের। এসব শিল্প ইউনিট প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে বিদেশী ক্রেতাদের পোশাক তৈরি করে দেবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজার নির্ভর। মোট পোশাক রপ্তানির অর্ধেকের বেশি যায় যুক্তরাষ্ট্রে। সে দেশটির সিনেটের শুনানিতে গত ১১ই ফেব্রুয়ারি রানা প্লাজা ও তাজরীন কাণ্ডের দেশ হিসেবে চিহ্নিত বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখ্যান করা হয়। সেখানে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি গৌণ ছিল। কিংবা আদৌ কোনও ইস্যু ছিল না। অথচ সরকারের মন্ত্রীরা জিএসপি ফিরে পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টিকে সামনে এনেছেন। জিএসপির আওতায় বাংলাদেশ সামান্যই রপ্তানি করে থাকে। জিএসপি প্রতীকী বিষয়। সিনেট শুনানির বিষয় ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও গার্মেন্টস খাত আলোচনা। এখন তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ আমেরিকাকে বলছেন, ড. ইউনূস ও ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন মুখে আনবেন না। এসব বাদ দিতে পারলে জিএসপির শর্ত পুরা করতে পারবো। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরকার ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এবং ৫ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়। সুতরাং, সামনের দিনগুলোতে ভারতসহ অন্যান্য দেশে আরও নতুন পার্ক বসতে পারে। যারা বাংলাদেশের শূন্যস্থান পূরণের অন্তত প্রবণতা দেখাবে।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License