পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে ঢাকার সাব্বির এখন দোয়ারাবাজারে

Sunday, February 9, 2014

আমাদের সিলেট ডকটম:

সাব্বির আহমদ (৯), ঢাকা জয়দেবপুর কওমী মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। মাদরাসায় যাবার পথে পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে সে এখন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বালিউরা বাজারের ব্যবসায়ী আবু জাফরের আশ্রয়ে রয়েছে। ৪দিন পেরিয়ে গেলেও ছেলেটির পরিবারের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা।

ছেলেটির বর্ণনামতে ধারণা করা হচ্ছে, পাচারকারী চক্র হয়তো তাকে লুকিয়ে রেখে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপন দাবি করার চেষ্টা করেছিল। আর সেখান থেকে সে কৌশলে পালিয়ে এসে অজানার পথে পাড়ি জমিয়েছিল।


রোববার সরেজমিন আশ্রয়দাতার বাড়ীতে গিয়ে শিশু সাব্বিরের কাছ থেকে শোনা গেল লোমহর্ষক বর্ণনা। সে জানায়, তার বাবা জামাল উদ্দিন বেচে নেই, মা ডাঃ বেবী বেগম (এফএম) স্থানীয় জয়দেবপুর রেলষ্টেশনের নিকটবর্তী বেবী ফার্মেসীর স্বত্তাধিকারী। জয়দেবপুর এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের ৪২০ নম্বর কৰে ভাড়ায় থাকেন তার মা বেবী বেগম। তার দুই ভাই পৃথক বাসায় ভাড়ায় থাকে। ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার সে মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাদরাসা ছুটির পর বিকেলে ফের মাদরাসায় যাবার পথে ১০-১২ জন কালো মুখোশদারী লোক তাকে ধাওয়া করে। এসময় সে দৌড়ে ট্রেনে উঠে পড়ে। ট্রেনের দরজা বন্ধ করে কাঁদতে থাকে সাব্বির। মুখোশদারীরা ফের তাকে ধাওয়া করলে ট্রেনে ওঠার পর সে আর কিছুই বলতে পারেনি। ৫দিন অনাহারে থেকে অজানার পথে পাড়ি জমায় সে। গত মঙ্গলবার ছাতক রেল ষ্টেশনে ট্রেনের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা ওই ছেলেটিকে উদ্ধারকারী আবু জাফরের ছেলে মো. আবু ইউসুফ দেখতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাবে। সে তখন বিহবল হারিয়ে বলতে থাকে মাদরাসায় যাবে। কোন মাদরাসায় যাবে সে আর কিছুই বলতে পারেনা। তখন আশ্রয়হীন ওই ছেলেকে নিয়ে আসেন বাসায়। একাধারে দুদিন ঘুমানোর পর সে পুরো ঘটনা খুলে বলে। সে জানায়, তার বাবা মৃত জামাল উদ্দিন মৃত্যুর আগে তারা স্বপরিবারে তার নানার বাড়ী ময়মনসিংহের আউশকোনা এলাকায় থাকতেন। ২০১১ সালে মা বেবীবেগম জয়দেবপুর এলাকায় ফার্মেসী খুলে ওষুধ ব্যবসা শুর্ব করেন। তার বড়ভাই সজিবের জয়দেবপুরে একটি ইলেক্ট্রিক দোকান রয়েছে। আরেক ভাই রাশেদ জয়দেবপুরে একটি ফ্যাশন দোকানে কাজ করে বলে জানায়। রেলষ্টেশন থেকে তার মায়ের ফার্মেসী ও মাদরাসায় যেতে রিকশায় ২০ টাকার ভাড়া লাগে।

আশ্রয়দাতা আবু জাফর বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার ট্রেনে সিলেট থেকে ছাতকে আসে আবু ইউসুফ। এসময় ট্রেন থেকে সবাই নেমে পড়লেও ছেলেটি নামেনি। এসময় ছেলেটিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে কোথায় যাবে বললে সে বলে মাদরাসায় যাবে। কোন মাদরাসায় যাবে বলতে না পারায় তাকে বাসায় নিয়ে আসেন আবু ইউসুফ। একাধারে দুদিন ঘুমানোর পর সে মুখোশদারীদের কাছ থেকে পালিয়ে ট্রেনে ওঠেছে বলে জানায়। ছেলের দেয়া বর্ণনামতে জয়দেবপুর এলাকায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যাযনি।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License