আমাদের সিলেট ডটকম:
গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর চা বাগানে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সিলেট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম ও আরডিসি মো. মনির হোসেনের নেতৃত্বে ফতেহপুর চা বাগানে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মিনহাজ উদ্দিন ও তানভীরের বসত ঘর ধ্বংস করেন উচ্ছেদ অভিযানের দায়িত্বশীলরা।
অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপসি’ত ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, বাগানের জেনারেল ম্যানেজার জুনায়েদ চৌধুরী, ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কল্যাণব্রত চৌধুরী, সার্ভেয়ার জীবন চন্দ্র দাস, এসআই হাবিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, মনোয়ার হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মিজানুর রহমান, আক্রাম হোসেনসহ উপস্থিত ছিলেন শতাধিক পুলিশ সদস্য।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কল্যাণব্রত চৌধুরী বলেন, সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত চা বাগানের ভূমিতে দীর্ঘদিন থেকে ভূমি খেকো ফতেহপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর ৬ষ্ঠ খন্ড গ্রামের মৃত হাজী মদরিছ আলীর পুত্র মিনহাজ উদ্দিন ও একই গ্রামের মৃত মিছবাহ উদ্দিনের পুত্র তানভীর আহমদ ৩১ একর ৮০ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বসত বাড়ী তৈরী সহ কোটি টাকার গাছ গাছালি নির্বিচারে বিক্রি করছে। বাগানের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্তে আসার একমাত্র রাস্তাটি দখল করে বন্ধ করে দেওয়ায় বাগানে উৎপাদিত প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা মূল্যের কাচা চা পাতা সংগ্রহ ও সরবরাহ করতে না পারায় তা শুকিয়া সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চা বাগানের লীজ গ্রহীতা ওসমান গণি প্রাইভেট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াছিন ওসমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমাদের তপশীল অফিস থেকে মিনহাজ ও তানভীর আহমদ বরাবরে একাধিকবার নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এতে কর্নপাত না করায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আজকের এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার জোনায়েদ চৌধুরী বলেন, ফতেহপুর চা বাগানে ৫২১ একর ভূমি রয়েছে কিন্তু মিনহাজ ও তানভীর প্রায় ৩১ একর ৮০ শতক ভূমি সহ প্রধান রাস্তাটি দখল করে নেওয়ায় আমাদের কোম্পানী শুধুমাত্র কাচা চা পাতা সংগ্রহ ও আদান প্রদানে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় ২০১০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কোম্পানীকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে যোগযোগ করতে আজকের এই অভিযান পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছি।
অপরদিকে, দখলদার মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ১৯৫৬ সাল থেকে আমরা উক্ত দাগ ও খতিয়ানে ১১২ একর ভূমির রেকর্ডিও মালিক। কিন্তু বর্তমানে তানভীর সহ আমাদের দখলে ৪৫ একর ভূমি ছিল। অভিযান পরিচালনা করে আমাদের বসতবাড়ী ভেঙ্গে ফেলায় প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, চা বাংলাদেশের রপ্তানী আয়ের অন্যতম উৎস। চা শিল্পকে বাঁচাতে আমরা বদ্ধ পরিকর। তাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অনুরোধে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস, থানা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিদেরকে নিয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম ও আরডিসি মো. মনির হোসেন বলেন, ফতেহপুর চা বাগানে স্থানীয় প্রভাবাশালীরা অবৈধভাবে সরকারী সম্পত্তির প্রায় ৩১ একর ৮০ শতক ভূমি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছিল এবং চা বাগান পরিচালনায় বাঁধা প্রদান করে জাতীয় আয়ের অন্যতম এ উৎস্যকে বন্ধের ধারপ্রানে- নিয়ে এসেছিল। ওসমান গণি প্রাইভেট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াছিন ওসমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে একাধিকবার সংশ্লিষ্টদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রশসানিক কর্মকর্তাদের নিকট হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও সংশ্লিষ্টরা কর্ণপাত করেনি। ফলে ওসমান গণি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস’াপনা পরিচালকের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি উচ্ছেদ মামলা রুজু করা হয় এবং অবৈধভাবে দখলীয় মিনহাজ উদ্দিন ও তানভীর‘র বসত ঘর অভিযানের মাধ্যমে তা ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে গত ২/৩ দিন পূর্বে এলাকার ভুমিহীন লোকজন উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে ও সুষ্ঠু সুন্দর ভাবে বসতের লক্ষ্যে সিলেট প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে।
ফতেহপুর চা বাগানে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান
Friday, January 10, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment