জলাবদ্ধতা নিরসনের স্বার্থে সিটি কর্পোরেশনকে লালাদিঘীরপাড়ে কোটি টাকা মূল্যের ভুমি দান করছে একটি পরিবার

Tuesday, January 7, 2014

আমাদের সিলেট ডটকম:

সিলেট নগরীর ছড়ার প্রবাহ নিশ্চিত করার স্বার্থে এবার লালাদিঘীরপাড়ের একটি পরিবার তাদের মালিকানাধীন প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জায়গা সিটি কর্পোরেশনকে দান করার সম্মতি দিয়েছেন। মঙ্গলবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ লালাদিঘীরপাড় এলাকার মুরব্বীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঐ বাসিন্দা তাদের সম্মতি প্রকাশ করেন। দাতা এই পরিবারের সদস্যরা হলেন লালাদিঘীরপাড় (কলকাকলী ৩৩) নিবাসী আব্দুর রহমান আবুল ও তার ভাই আকবুল হোসেন। মঙ্গলবার বাদ আসর তাদের বাসায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


স্থানীয় এলাকাবাসী ও সিটি কর্পোরেশন সুত্রমতে, সিলেট নগরীর বিলপাড় ও ভাতালিয়া এলাকার পানি বসুখাল ছড়া হয়ে লালদিঘীরপাড় ডোবায় এসে মিশেছে। এই ডোবা থেকে পানি কুয়ারপাড়-শেখঘাট হয়ে গাভীয়ার খালে প্রবাহিত হয়। কিন্তু লালাদিঘীরপাড়ের ডোবার জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ার এই ডোবা দিয়ে সঠিকভাবে পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়েছিল। অবশেষে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে নগরবাসীর স্বার্থে ভুমির মালিকদ্বয় ছড়ার প্রবাহ নিশ্চিত করার স্বার্থে পর্যাপ্ত জায়গা দিতে সম্মতি প্রকাশ করেন (মিউনিসিপালিটি মৌজা, জেএল নং ৯১, দাগ নম্বও ৮৭৬)।


এই ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, এই জমি প্রদানের কারণে এই এলাকার পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যার সমাধান হলো। পানির প্রবাহ নিশ্চিতকরণের জন্য ভুমির মালিকের ১৫/১৬ শতক জায়গা সিটি কর্পোরেশনকে দিয়ে দিচ্ছেন, যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা।

ভুমির মালিক আব্দুর রহমান আবুল ও আকবুল হোসেন জানান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুরোধে সাড়া দিয়েই তারা এই ভুমি দান করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তারা বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে সিলেট নগরবাসী বিশেষ করে লালাদিঘীরপাড়-কুয়ারপাড় এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই ভুমির মাধ্যমে লালাদিঘীরপাড়-কুয়ারপাড়সহ সিলেট সিটির মানুষ যদি উপকৃত হন, তাহলেই তাদের এই দান পূর্নতা লাভ করবে। দাতা পরিবারের মহিলা সদস্য সালেহা বেগম ও আফসানা হোসেন জানালেন, এর আগেও তারা মাদ্রাসাসহ জনকল্যানমূলক কাজে ভুমি দান করেছেন। তারা বলেন, এই পৃথিবী থেকে সবাইকে একদিন যেতে হবে। অগাধ সম্পদ নিজেদের মধ্যে না রেখে সেই সম্পদ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যদি কারো উপকার করা যায়-সেই দৃষ্টিকোন থেকেই তারা ভুমি দান করেছেন।


সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই পরিবারের দানকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যায়িত করে বলেন, সিলেটবাসী যে বিশাল হৃদয়ের অধিকারী এই পরিবার তা আবার প্রমান করলেন। তিনি বলেন, অতীতেও আমি উন্নয়ন করতে গিয়ে সিলেটবাসীর অকুন্ঠ সমর্থন পেয়েছি। এবারও ছড়া ও খালের প্রবাহ নিশ্চিত করতে গিয়ে জনগনের কাছ থেকে স্বত:ফুর্ত সহযোগিতা পাচ্ছি। তিনি বলেন, জনগন বুঝতে পেরেছেন – ছড়া ও খাল উদ্ধার হলে শুধু এই প্রজন্মের জন্যে নয়, আগামী প্রজন্মের জন্যেও তা কাজে লাগবে।


স্থানীয় মুরব্বী হাজী আব্দুল কাদিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: সিকন্দর আলী, সংরৰিত ৪ আসনের কাউন্সিলর আমেনা বেগম র্বমি, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মতিন, বিশিষ্ট সমাজসেবী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট, হাজী সৈয়দুল হক, নজর্বল ইসলাম, বানা সিংহ, তেরা মিয়া, আফছর আজিজ, আব্দুস সামাদসহ আরও অনেকে।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License