মিজানুর রহমান | মানবজমিন:
নির্বাচন-পূর্ব টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানতে ডিসেম্বরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন ৫৩ রাষ্ট্রের জোট কমনওয়েলথ-এর মহাসচিব কমলেশ শর্মা। এবার নির্বাচন-পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হতে চান তিনি। এ জন্য শিগগির সরকার প্রধানকে টেলিফোন করবেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ওই কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে কমলেশ শর্মা বাংলাদেশের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচন ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার সংস্থার মূল্যায়ন ও অবস্থান তুলে ধরেছেন। তাগিদ দিয়েছেন একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের। এমন নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে কমনওয়েলথের সহায়তারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে এমন নির্বাচন প্রত্যাশা করেছেন তিনি যেখানে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছা এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক নীতি-আদর্শ পুরোপুরি প্রতিফলিত হবে। বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মুখে অনুষ্ঠিত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মতো কমনওয়েলথও পর্যবেক্ষক পাঠানো থেকে বিরত থাকে। ভোট গ্রহণের নির্ধারিত তারিখের বেশ আগেই মহাসচিব তাদের নেতিবাচক সিদ্ধান্তের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেন। ভোট গ্রহণের পর বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থার পাশাপাশি কমনওয়েলথের তরফে একটি প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হয়। খোদ মহাসচিব সেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সেখানে আরও অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্বের বিষয়টি উল্লেখ করে তা অনুষ্ঠানের জোর তাগিদ দেন। দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও প্রক্রিয়ার উন্নতি, স্বাধীনভাবে জনগণের মত প্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং আইনের শাসনসহ যেসব বিষয়কে কমনওয়েলথ অত্যন্ত মূল্য দেয় সে বিষয়গুলোর উন্নয়নে সহায়তার ঘোষণা দেন মহাসচিব। গত ৩রা ফেব্রুয়ারি কমনওয়েলথ সচিবালয়ের মুখপাত্র রিচার্ড উকু আরেকটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানেও আগাম নির্বাচনের জন্য অর্থবহ রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ দিয়েছে কমনওয়েলথ। ওই নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে সার্বিক সহায়তা দিতে কমনওয়েলথ প্রস্তুত উল্লেখ করে মহাসচিব বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাছাকাছি সময়ে ঢাকায় পৌঁছা কমলেশ শর্মার চিঠিতে নির্বাচন-পরবর্তী বাংলাদেশ পরিস্থিতি কমনওয়েলথ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে উল্লেখ করা হয়, পরিস্থিতির এমন পর্যায়ে শেখ হাসিনা সরকারের বাইরের বন্ধুদের সহায়তা কল্যাণে আসবে। মহাসচিব আশা করেন, এ অবস্থা কাটিয়ে উঠে সরকার একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য ওই সিদ্ধান্তে পৌঁছা জরুরি বলেও উল্লেখ করেন মহাসচিব।
No comments:
Post a Comment