মানবজমিনঃ পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান দাবি করেছেন, সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লা ‘নির্দোষ’ ছিলেন। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্র্যকর হওয়া এ নেতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগসমূহ গঠন করা হয়েছিল, সেগুলোও মিথ্যা ছিল বলে দাবি করেন তিনি। পাকিস্তানের দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের অনলাইন ভার্সনে ইমরান খানের এ মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এসব মন্তব্য করেন। ইমরান খান বলেন, কাদের মোল্লা নির্দোষ এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহও ছিল মিথ্যা। পিটিআই’র চেয়ারম্যান জানান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘রিপ্রীভ’ এর এক আইনজীবী, যিনি কাদের মোল্লার পক্ষে আইনি লড়াই করছিলেন, তিনিই তাকে বলেছেন মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় ওই নেতা নির্দোষ ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকা পতনের বিষয়টি উল্লেখ করে তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান বলেন, সেই ট্র্যাজেডি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সব সমস্যার সমাধান গণতান্ত্রিক পন্থায় হওয়া উচিত, সেনা অভিযানের মধ্য দিয়ে নয়। পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্যের কারণে কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতীয় পরিষদে। তার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাবটি পাসও করা হয়েছে। পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য শের আকবর খান এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ওই প্রস্তাবে কাদের মোল্লার ফাঁসিতে বাংলাদেশের জনসাধারণ ও তার শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনাও প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটির ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের বিষয়গুলো পুনরায় জাগিয়ে তোলা উচিত হবে না বাংলাদেশ সরকারের। একই সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সব সমস্যা নিষ্পত্তি করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়। সরকারি দল মুসলিম লিগ (এন) ওই প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেয়। ওই প্রস্তাবে আরও সমর্থন জানায় তেহরিক-ই-ইনসাফ, আওয়ামী মুসলিম লিগ, পাকিস্তান মুসলিম লিগ (কায়েদে আজম) ও জামিয়াতে-উলমা-ইসলাম-ফজল দলসমূহ। অবশ্য, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) এ প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেনি। পিপিপি’র পক্ষ থেকে দলটির সংসদ সদস্য আবদুল সাত্তার বাচানি বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমাদের এ ধরনের কোন প্রস্তাব পাস করা উচিত হবে না। এমকিউএম দলের নেতা আবদুল ওয়াসিম বলেছেন, ১৯৭১ সালের মর্মান্তিক ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া ও কিভাবে ভবিষ্যতে এ ধরনের জাতীয় দুর্যোগ এড়ানো যায় সে ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া উচিত।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment