আমাদের সিলেট ডটকম:
এস এ পরিবহনের মালিককে অর্থ আদায়ের জন্য আটক করার অভিযোগে এক পুলিশ সুপারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন ১০ বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল সৈয়দপুরে রেলওয়ের পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। রায়ের পরপরই তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মামলার আরেকটি ধারায় তাকে আরো পাঁচ বছর কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারক। অর্থাৎ তাকে মোট ৩৫ বছর সাজা খাটতে হবে।
আসামি মোস্তফা কামালকে কারাদন্ডের পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
এই মামলার আরেক আসামি পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপ পরিদর্শক ওয়াহেদ মিয়াকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
এসএটিভি ও এসএ পরিবহনর মালিক, সালাহউদ্দিন আহমেদকে অবৈধভাবে আটক করে ৫০ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে ২০০৩ সালে এই মামলা দায়ের করা হয়। ওই ঘটনার সময় রেল পুলিশের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। সরকারি কর্মচারী হয়েও বিশ্বাসভঙ্গের দায়ে তাকে যাবজ্জীবন এবং দুর্নীতির দায়ে পাঁচ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০২ সালের ২২ ডিসেম্বর এসএটিভি ও এসএ পরিবহনের মালিক সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০ লাখ টাকা নিয়ে সিলেটে যাওয়ার পথে হবিগঞ্জের মাধপপুর থানার ওসি আতাউর রহমান ও এসআই ওয়াহেদ মিয়া তলাশির নামে তাকে আটক করে। পরিচয় জানার পর তাকে বলা হয়, সালাহউদ্দিনের সঙ্গে যেহেতু বড় অংকের টাকা আছে, সেহেতু নিরাপত্তার স্বার্থে তার উচিৎ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা।
এরপর হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা মোস্তফা কামালের নির্দেশে সালাহউদ্দিন আহমেদ ও তার সঙ্গের লোকজনকে থানা হাজতে আটক করা হয় বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে আরো বলা হয়, এস পি মোস্তফা কামাল ৫০ লাখ টাকা দেয়ার শর্তে তাকে মুক্তির প্রস্তাব দেন। তিনি এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার, মাদক ও নারী নির্যাতন আইনে তিনটি মামলা করে পুলিশ।
এসব মামলা থেকে জামিন পাওয়ার পর ২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ২০১০ সালের এপ্রিলে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান। মামলার বিচারকালে রাষ্ট্রপক্ষে মোট পাঁচজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।
রায়ে বলা হয়, আসামি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন চাওয়া হলেও বাদিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে হাই কোর্টের আদেশ নিয়ে তিনি পুলিশ সুপার মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ পান। হাই কোর্টে সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে করা সবগুলো মামলাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
No comments:
Post a Comment