নগরীর গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযান শুরু

Wednesday, December 18, 2013

আমাদের সিলেট ডটকম:

‘একটা সময় এই গাভীয়ার খাল দিয়ে নৌকা চলত। অনেকে আবার জাল দিয়ে মাছও ধরতেন। কিন্তু আজ এই গাভীয়ার খালের অস্তিত্বই হুমকীর মুখে পড়েছে।’-গতকাল বুধবার সকালে সিলেট নগরীর ১১ নং ওয়ার্ডে গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযান চলাকালে এলাকার ৬৫ বছর বয়সী আব্দুস ছালেক এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তবে দীর্ঘদিন পরে হলেও গাভীয়ার খাল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আব্দুস ছালেক এখন আশাবাদী হয়ে উঠছেন। শুধু আব্দুস ছালেক নন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো মানুষ এখন গাভীয়ার খাল উদ্ধারের আশায় বুক বাঁধছেন। এই গাভীয়ার খাল উদ্ধার এবং পানি প্রবাহ নিশ্চিত হলে তিন ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতার সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।

বুধবার সকাল ১০টায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নবাবরোড থেকে শুরু হয় গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযান। অভিযানের সূচনা করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসময় তার সাথে ছিলেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী। উদ্ধারকাজ চলাকালে কাউন্সিলররা বলেন, গাভীয়ার খালের মূল সমস্যা চিহ্নিত করে এরকম জোরেসোরে উদ্ধার অভিযান অতীতে কেউ শুরু করেনি। বর্তমান মেয়র যেভাবে সরেজমিন উপসি’ত থেকে গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন, এতে করে এবার গাভীয়ার খাল উদ্ধারকাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

নবাবরোডের কালভার্টের নিচ ও আশপাশের স’ানে স্বয়ংক্রিয় এক্সকেভেটর দিয়ে কাজ শুরু হওয়া মাত্র ওয়ার্ডের শত শত মানুষ উদ্ধার কাজ দেখতে সেখানে জড়ো হন। এসময় ওয়ার্ডবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর আগে খাল উদ্ধারের নামে কেবল ‘আইওয়াশ’ হয়েছে। এবার যাতে প্রকৃত অর্থে কাজ সম্পন্ন হয় এবং জনগন যাতে এর সুফল পায় এই ব্যাপারে বর্তমান মেয়রকে সচেতন থাকার আহবান জানান ওয়ার্ডবাসী।

অভিযানে কাজের দ্রুততার জন্য এক্সকাভেটর দিয়ে সহযোগিতা করছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট। উদ্ধারকাজ চলাকালে তিনি বললেন, ‘আমি এই এলাকার বাসিন্দা। এই গাভীয়ার খাল উদ্ধার না হওয়ার কারণে আমরা বছরের পর বছর থেকে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। এবার যেহেতু বর্তমান মেয়র আন-রিকভাবে গাভীয়ার খাল উদ্ধারে নেমেছেন সেজন্য আমি স্ব:প্রণোদিতভাবে এই কাজে সহযোগিতা করছি। আমি মনে করি প্রত্যেকেই স্ব স্ব অবস’ান থেকে সিটি কর্পোরেশনের কাজে সহযোগিতা করলে অচিরেই জলাবদ্ধতা নিরসনসহ অনেক বড় বড় সমস্যা সমাধান সম্ভব।’

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান খান জানান, ছড়া খনন, ছড়া ও খাল উদ্ধার প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগ পর্যন- এই কাজ চলবে।

গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযান চলাকালে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ছড়া ও খাল উদ্ধার করা ছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই। মেয়র বলেন, ছড়া ও খাল উদ্ধার অভিযান চলাকালে জনগন যেভাবে সাড়া দিচ্ছেন তা এককথায় অভূতপূর্ব। গাভীয়ার খাল উদ্ধার অভিযানের উদাহরণ দিয়ে মেয়র বলেন, এই কাজে অনেকে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করছেন, কেউ নিজের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে দিচ্ছেন, এমনকি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি সিটি কর্পোরেশনে দান করে দেওয়ারও নজির সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং জনগন যেহেতু আমার পাশে আছে সেহেতু তাদের এই সহযোগিতা নিয়ে গাভীয়ার খালসহ নগরীর সকল ছড়া ও খাল উদ্ধারের ব্যাপারে আমি দৃঢ় আশাবাদী।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License