আমাদের সিলেট ডটকম:
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে একটি প্রস্তাবনা গৃহিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার ঘনিষ্ট সিনেটর ডিক ডারবিন বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে তার প্রস্তাবনা পেশ করেন সিনেট ফরেন রিলেশন কমিটিতে।
গত বুধবার দুপুর আড়াইটায় এই প্রস্তাবনার উপর আলোচনা হয়। এতে ফরেন রিলেশন কমিটির সদস্যরা সর্ব সম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
প্রস্তাবে বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস উলেখ করে সিনেটর ডারবিন বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংশতায় ২০১৩ সালে শত শত বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। এর বাইরে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতা ও মানবাধিকার কর্মীদের।
প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অরাজকতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ওয়ার ক্রাইম ট্রাইবুন্যাল গঠন করা হলেও বিচারের আন্তর্জাতিক মানদন্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে কথিত ট্রাইবুন্যাল।
প্রস্তাবে বলা হয়, নির্বাচনের তিনমাস আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক পদ্ধতি বাতিল করেছে বর্তমান সরকার।
এর প্রতিবাদে ১৮ দলীয় জোট সারা দেশে রাস্তা ও যানবাহন অবরোধ কর্মসূচী দিয়েছে। এতে সহিংশতায় নিহত হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। ধর্মঘটের কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছেনা। এর ফলে বাধ্যতামুলক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে না তাদের। সাধারণ মানুষ ঘরের বাইরে যেতে পারছে না। যার ফলে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না তাদের। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও স্থিতিশীলতার এটা হুমকীর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর ফলে এই অঞ্চলের বাইরেও বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম জনগোষ্টির উদার ও গনতান্ত্রিক চেতনার বাংলাদেশ তার অতীত ঐতিহ্য ও ইমেজ হারাতে বসেছে।
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার একটি শান্তিপূর্ন সমাধানের জন্য জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অস্কার ফার্ন্ডান্দেজ তারাঙ্কো বাংলাদেশ সফরে গিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সংলাপের সূচনা করেছেন। যাতে সহিশসতার পরিবর্তে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হয়।
সিনেটর ডারবিন তার প্রস্তাবনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা নিন্দা করে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলকে সংলাপে বসার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। রাজনৈতিক দল সমূহকে সব ধরনের সংঘাত পরিহার করে সংলাপ ও শান্তিপূর্ন সভা সমাবেশ অনুষ্ঠানের সুযোগ প্রদানের দাবী জানান।
বাংলাদেশে বিচার বিভাগের পূর্ন স্বাধীনতা, মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানী বন্ধ এবং গ্রামীণ ব্যাংকের স্বাধীনতা পুনরুজ্জীবিত করারও দাবী জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিনেট ফরেন রিলেশন কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেন্ডেজ (নিউ জার্সি-ডেমোক্রেট)। কমিটির অন্য সদস্যরাও এতে অংশ নেন।
এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের বলেন, বিষয়টি এটি রুটিন বৈঠক। এনিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
No comments:
Post a Comment