আমাদের সিলেট ডটকম:
‘আমার ৩৬ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে এরকম দৃশ্য দেখব কল্পনাও করিনি। গাভীয়ার খালের উপর দিয়ে স্পিডবোট নিয়ে ঘুরে বেড়াব-এটা আজ বাস্তব, ভাবতেই ভালো লাগছে। এভাবে একের পর এক সিলেটের সকল ছড়া ও খাল উদ্ধার করা হবে-এই আশায় বুক বেঁধে আছেন সিলেটবাসী।’
শনিবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে স্পিডবোটে গাভীয়ার খাল ভ্রমন করে এমন প্রতিক্রিয়া জানালেন সিলেটের প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা।
বেলা ১টায় নগরীর নবাবরোডের কালভার্ট এর নিচের গাভীয়ার খালে সাজিয়ে রাখা ছিল ৪টি স্পিডবোট। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, স্থানীয় কাউন্সিলর,প্রকৌশলী,স্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে স্পিডবোটে উঠেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
স্পিডবোট নিয়ে নবাবরোডের গাভীয়ার খাল হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা স্পিডবোট নিয়ে ঘুরে দেখেন তারা। এসময় দুপাশের শত শত মানুষ সিটি মেয়রের ‘স্পিডবোট ভ্রমন’ দৃশ্য উপভোগ করেন।
এই দৃশ্য অবলোকন করে স্থানীয় বাসিন্দারা হাততালি দিয়ে মেয়রকে স্বাগত জানান। পরে আলাপকালে স্থানীয় বাসিন্দারা বললেন, ‘ডিসেম্বর মাসে এই অংশে যখন কাজ শুরু হয় তখন গাভীয়ার খাল ছিল ভরাট, সেই সাথে কয়েকটি জায়গা ভরাট করে, এমনকি বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মাত্র এক মাসের মধ্যে এসব পরিস্কার করাটা নি:সন্দেহে যুগান্তকারী কাজ।’
স্পিডবোট-এ বসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মেয়র আরিফুল হক এই অভিনব ভ্রমনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন,‘উদ্দেশ্য মহত থাকলে, আন্তরিকতার সাথে কাজ করলে এবং জনগন সহায়তা করলে সবই সম্ভব। গাভীয়ার খাল-এর এই অংশ উদ্ধার করার মাধ্যমে আমরা সেই সত্যটুকু তুলে ধরতে চেয়েছি। একসময় এই খাল দিয়ে বড় বড় ঘন্টি নৌকা চলাচল করত। গাভীয়ার খালের সেই পুরনো রূপ ফিরিয়ে আনা সম্ভব-তার বাস-ব চিত্র দেখানোর জন্যই এই স্পিডবোট ভ্রমন।’
এই গাভীয়ার খালকে দৃষ্টিনন্দন লেকে পরিণত করার কথা জানিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন ‘গাভীয়ার খালসহ পর্যায়ক্রমে সিলেটের প্রতিটি খাল ও ছড়াকে পুরনো রূপে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এসব উদ্ধার করা সম্ভব হলে একদিকে যেমন নগরীর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে নগরীর সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে যাবে। তবে এজন্য অর্থ বরাদ্দ করা এখন সময়ের দাবি। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ হলে দ্রুতগতিতে এসব কাজ বাস-বায়ন করা যাবে।’
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান খান বলেন, ‘গাভীয়ার খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে সিটি কর্তৃপক্ষ ৩ কিলোমিটার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পূর্বে কোন কোন জায়গায় ৪/৫ ফুট প্রশস্ত থাকলেও উদ্ধারের পর গড়ে ২০ ফুট এমনকি কোন কোন জায়গায় খালের প্রশস্ততা ৩০ ফুট হয়েছে।’ তিনি বলেন ‘এই গাভীয়ার খালের সাথে সুরমা নদীর সংযোগমুখটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু খাল উদ্ধার করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। সুরমা নদীর যে অংশে খালের পানি গিয়ে নামবে সেই অংশটিও খনন করে সংযোগ মুখটি খুলে দিতে হবে।’
এদিকে স্পিডবোট ভ্রমনের আগে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নবাবরোডের বালুচরে চলমান খাল খননকাজ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনশেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মেয়র জানান, এই জায়গায় (বালুচর) ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বিলপাড়-কুয়ারপাড়-শেখঘাট-লালাদিঘীরপাড় এলাকার সাথে গাভীয়ার খালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এই জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন হলেও জায়গার মালিক সিটি কর্তৃপক্ষকে জমি দেওয়ার ফলশ্রুতিতে এই জায়গা দিয়ে সংযোগ স্থাপনের কাজ চলছে।’
জায়গার মালিককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন ‘এই জায়গার মালিক জায়গা দিয়ে প্রমান করেছেন সিলেটের মানুষের হৃদয় অনেক বড়। সিলেটের উন্নয়নে তারা সবসময় উদার। যারা জায়গা দিচ্ছেন তাদেরকেও সিটি কর্পোরেশন মূল্যায়ন করবে।’
গাভীয়ার খালে সিলেট সিটি মেয়রের অভিনব ‘স্পিডবোট ভ্রমন’
Saturday, January 18, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment